ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ যত বাড়ছে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ওপর থেকে আগ্রহ হয়তো দর্শকদের ততই উঠে যাচ্ছে। তবে, নিশ্চয়ই এবারের আইপিএলটা বেশ উপভোগ করছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
এবারের আসরে যখন নিলাম এক কোটি রুপিতে তাকে দলে ভেড়ালো রাজস্থান, তখনো কারোই মনে হয়নি তিনি একাদশে সুযোগ পাবেন। তবে কথায় আছে, ভাগ্যে থাকলে ফেরায় কে! ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চারের ইনজুরিতে কপাল খুলে গেলো তার। আর প্রথম থেকেই সুযোগ পেলেন সব কয়টি ম্যাচে। সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত, নিজের স্লোয়ার আর কাটার ভেলকিতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের নাঁচিয়েছেন তিনি।
নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কাটার মাস্টার খ্যাত মুস্তাফিজুর রহমানের কথাই বলছি। কেউ কি ভেবেছিলেন যে মুস্তাফিজ এবার আইপিএলে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে? অনেকেরই উত্তর হবে যে ‘না’।
আজ সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে ম্যাচে খেলতে নেমে দূর্দান্ত বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ। তার দূর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সে সহজ জয় পেয়েছে তার দল রাজস্থান রয়্যালস। চার ওভারের স্পেলে ২০ রানের বিনিময়ে শিকার করেছেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। সেই সাথে দলের জয়েও বড় অবদান রাখেন তিনি।
আজ রাজস্থানের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজ। প্রথম ওভার থেকে তিনি ৬ রান দিয়ে কোনো উইকেট নিতে পারেননি। এরপর দলীয় সপ্তম ওভারে নিজের স্পেলের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসেন তিনি। প্রথম বলেই ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ানো মানিশ পান্ডেকে বোল্ড করে নিজের প্রথম শিকার বানান তিনি। সেই সাথে হায়দ্রাবাদ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মুস্তাফিজ।
এরপর দলীয় ১৫ এবং ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন তিনি। ওই ওভারে করা তৃতীয় বলেই তার স্লোয়ার ভেলকিতে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান মোহাম্মদ নবী। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে সাবেক আফগান অধিনায়ক নবীর উইকেট তুলে নেন ফিজ। প্রথম তিন ওভারে ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন তিনি।
এরপর দলীয় ১৮ ও নিজের ব্যক্তিগত শেষ ওভার করতে এসে শিকার করেন রশিদ খানের উইকেট। শেষ ওভারে ৭ রানের বিনিময়ে শিকার করেন এক উইকেট। বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও সেগুলোতে সাফল্য পাননি তিনি। তবে দিনশেষে নামের পাশে কুড়িয়েছেন তিন তিনটি উইকেট!
মোট চার ওভার স্পেলে ২০ রানের বিনিময়ে মুস্তাফিজ শিকার করেন ৩ উইকেট। তার দল হায়দ্রাবাদ জয় পায় ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে। এবারের আসরে আজকের করা ২০ রানে ৩ উইকেট এখন পর্যন্ত তার সেরা বোলিং ফিগার। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ২৭ ওভার বল করে ২২৪ রানের বিনিময়ে শিকার করেছেন ৮ উইকেট। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় তিনি অবস্থান করছেন ১১ নম্বরে।
যেখানে তিনি কোনো ম্যাচে সুযোগ পাবেন কিনা সেটি নিয়েই ছিলো প্রশ্ন! সেখানে রাজস্থানের বোলিং বিভাগের অন্যতম ভরসার নাম এখন মুস্তাফিজ। তার স্লোয়ার আর কাটার ভেলকিতে ইতোমধ্যেই মুগ্ধ করেছে সবাইকে। প্রতি ম্যাচেই চেষ্টা করছেন নিজের ঝুলিতে থাকা কাটার জাদু দিয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে।