মাহমুদুল হাসান জয়কে আর যাই হোক – বোলার বা স্পিনার বলার উপায় নেই। তিনি রান করবেন, বড় ইনিংস খেলবেন – এটাই প্রত্যাশা। বল হাতে মাঝেমধ্যে হাত ঘোরান বটে, তবে – সেটা কোনো হাতি-ঘোড়ার মারার মত কিছু নয়।
তবে, এবার জয়ের বোলিং এবার প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে আকাশ ছুঁয়ে ফেলল। ব্যাট হাতে জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। তাঁর এমন অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে পাকিস্তান শাহীনসকে পাঁচ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ এ দল। সেই সাথে কৌতূহল জেগেছে – টাইগার শিবিরে কি নতুন অলরাউন্ডার যোগ হয়েছেন?
এই ডানহাতি নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মত প্রতিকূল কন্ডিশনে নিজের ধৈর্য আর সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন আগেই। পুরোদস্তুর টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে খ্যাতি পেতে তাই অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁকে। তবে এবার নিজেকে যেন নতুন রূপে চেনাতে চাইলেন তিনি; বাংলাদেশ এ দলের হয়ে রীতিমতো অলরাউন্ডার রূপে আবির্ভাব ঘটলো তাঁর।
বিস্ময়কর হলেও বিশ্বাস না করে উপায় নেই; অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তান শাহীনসের বিপক্ষে চার দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ এ দল। আর সেখানেই বাজিমাত করেছেন এই তরুণ। দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগার বাহিনীর ছুঁড়ে দেয়া ২৯৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল পাক প্রতিনিধিরা।
কিন্তু তাঁর বোলিং ঘূর্ণির সামনে টিকতে পারেনি কেউই, স্রেফ ২১ রানের বিনিময়ে পাঁচ পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। এর আগে অবশ্য ব্যাট হাতেও সফল ছিলেন, প্রথম ইনিংসের দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেছিলেন এই ওপেনার। পরের ইনিংসেও গল্পটা একই, ৬৫ রান করে বনে যান সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
জয় স্বীকৃত ক্রিকেটে দরকার না পড়লে কখনও তেমন একটা বোলিং করেন না। যদিও, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে পাঁচটি ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আটটি উইকেট আছে তাঁর। এই আটটা প্রথম শ্রেণির উইকেটের মধ্যে পাঁচটাই এবার পেলেন অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে।
বলতেই হয়, পাকিস্তান শাহীনস হেরে গিয়েছে একজন জয়ের কাছে। জয় একাই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের চিনিয়েছেন জয়ের পথ। তবে আইচ মোল্লার কথা না বললেই হয়, এই অর্ধপরিচিত ব্যাটারও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। দুই ইনিংসেই হাঁকিয়েছিলেন হাফ- সেঞ্চুরি। এছাড়া পেসার রেজাউর রহমান রাজা পুরো ম্যাচ মিলিয়ে নিয়েছেন ছয় উইকেট।
যাদের ওপর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, তাঁদের এমন পারফরম্যান্স নি:সন্দেহে আশান্বিত করবে সমর্থকদের। সাম্প্রতিক অফ ফর্ম কাটিয়ে জয় রানে ফিরেছেন, উদীয়মান তারকারা নিজেদের প্রমাণ করছেন – এর ধারাবাহিকতা থাকলে পথ হারাবে না বাংলাদেশ।