মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, বাংলাদেশের অবিসংবাদিত সেরা!

সমালোচনা হয়, সমর্থনও মেলে, রিয়াদের তাতে থোড়াই কেয়ার। নিজের কাজ করে যান একান্ত মনে। তবে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেন রিয়াদ নিজেকে ভাঙছেন, নতুন করে গড়বেন বলে। প্রথম ম্যাচে ১০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে সমালোচনার স্বীকার হয়েছেন। দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে বাচিয়েছেন, আক্ষেপ জাগিয়েছেন। তৃতীয় ম্যাচে যেন কিছুই বাকি রাখলেন না। ৬৩ বলে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে দলকে বাচিয়েছেন। পৌছে দিয়েছেন ৩২১ রানের সংগ্রহে, স্ট্রাইক রেটের হাহাকারও মিটিয়েছেন।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সবথেকে বড় সমালোচকও সম্ভবত এটা স্বীকার করবেন, রিয়াদ বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ফিনিশার। দ্রুত দুই-তিনটা উইকেট চলে গেলে, রিয়াদের থেকে বড় ভরসা এই দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নেই। ৩৯ বছর বয়সী রিয়াদ এখনও দেশের সবথেকে ‘ক্লিনেস্ট’ হিটার। এখনো প্রতিনিয়ত তিনি ছক্কা হাকান, ছক্কার রেকর্ড গড়েন।

শর্ট বল কিংবা ফুলার লেন্থ, দুই ধরনের ডেলিভারিই গ্যালারিতে আছড়ে ফেলতে পারেন অবলীলায়। তবুও রিয়াদকে নিয়ে সমালোচনা হয়। হওয়াটা অনেক বেশি অন্যায়েরও নয়। বয়সের সাথে খেলোয়াড়ের রিফ্লেক্স কমে, রিয়াদেরও কমেছে। ‘টপ অব অফ স্ট্যাম্প’ চ্যানেলে কিংবা ‘শর্ট অব গুড লেন্থ’ ডেলিভারিতে রিয়াদ আঁটো সাটো হয়ে পড়েন। আগের মত ব্যাকফুট পাঞ্চ বেড়িয়ে যায় না কাভার অঞ্চল ছিড়ে, বুলেটের গতিতে।

আধুনিক ক্রিকেটে ফিনিশারদের স্ট্রাইক রেট মুগ্ধ করে দর্শকদের। কিন্তু বাস্তবতা ভুলে যাই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে টপ অর্ডার, মিডল অর্ডারে ধ্বস প্রতিদিনের সকাল-সন্ধ্যার মতই অনিবার্য, সেখানে একজন ফিনিশারকে প্রথমে ব্যাটে লাগাম দিতে হয়। উইকেটে বাধ দিতে হয়, বোলারদের লড়াই করার জন্য নূন্যতম সংগ্রহ স্কোরবোর্ডে জমা করা দিতে হয়।

 

এখানে শুরু থেকে আক্রমণ বিলাসিতা। একটা রিয়াদের উইকেটের পতন, বাধভাঙ্গা জোয়ারের মত, ভাসিয়ে নিয়ে যাবে বাকি সকল খেলোয়াড়দেরও। কালে ভদ্রে দুই-একদিন সেট পজিশন থেকে শেষে এসে আক্রমণের প্রস্তুতি তাই নেওয়া হয়ে ওঠে না। রিয়াদের মিলার কিংবা হার্দিক হওয়া হয়ে ওঠে না।

সমালোচনা হয়, সমর্থনও মেলে, রিয়াদের তাতে থোড়াই কেয়ার। নিজের কাজ করে যান একান্ত মনে। তবে এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেন রিয়াদ নিজেকে ভাঙছেন, নতুন করে গড়বেন বলে। প্রথম ম্যাচে ১০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে সমালোচনার স্বীকার হয়েছেন। দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে বাচিয়েছেন, আক্ষেপ জাগিয়েছেন। তৃতীয় ম্যাচে যেন কিছুই বাকি রাখলেন না। ৬৩ বলে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে দলকে বাচিয়েছেন। পৌছে দিয়েছেন ৩২১ রানের সংগ্রহে, স্ট্রাইক রেটের হাহাকারও মিটিয়েছেন।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হার্দিক পান্ডিয়া বা ডেভিড মিলার নন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় রিয়াদ তাদের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রতিনিয়ত ইনিংস গড়তে হয়, কালেভদ্রে মারার সুযোগ আসে। রিয়াদকে এই ‘ডার্টি’ কাজের দুইভাগই করতে হয়।

Share via
Copy link