স্ট্যামিনার দিক থেকে সম্ভবত তাঁর ধারের কাছেও কেউ নেই। ফাস্ট বোলার হয়েও টানা নয় ওভার বোলিং করে যাওয়া মুখের কথা নয়। এমন নজীর তো ছেলেদের ক্রিকেটেও বিরল।
তবে, নামটা যখন মারুফা আক্তার তখন, সেখানে আর বিস্ময় প্রকাশ করার উপায় নেই। বাবার সাথে ক্ষেতে হালচাষ করে নিজের ফিটনেস বানিয়েছেন তিনি, এই নয় ওভারে আর কিই বা আসে যায়!
বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক অসামান্য আবির্ভাব এই মারুফা। টানা নয় ওভারও কি দারুণ বোলিং করলেন তিনি মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। নয় ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিলেন তিনটি উইকেট। আয়ারল্যান্ডের মেয়েদের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের ক্ষেত্রটা ওখানেই তৈরি হয়ে গেল।
মারুফার জন্য এই দিন দেখার ক্ষেত্রটা তৈরি করা অবশ্য এত সহজ ছিল না। আকাশ জয়ের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু, বাবার সাথে মাঠে হালচাষ করে যে মেয়েটা – তাঁর জন্য ক্রিকেটের স্বপ্ন দেখা তো খুবই কঠিন।
মূলত বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণাতেই ক্রিকেটের প্রেমে পড়া মারুফার। আদর্শ মানেন ভারতীয় অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়াকে। বড় পেসার চাইতেন। কিন্তু, এমনও দিন আছেন, যে সময় সামান্য ক’টা টাকার অভাবে খেলতে যেতে পারতেন না মারুফা।
তবে, বিকেএসপিতে থাকাকালীন সময়েই পেসার হিসেবে ধীরে ধীরে পরিণত হয়ে ওঠেন। এই সময় তিনি নিজেই সহায় হয়ে দাঁড়ান বাবার পাশে।
করোনা মহামারির সময় নিজের উপার্জনের চল্লিশ হাজার টাকা বাবার হাতে তুলে দেন মারুফা। আর এখন তিনি নারী পেস আক্রমণের প্রধান সেনানী এখন তিনি। আজ এই মারফাই বাংলাদেশকে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখান। তাঁর জন্যই তো ১৫৪ রানের বিরাট জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া সম্ভব হয়!