আমি গেল এক বছর ধরেই ক্লাবকে বলে যাচ্ছি, আমি ক্লাব ছাড়বো। প্রতিবার সভাপতি বলেছে মৌসুম শেষ হলে, আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারবো থাকা না থাকার ব্যাপারে। এখন তারা এসে জানাচ্ছে আমি জুন মাসের ১০ তারিখের আগে কেন না থাকার কথা বলিনি!
অথচ, তখন আমরা বিভৎস করোনার মাঝখানে লা লিগায় লড়ছিলাম। এই মহামারী পুরো মৌসুমের সময়ই তো বদলে দিয়েছে। এখনো আমাকে থাকতে হচ্ছে, কারণ প্রেসিডেন্ট বলেছে আমাকে যেতে হলে ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ফি দিয়েই যেতে হবে, যেটা আসলে অসম্ভব।
আরেকটা উপায় হচ্ছে আইনী লড়াই শুরু করার। কিন্তু কখনোই আমি বার্সার বিরুদ্ধে আদালতে যাবো না, কারণ এই ক্লাবকে আমি ভালোবাসি এই ক্লাবই আমাকে সবকিছু দিয়েছে। আমি এখানেই আমার জীবন গড়েছি।
বার্সা আমাকে সব দিয়েছে, এবং আমিও তাকে সর্বোচ্চটাই দিয়েছি। আমার কল্পনাতেও বার্সার বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা আসে নি।
আমি বার্সেলোনাক ভালোবাসি এবং আমি এখানকার চেয়ে সেরা জায়গা কোথাও খুঁজে পাবো না। তবুও, আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমি নতুন লক্ষ্য নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চাচ্ছিলাম। আমি ভবিষ্যতে এখানেই ফিরে আসতাম, কারণ বার্সেলোনাতেই আমার সবকিছু।
আমি সন্তানেরা, আমার পরিবার সবাই এখানেই বেড়ে উঠেছে, তারা এখানকারই। আমার চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে কোনো ভুল ছিলো না। আমার এটা প্রয়োজন ছিলো, ক্লাবেরও এটা প্রয়োজন ছিলো, এটা সবার জন্যই ভালো হতো।
আমি বিশ্বাস করি, ক্লাবের তরুণ খেলোয়াড় প্রয়োজন, নতুন খেলোয়াড় প্রয়োজন, আমি জানতাম বার্সায় আমার সময় ফুরিয়ে এসেছে। আমার খারাপ লাগছিলো কারণ আমি সবসময়ই এখানে ক্যারিয়ার শেষ করতে চেয়েছি।
এটা খুবই কঠিন বছর ছিলো। ট্রেনিং, ম্যাচ, ড্রেসিংরুম সবজায়গাতেই কঠিন ছিলো, এবং সময় এসেছিলো নতুন লক্ষ্যের পেছনে ছোটার। এমন না যে বায়ার্ন ম্যাচের পর এমন হয়েছে, আমি দীর্ঘদিন ধরেই ক্লাবকে বলে এসেছি। এবং প্রেসিডেন্ট সবসময় বলেছে মৌসুম শেষে আমি নিজেই থাকা না থাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। কিন্ত শেষ পর্যন্ত সে তার কথা রাখেনি।
আর সত্যি বলতে, বার্সাতে অনেক বছর ধরেই কোনো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেই। তাঁরা এটা-ওটা করে গর্তগুলো ঢাকছে। এটা পছন্দ হয়নি আমার। আমি সব সময়ই ক্লাব ও নিজের পরিবারের ভালর কথা চিন্তা করি।
_______________
গোল.কমকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি। এর মধ্য দিয়ে মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার গুঞ্জনের ইতি ঘটলো। তবে, এটাও নিশ্চিত হল যে, বড় কোনো পরিবর্তন না আসলে আসছে মৌসুমটাই কাতালান ক্লাবটির হয়ে তাঁর শেষ মৌসুম।