পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চির মানুষটা দু’হাত উঁচু করে হাসবেন তৃপ্তির হাসি। এমন একটা দৃশ্য দেখার জন্যে সবাই যে ছিলেন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়। অবশেষে লিওনেল মেসি সেই অপেক্ষার প্রহর ডিঙিয়ে পেলেন গোলের দেখা। তাতে করে আরও একটি শিরোপার দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা।
প্রায় ২৮ বছর চলেছে তাদের শিরোপা খরা। দলটার মধ্যে তাই শিরোপার ক্ষুধা ক্রমশ হয়েছে তীব্র। সামনে যা কিছু জেতা সম্ভব সব কিছুই নিজেদের করে নিতে চাইছে আলবিসেলেস্তারা। টানা দ্বিতীয়বারের মত কোপা আমেরিকা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে লিওনেল মেসির দল। সেমিফাইনালে তারা কানাডাকে হারিয়েছে ২-০ গোল ব্যবধানে।
ম্যাচের শুরুর দিকে অবশ্য কানাডা খানিক অস্বস্তির সৃষ্টি করেছিল। গোছানো আক্রমণ নিয়ে হাজির হয়েছিল আর্জেন্টিনার রক্ষণ দূর্গে। বেশকিছু শট চালিয়ে অবশ্য লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয় আলফন্সো ডেভিসরা। ঠিক তখনই স্রোতের বিপরীতে পালটা আক্রমণ করতে থাকে আর্জেন্টিনা।
রদ্রিগো ডি পলের একটা ডিফেন্স চেড়া পাস। অসাধারণ দক্ষতায় নিজ আয়ত্ত্বে নিয়ে নেন হুলিয়ান আলভারেজ। ম্যাচের তখন ২২ মিনিট চলমান। ডান পায়ের জোরাল শট চালালেন আলভারেজ। গোল না হয়ে আর উপায় কি! ১-০ গোল ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
তখন থেকেই নিজেদের জয়ের বিষয়ে বেজায় আত্মবিশ্বাসী হতে দেখা গেছে আর্জেন্টিনাকে। কোন রকম হাই প্রেস নয়, বরং প্রতিপক্ষের ভুল করবার অপেক্ষা করেছে ম্যাক অ্যালিস্টাররা। আর এদিন কানাডার ভুলের সংখ্যা অবশ্য গুণে শেষ করবার নয়। গুটিগুটি পায়ে এটাকিং থার্ড অবধি বল নিয়ে এসেছে কানাডা। আর্জেন্টিনার রক্ষণ দূর্গের ঠিক সামনে বারংবার খেই হারিয়েছে তারা।
এক ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর কাছে থমকে গেছে কানাডার সকল আক্রমণ। তাইতো এক গোলের স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। ১৫ মিনিটের বিরতির মাঝে গুরু লিওনেল স্কালোনি সম্ভবত বলেছিলেন, ম্যাচের ভাগ্য পুরোপুরি নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে। গুরুর সে কথা ফেলেলনি মেসি।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬ মিনিটের মাথায় গোলের দেখা পান লিওনেল মেসি। এঞ্জো ফার্নান্দেসের একটি শট গোল অভিমুখেই ছিল। সেই শটে আলতো ছোঁয়া লাগিয়ে গোলটি নিজের করে নেন মেসি। তাতে করে ব্যবধান গিয়ে দাঁড়ায় ২-০। এরপর আর্জেন্টিনা গোলের পার্থক্য বাড়ানোর প্রয়াশ চালিয়েছে বটে। অন্যদিকে কানাডা গোলের সন্ধান করেছে।
আর্জেন্টিনার ডিফেন্স লাইনের সামনে কানাডার সকল অনুসন্ধানের সমাপ্তি ঘটেছে। তাতে করে কোপা আমেরিকার এবারের আসরে ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নদের।