মেসির ফলোয়ার ও দক্ষিণ আমেরিকার জনসংখ্যা

লিওনেল মেসি নাকি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কে বেশি ভাল? মাঠের খেলায় এই চিরকালীন এই বিতর্কের অবসান ঘটানো না গেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবিসংবাদিত রাজা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যার ধারে কাছে নেই অন্য কোনো ফুটবলার। এমনকি বিনোদন অঙ্গনের বহু তারকার চাইতে বেশি অনুসারী সিআর সেভেনের। 

কাতার বিশ্বকাপে সম্ভবত এবারই নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন পর্তুগিজ এই তারকা। বিশ্বকাপ শুরুর ঘন্টা বাজার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোনালদোর অনুসারী রয়েছেন ৭৪৭.১ মিলিয়ন। স্বয়ং লিওনেল মেসি এবং ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে অনুসরণ করেন তাঁকে। রোনালদোর অনুসারীর সংখ্যা ইংল্যান্ড জাতীয় দলের(১৬৪ মিলিয়ন) অনুসারীর সংখ্যার চারগুণ। এছাড়া যে চারটি দেশে তিনি খেলেছেন – ইতালি, স্পেন, ইংল্যান্ড এবং পর্তুগালের মোট জনসংখ্যাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর  অনুসারীর সংখ্যার চাইতে কম। 

রোনালদোর ভক্তের সংখ্যার বিশালত্ব বোঝাতে আরেকটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৯০ হাজার। যদি কেবলমাত্র রোনালদোর ভক্ত-অনুসারীরাও তাঁর ম্যাচে স্টেডিয়ামে বসে দেখতে চায়, তাহলেও তাঁকে খেলতে হবে আট হাজার ম্যাচ।

স্টেডিয়ামটা বদলে কাতারের আল লুসাইল স্টেডিয়াম হলে সেটা দাঁড়াবে নয় হাজার ম্যাচ আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হোমগ্রাউন্ড ওল্ড ট্রাফোর্ড হলে ম্যাচসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে দশ হাজারে। আর যদি রোনালদোর ছোটবেলার ক্লাব স্পোর্টিং লিসবনের স্টেডিয়াম জোসে আলভালাদেকে বিবেচনা করা হয়, তবে তাঁকে খেলতে হবে প্রায় ১৪ হাজার ম্যাচ। এছাড়া সমগ্র ইউরোপের জনসংখ্যার চাইতেও বেশি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসরণ করেন এই তারকাকে। 

মাঠের বাইরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এই জনপ্রিয়তা সাহায্য করেছে তাঁর দল পর্তুগালকেও। কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাকে ছাপিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে জনপ্রিয় দল পর্তুগাল। ব্রাজিলের ৬৭৮ মিলিয়ন এবং আর্জেন্টিনার ৬১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারের বিপরীতে পর্তুগালের ফলোয়ার সংখ্যা ৮২৬ মিলিয়ন। 

তবে খানিকটা দেরিতে ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট খোলা মেসিও দ্রুতই জনপ্রিয়তা অর্জন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। যদিও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো থেকে পিছিয়ে আছেন বেশ বড় ব্যবধানেই। বাকিদের তুলনায় খানিকটা কম সক্রিয় হলেও বিশ্বব্যাপি ভক্তরা ভালোবেসেই তাঁকে অনুসরণ করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।

ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম মিলিয়ে তাঁর ভক্ত – অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ৪৭৬ মিলিয়ন যা কিনা গোটা লাতিন আমেরিকার জনসংখ্যার চাইতে বেশি। আর নিজের দেশ আর্জেন্টিনার জনসংখ্যার প্রায় দশগুণ তাঁর অনুগামীর সংখ্যা। তবে যদি মেসি যেসব দেশের ক্লাবে খেলেছেন সেই তিন দেশ যথাক্রমে আর্জেন্টিনা, স্পেন এবং ফ্রান্সকে বিবেচনায় আনা হয়, তাহলে তাঁদের মোট জনসংখ্যা দাঁড়ায় ১৬০ মিলিয়ন। যা কিনা মেসির ফলোয়ারের চাইতে ৩০০ মিলিয়ন কম।

মেসির ক্লাব সতীর্থ নেইমারও দারুন সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে, তাঁর ভক্তের সংখ্যা প্রায় ৩৩৭.৫ মিলিয়ন। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই তিন তারকার মোট ফলোয়ারের সংখ্যা এক বিলিয়নেরও বেশি।

এছাড়া এবারের বিশ্বকাপের তারকাদের মাঝে সবচেয়ে বেশি ফলোয়ার রয়েছে করিম বেনজেমা, গ্যারেথ বেল, কিলিয়ান এমবাপ্পে, লুইস সুয়ারেজ, পাওলো ডিবালা, আতোয়ানে গ্রিজম্যান, রবার্ট লেওয়ানডস্কির দখলে। এই দশ ফুটবলারের সর্বমোট ফলোয়ার সংখ্যা ২.১ বিলিয়ন। যা কিনা ছাপিয়ে গিয়েছে এবারের বিশ্বকাপের বাকি সব ফুটবলারের সম্মিলিত ফলোয়ারের (১.৭ বিলিয়ন) সংখ্যাকেও।  

– মার্কা অবলম্বনে

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link