কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে গত ১৮ ডিসেম্বরের রাতটি ছিল প্রজন্মের সেরা ফুটবল প্রতিভার ক্যারিয়ারের পূর্ণতা দেবার মঞ্চ। ব্যক্তিগত অর্জনে সবাইকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। কিন্তু দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো যে বাকি ছিল।
সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদার ট্রফির ছোঁয়া পাবেন না সেটা বোধহয় বিধাতাও চাননি। তবে এমন স্মরণীয় মুহুর্তের পর মেসির অভিব্যক্তি কি ছিল, ঠিক সেই মুহুর্তে কার কথা ভাবছিলেন মেসি সে নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই ভক্তদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে এক ভক্ত জানিয়েছেন বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত হবার ঠিক পূর্ব মুহুর্তে কি বলছিলেন মেসি।
বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফাইনাল মঞ্চায়িত হয়েছিল সেই রাতে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ সমতায় শেষ করে ফ্রান্স আর আর্জেন্টিনা এরপর অতিরিক্ত সময়ের খেলাও সমতায় শেষ হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
সেই টাইব্রেকারে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ তারকা গঞ্জালো মন্টিয়েলের শটেই নিশ্চিত হয় ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। টিকটকে সেই ভক্ত জানান, মন্টিয়েল শট নেবার আগে মেসির ঠোঁট দেখে বোঝা যাচ্ছিল মেসি বলছেন, ‘এটি আজকেই হতে পারে, আবু।’
আবু অর্থ আর্জেন্টাইন ভাষায় দাদি বা নানি। আর এখানে মেসি স্মরণ করেছিলেন নিজের নানির কথা। শৈশব থেকেই নানির প্রিয় ছিলেন মেসি। মেসির বয়স যখন পাঁচ তখনই মেসির ‘আবু’ সেলিয়া বিশ্বাস করতেন ফুটবলের প্রতিভা দিয়ে দারুণ কিছু করবেন মেসি। ছোট্ট মেসি যে দেশকে একদিন গর্বিত করবেন তা হয়তো আগেই বুঝতে পেরেছিলেন সেলিয়া।
এক সাক্ষাৎকারে মেসিও জানিয়েছিলেন তাঁর নানির কথা, ‘আমার আবু সবাইকে বলত তাকে দলে নাও কিন্তু তারা প্রতিবারই বলতো: না, সে অনেক ছোট। তিনি আবার ফিরে এসে আবার বলতেন যে তাকে দলে নাও, সে একদিন এই খেলাকে বাঁচাবে।’
মেসির প্রতিভা এত আগে বুঝতে পারলেও মেসির সাফল্য দেখে যেতে পারেননি সেলিয়া। মেসির বয়স যখন মাত্র ১০ তখনই দুনিয়া ছেড়ে চলে যান সেলিয়া। সেই ছোট্ট মেসি সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হয়ে পুরো পৃথিবী রাজত্ব করছেন বা দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে গর্বিত করছেন তা বোধহয় দূর থেকে দেখে খুশি হচ্ছেন সেলিয়াও।
বার্সেলোনার হয়ে ২০০৪ সালে অভিষেকের পর থেকে প্রতিটা গোলই তাঁর নানিকে উৎসর্গ করেন মেসি। দুই হাত আকাশের দিকে তুলে মেসির সেই সেলিব্রেশন আইকনিক হয়ে গেছে অনেক আগেই। নিজের ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তটিতেও নানিকে স্মরণ করে তাঁকেই নিশ্চয়ই শিরোপা উৎসর্গ করেছেন এই ক্ষুদে জাদুকর।