চেনা মঈনের অচেনা রূপ

মঈন আলী বাংলাদেশের মানুষের চেনা লোক। বলা ভালো, তিনি বাংলাদেশের ঘরের লোক। সিলেটের এক নারীকে বিয়ে করে সংসার করছেন এই ক্রিকেটার। ফলে সম্পর্কে বাংলাদেশের জামাই হন তিনি। এছাড়া ক্রিকেটার মঈন আলীও আমাদের চেনা। একবারে ক্রিকেটীয় এক প্যাকেজ। তবে ব্যাটসম্যান মঈন আলীকে আমরা যেমন জানতাম তাঁর সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ দেখা গেল আজ। মিরপুরে তিনি হয়ে উঠলেন একব ঝড়।

মঈন আলী তাঁর ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং দিয়ে ইংল্যান্ড ক্রিকেটে এক ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন। লম্বা সময় ধরে দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। এতদিন মঈন আলীকে আমরা মূলত অ্যাংকর হিসেবেই দেখেছি। দারুণ ভাবে ইনিংস বিল্ড আপ করতে পারেন। যেকোন ব্যাটিং লাইন আপের স্তম্ভ হতে পারেন তিনি।

তবে কুমিল্লার আজ ইনিংস বিল্ডারের প্রয়োজন ছিল না। লিটনের দারুণ শুরুতে পাওয়ার প্লেতেই একটা ভিত্তি পেয়ে গিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মঈন আলী পাঁচ নম্বরে যখন নামেন তখন প্রয়োজন ছিল যতটুকু সম্ভব কুমিল্লার স্কোরটা বড় করা। সেজন্য মূলত ফাফ ডু প্লেসিসের দিকেই তাকিয়ে ছিল কুমিল্লার ভক্তরা।

ফাফ শুরুও করেছিলেন। তবে ৩৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংস দলের চাহিদা মেটাতে পারেনি। দায়িত্বটা তখন নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন মঈন আলী। নিজেকের চেনা রূপ থেকে বেরিয়ে এসে খুলনার বোলারদের ত্রাস হয়ে উঠলেন। মঈন আলীর হাতে যে কত শট আছে সেটা নিয়ে কারো মনেই প্রশ্ন ছিল না। তবে এই ব্যাটসম্যানযে এভাবে তেঁতে উঠবেন তা হয়তো খুলনার বোলাররা কল্পনাও করতে পারেননি।

মিরপুরে মঈন আলী এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচটা খেলেছিলেন চট্টগ্রামের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে মাঠে নামা হয়নি। পরের ম্যাচেও বরিশালের বিপক্ষে ৬ রান করে ফিরলেন। তবে বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে খানিকটা পুষিয়ে দিয়েছিলেন। তবে এরপরের ম্যাচে সিলেটেই দেখা মিললো মঈন আলীর চেনা রূপের।

সিলেটের বিপক্ষে ৩৫ বলে ৪৬ রান করে দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে এবার মিরপুরে ফিরেই ঝড় উঠালেন তিনি। খুলনার বোলারদের দিশেহারা করে ফেলেছিলেন। মাত্র ৩৫ বলে খেলেছেন ৭৫ রানের বিধ্বংসী এই ইনিংস। ব্যাটিং করেছেন ২১৪.২৮ স্ট্রাইকরেটে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে খুলনার বোলারদের যেন সীমানার ওপাড়ে আঁচড়ে ফেলতেই আজ মাঠে নেমেছিলেন তিনি। পুরো ইনিংসটায় চার মেরেছেন মাত্র একটি। তবে ছয় মেরেছেন মোট ৯ বার। তাঁর এই ঝড়ে মিরপুরের উইকেটেও ১৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link