নতুন ঠিকানার খোঁজে

বছর ঘুরে নতুন উত্তেজনা নিয়ে হাজির হয় এই টুর্নামেন্ট। এবার হাজির মেগা অকশন নিয়ে। প্রায় সবগুলো দলকেই ছেড়ে দিতে হয়েছে তাঁদের অধিকাংশ খেলোয়াড়। পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সর্বোচ্চ চারজন খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে পেরেছে। বাকি সব খেলোয়াড়দের নিতে হবে নিলাম থেকেই। তবে এই নিয়মের মাঝে বেশ কিছু ভারতীয় তারকা খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিতে হয়েছে তাঁদের আগের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের।

বিশ্বের আনাচে-কানাচে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের একটা ধুম পড়ে গেছে বিগত বছর গুলোতে। নিত্যদিন আবির্ভূত হচ্ছে নতুন নতুন ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। তবে চলমান থাকা সবগুলো ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মাঝে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) সবচেয়ে পুরোনো একটি টুর্নামেন্ট। সেই ২০০৮ সাল থেকে নিয়মিত এক টুর্নামেন্ট বিশ্বক্রিকেট পঞ্জিকায় নিজেদের এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করে নিয়েছে।

বছর ঘুরে নতুন উত্তেজনা নিয়ে হাজির হয় এই টুর্নামেন্ট। এবার হাজির মেগা অকশন নিয়ে। প্রায় সবগুলো দলকেই ছেড়ে দিতে হয়েছে তাঁদের অধিকাংশ খেলোয়াড়। পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সর্বোচ্চ চারজন খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে পেরেছে। বাকি সব খেলোয়াড়দের নিতে হবে নিলাম থেকেই। তবে এই নিয়মের মাঝে বেশ কিছু ভারতীয় তারকা খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিতে হয়েছে তাঁদের আগের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। সেই সব খেলোয়াড়দের নিয়ে আজকের আয়োজন।

  • হার্দিক পান্ডিয়া

২০১৫ সাল থেকে হার্দিক পান্ডিয়া ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ঘরের ছেলে। নানা কারণে তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিটি। সেই সুযোগটা লুফে নিয়েছে নবাগত আহমেদাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজি। তাঁকে শুধু যে দল নিয়েছেন ফ্রাঞ্চাইজিটি তা নয়, তাঁকে রীতিমত অধিনায়ক ঘোষণা করে দিয়েছে।

দেবেই  বা না কেন? আইপিএলে হার্দিক পান্ডিয়ার রেকর্ড দারুণ। অভিজ্ঞতাও রয়েছে ব্যাপক। ৯২টা ম্যাচে তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিলো ১৫৩ এর মতো। বল হাতে তাঁর নামের পাশেও রয়েছে ৪২টি উইকেট। তবে শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা ছাড়াও তিনি তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিং দিয়ে বহুবার তাঁর দলকে ম্যাচ জিতিয়েছেন। এই আইপিএল থেকেই পরবর্তী সময়ে জাতীয় দলের সুযোগ পেয়েছিলেন হার্দিক। 

  • শ্রেয়াস আইয়ার

স্ট্রাইলিশ ব্যাটার তকমা ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছেন শ্রেয়াস আইয়ার। গেলো বছর তিনি ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। তাঁকে ছেড়ে দিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। তাঁকে নিলাম থেকে কিনে নেবে কোন এক ফ্রাঞ্চাইজি।

আইপিএলে এখন পর্যন্ত তিনি ৮৭ ম্যাচ খেলে ২৩৭৫ রান করেছেন ১২৩.৯৫ স্ট্রাইকরেটে। মিডল অর্ডারে ধরে খেলা থেকে শুরু করে শেষের দিকে মারতেও বেশ পারদর্শী তিনি। জাতীয় দলের অভিজ্ঞতা ছাড়াও আইপিএলের অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই নতুন দলের হয়ে কাজে লাগাবেন শ্রেয়াস আইয়ার।

  • শিখর ধাওয়ান

অভিজ্ঞতার বিচারের এখন পর্যন্ত তালিকায় থাকা বাকিদের থেকে বেশ অভিজ্ঞ শিখর ধাওয়ান। যদিও সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জাতীয় দলের ছিলেন না শিখর ধাওয়ান। তবে বা-হাতি এই ওপেনার বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে।

দিল্লি ক্যাপিটালস তাঁকেও ছেড়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী মেগা অকশনের দিকে ধাওয়ানকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। তবে প্রায় ১৩১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা এই ওপেনারকে দলে নিতে চাওয়া ফ্রাঞ্চাইজি একাধিক থাকবে সেটাই প্রত্যাশিত।

  • ঈশান কিষাণ 

ভারত জাতীয় দলের আগামী দিনের কাণ্ডারী ভাবা হয় ঈশান কিষাণকে। তবে তাঁর আগের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাঁকে ধরে রাখেনি। তবে আগামী মেগা অকশনে আবার হয়ত ঈশান কিষাণকে দলে নিতে চাইবে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। প্রায় ১৪০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করতে পারা এই তরুণ খেলোয়াড় বেশ সম্ভাবনাময়ী একজন ক্রিকেটার।

দীর্ঘ পরিকল্পনায় যেকোন ফ্র্যাঞ্চাইজি তাঁকে দলে নিতে চাওয়ার আগ্রহ নিশ্চয়ই প্রকাশ করবে। দেখবার বিষয় তিনি কোন দলে শেষমেশ যেতে পারেন।

  • যুজবেন্দ্র চাহাল 

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে লেগ স্পিনারদের বাড়তি এক চাহিদা তৈরি হচ্ছে সময়ের পরিক্রমায়। সেদিক থেকে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নিশ্চয়ই একজন অন্তত দেশি লেগস্পিনারদের জায়গা দেবেন দলে।

সেই দিক বিবেচনায় নিলাম ঘরে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স থেকে ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড় যুজবেন্দ্র চাহাল। আইপিএলে তাঁর উইকেটের পরিসংখ্যানও সেই কথাই বলে। ১১৩ ম্যাচে ১৩৯টি উইকেট রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। স্ট্রাইকরেট ১৭.৪।

  • শুভমান গিল

আগামী দিনের তারকা ভাবা হয় যাদেরকে তাঁদের মধ্যে শুভমন গিলের নামটাও রয়েছে উপরের দিকে। এমন একতা গুঞ্জও ছিলো যে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাঁদের পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে শুভমন গিলকে বিবেচনা করেছে।

তবে সে গুঞ্জন ধুলোয় মিলিয়ে যায় কলকাতা তাঁকে রিটেইন না করায়। এমন সম্ভাবনাময়ী একজন ব্যাটারকে হাতছাড়া করতে চায়নি নতুন ফাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্স। নতুন মৌসুমে গিলকে যেতে হচ্ছে না নিলামের মধ্য দিয়ে।

  • সুরেশ রায়না 

আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সফল দল চেন্নাই সুপার কিংসের নিয়মিত মুখ ছিলেন সুরেশ রায়না। প্রায় সব ক’টি শিরোপা জয়ে তিনি নিজের সামর্থ্যের পুরোটুকু দিয়ে অবদান রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন।

তবুও তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে চেন্নাই। এর পেছনে হয়ত বয়স একটা নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। অতএব অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড়কে মুখোমুখি হতে হবে নিলামের। তাঁর শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা হয়ত কাজে লাগাতে চাইবে নতুন যুক্ত হওয়া দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি।

  • ক্রুনাল পান্ডিয়া 

পান্ডিয়া সহোদর দুইজনই ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নিয়মিত এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলো। তবে হার্দিক পান্ডিয়ার মতো দল ছাড়তে হয়েছে তাঁর ভাই ক্রুনাল পান্ডিয়াকেও।

নিলাম ঘরে এই বা-হাতি অলরাউন্ডার খুঁজবেন তাঁর নতুন আস্তানা। ব্যাট-বল হাতে সমানতালে পারফর্ম করা এই অলরাউন্ডারকে আহমেদাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে ভেড়াতে পারে এমন এক গুঞ্জন উপেক্ষা করে ৮৪ ম্যাচে ১১৪৩ রানের পাশাপাশি ৫১ উইকেট নেওয়া ক্রুনালকে নতুন দল পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আগামী ১২-১৩ ফেব্রুয়ারি অবধি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...