ম্যাচের মাত্র পঞ্চম ওভার, অথচ সাজঘরে তিনজন ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের প্রথম টি-টোয়েন্টির শুরুটা হয়েছিল এমন-ই। বিপর্যয় ঠেকাতে দায়িত্ব নিতে হতো কাউকে, আর এই বিপদে এগিয়ে আসার জন্য অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীর চেয়ে ভাল কেউ হয়তো হতে পারতো না।
শুরুতে ব্যাটিং ধসে পড়া আফগানিস্তান শেষপর্যন্ত ১৫৪ রানের পুঁজি পেয়েছে, যার পিছনে মোহাম্মদ নবীর অবদান সবচেয়ে বেশি। ৪০ বলে ৫৪ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলে দলকে লড়াই করার সংগ্রহ এনে দিয়েছেন তিনি।
দলীয় ৩২ রানে ইব্রাহিম জাদরান ফিরে যাওয়ার পর মাঠে এসেছিলেন মোহাম্মদ নবী। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে তখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ। নবীকে তাই শুরুটা করতে হয়েছিল দেখেশুনে। প্রথমে করিম জানাতকে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিতে চেষ্টা করেন এই অলরাউন্ডার। তবে দলীয় রান অর্ধশতক ছুঁতেই জানাতের বিদায় আফগানিস্তানকে আরো খাদের দিকে ঠেলে দেয়।
এরপরই নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মোহাম্মদ নবী। রয়ে সয়ে খেলার পর একটা সময় হাত খুলতে শুরু করেন তিনি। একটা সময় তাঁর রান ছিল ২৪ বলে ২৭। কিন্তু শেষপর্যন্ত ক্রিজে থেকে তিনি খেলেছেন ৫৪ রানের এক দায়িত্বশীল ইনিংস। অনবদ্য এক ফিফটি হাঁকানোর পথে ছয়টি চার এবং একটি ছয় এসেছে এই ডানহাতির ব্যাট থেকে।
যদিও ডেথ ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইও দারুণ করেছেন। এই তরুণ মাত্র ১৮ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস না খেললে ১৩০ এর মধ্যেই হয়তো আটকে যেতে রশিদ খানেরা।
অবশ্য মোহাম্মদ নবী হাল না ধরলে আফগানিস্তানের জন্য লজ্জা এড়ানো হয়তো কঠিন হয়ে পড়তো। তাই তো সাকিব, মুস্তাফিজুরদের মত দুর্দান্ত বোলারদের সামলিয়ে যেভাবে ফিফটি করেছেন কিংবা দলকে পৌঁছে দিয়েছেন ভাল জায়গায় সেজন্য আলাদাভাবে প্রশংসা পেতেই পারেন তিনি।
বর্তমানে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের অলরাউন্ডার র্যাংকিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে নবীর ক্যারিয়ারে রয়েছে ১০০ এর বেশি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। এছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, বিগ ব্যাশের মত টুর্নামেন্টেও মাঠে নেমেছেন তিনি। ফলে এমন পরিস্থিতিতে দলের কান্ডারির ভূমিকা পালন করা কঠিন কিছু নয় এই তারকার জন্য।
বল হাতেও কার্যকরী মোহাম্মদ নবী। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ব্যাটারদের পরীক্ষা নিতে চাইবেন তিনিও। ব্যাট হাতে তো পারফর্ম করেছেনই, বল হাতের ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে নিশ্চয় উন্মুখ হয়ে আছেন সাবেক আফগান কাপ্তান।