সৌন্দর্য্যর আড়ালে ডাকের অন্ধকার

সেটাই বরং বাংলাদেশের জন্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বকাপের মঞ্চে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাসও। যদিও সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ২৮৪ রান করেছেন তিনি, নয় ইনিংসে।

দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে তার জুড়ি মেলা ভার। খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশি ব্যাটারই চোখ ধাঁধানো সব শট খেলতে পারেন। লিটন দাস তাদেরই একজন। তার খেলা প্রতিটা শটই যেন মনমুগ্ধকর। আর সেসকল শটের পূর্ণ ব্যবহারটাই লিটন করেছিলেন ২০২২ সালে।

অন্তত ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি পারফরম করেছেন নজরকাড়া। ১৩ ইনিংসে ৫৭৭ রান তিনি করেছিলেন ৫২.৪৫ গড়ে। বিশ্বকাপের বছরে তাই তার উপর ভরসা ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তিনি হতাশার সাগরে ডুবিয়েছেন। ২০২৩ বছরজুড়েই তার গড় নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে।

কিন্তু তবুও তিনি সেসবে খুব একটা ভ্রুক্ষেপ করেননি। সেটাই বরং বাংলাদেশের জন্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বকাপের মঞ্চে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাসও। যদিও সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ২৮৪ রান করেছেন তিনি, নয় ইনিংসে।

কেবল দুইটি হাফ সেঞ্চুরি তাতে। কিন্তু লিটন নিজেও হয়ত এত অল্পতেই সন্তুষ্ট হবেন না। বলকে ক্লিন হিট করতে পারার ব্যাটারদের মধ্যে তো তিনি উপড়ের সারিতেই থাকবেন। তাছাড়া টপ অর্ডার ব্যাটারদের কাছ থেকে স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশা থাকে বড় ইনিংসের। এমনকি এবারের বিশ্বকাপে টপ অর্ডারদের জয়জয়কার হয়েছে।

সেখানে লিটন দাস যেন ছিলেন বড্ড সাদামাটা। যেখানে ডি-কক, রাচিনরা রানের ফুলঝুরি ছড়িয়েছেন। বিরাট কোহলি ছাপিয়ে গেছেন শচীন টেন্ডুলকারকে। সেখানে লিটনের কাছ থেকে গড়পরতা মানের পারফরমেন্স মেনে নেওয়া বেজায় কঠিন। তবে এই পুরো বছর জুড়েই তার কাছ থেকে মিলেছে ‘মিডিওকার’ পারফরমেন্স।

সবচেয়ে দৃষ্টিকটু বিষয়, এই পুরো ২০২৩ জুড়ে লিটন দাস শূন্যরানে আউট হয়েছেন বহুবার। বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে তিনি সর্বোচ্চ সংখ্যকবার প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন খালি হাতে। ওয়ানডেতে ৫ ইনিংসে আউট হয়েছেন কোন রান না করেই। দ্বিতীয় স্থানে যৌথভাবে রয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুস্তাফিজুর রহমান। তারা দুইজনই তিন ইনিংসে শূন্য রান করে আউট হয়েছেন।

নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য মুদ্রার অপরপিঠটা দেখেছেন এই বছরেই। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেছেন শান্ত। ৯৯২ রান এসেছে ব্যাট থেকে। একটুখানি ছন্দপতনে তাই দৃষ্টিগোচড় হয়নি। তাছাড়া আট ইনিংসে পঞ্চাশ, দুইটি শতক মিলিয়ে দারুণ একটা বছরই পার করেছেন শান্ত।

অন্যদিকে লিটনে এ বছর ২৮ ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ৫টি হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এই সকল পরিসংখ্যান বড্ড বেশি বেমানান লিটনের নামের পাশে। পরিসংখ্যান ছাড়াও সামগ্রিক চিত্র অন্তত লিটনের পক্ষে ছিল ২০২৩ সালজুড়ে।

তাছাড়া এই বছরে রঙিন পোশাকে ৫০ ওভারের সংস্করণে কখনোই খুব সাবলীল মনে হয়নি লিটনকে। তিনি যেন বাইশ গজে হাজির হয়েছেন পাহাড়সম স্নায়ুচাপ নিয়ে। সবচেয়ে দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়েছেন তিনি বহুবার। দর্শক, সমর্থক, ক্রিকেটবোদ্ধাদের কাছে বারংবার বিরক্তির কারণ হয়ে সামনে এসেছেন লিটন দাস।

অথচ, লিটন দাস প্রশংসার জলে ভেসে বেড়াবেন। ক্রিকেটের রেকর্ডের বইয়ে নতুন পাতা যুক্ত করবেন। এক একটি অর্জনের পালক যুক্ত হবে তার হেলমেটে। এসবই তো প্রত্যাশিত তার কাছ থেকে। ধারাবাহিকভাবে সে কাজটুকু কবে করতে পারবেন লিটন? আদৌ পারবেন তো?

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...