প্রতিটি ফুটবলারেরই স্বপ্ন থাকে দেশের হয় বিশ্বকাপ জেতার। কিন্তু সবার সেই সৌভাগ্য হয়ে উঠে না, কোনো কোনো তারকার তো পুরো ক্যারিয়ারটাই কেটে যায় বিশ্বকাপের খোঁজে। অন্যদিকে অনেক ফুটবলারই আছেন যাদের সৌভাগ্য হয়েছে একাধিকবার বিশ্বকাপ জেতার। আসুন দেখে নেয়া যাক একাধিকবার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারদের।
- রোনালদো – ব্রাজিল
১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে প্রথমবারের বিশ্বকাপ জেতেন রোনালদো নাজারিও। সেবার টাইব্রেকারে রবার্তো ব্যাজিও শেষ শটটা গোলবারের উপর দিয়ে মারলে বিশ্বকাপ আসে ব্রাজিলের ঘরেই।
১৯৯৮ বিশ্বকাপেও ছিল সুবর্ণ সুযোগ, কিন্তু ফাইনালে অজ্ঞাত ইনজুরির কারণে ছিলেন মাঠের বাইরে। ফলত রোনালদোবিহীন ব্রাজিলও পেরে উঠেনি, জিনেদিন জিদানের ফ্রান্সের কাছে অসহায় আত্নসমর্পণ করে ৩-০ গোলে। তবে ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে জোড়া গোল করে সে ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছিলেন রোনালদো সিনিয়র।
- কাফু – ব্রাজিল
১৯৯৪ এবং ২০০২ বিশ্বকাপে রোনালদোর সতীর্থ ছিলেন কাফু। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জেতার মিশনে রক্ষণভাগকে সামলে রেখেছেন একা হাতে৷ তাছাড়া দলটার নেতৃত্বভারও ছিল তার কাঁধেই।
- ভাভা, গিলমার, মাউরো, নিলটন সান্তোস, পেপে, মারিও জাগালো, গারিঞ্চা, বেলিনি, দিদি, জালমা সান্তোস – ব্রাজিল
১৯৫৮ এবং ১৯৬২ বিশ্বকাপে ইতালির পর দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা দুই বিশ্বকাপ জেতার কৃতিত্ব অর্জন করে ব্রাজিল। ১৯৫৮ বিশ্বকাপ জেতা বেশিরভাগ সদস্যই ছিলেন ১৯৬২ বিশ্বকাপজয়ী দলে। দারুণ এক প্রজন্মকে দেখবার সৌভাগ্য হয়েছিল ব্রাজিলের।
১৯৫৮ বিশ্বকাপে তাঁরা ফাইনালে হারায় স্বাগতিক সুইডেনকে। সেদিনের ফাইনালে সুইডিশদের ৫-২ গোলে রীতিমতো বিধবস্ত করে। অন্যদিকে ১৯৬২ বিশ্বকাপ ফাইনালে আমারদিলহো, জিটো এবং ভাভার গোলে চেকোস্লোভাকিয়াকে হারায় ৩-১ গোলে।
- পেলে – ব্রাজিল
সর্বকালের সেরা ফুটবল তারকাদের একজন পেলে। একমাত্র ফুটবলার হিসেবে জিতেছেন তিনটি বিশ্বকাপ। ১৯৫৮, ১৯৬২ বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি ১৯৭০ বিশ্বকাপ দলের অবিচ্ছেদ্য সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে মাত্র ১৭ বছর বয়সেই ফাইনালে গোল করে গড়েছিলেন বিরল এক কৃতিত্ব।
১৯৬২ বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে পুরোটা খেলতে না পারলেও ঝলক দেখিয়েছিলেন নিজের সামর্থ্যের। প্রথম ম্যাচেই মেক্সিকোর বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন। তবে ৬২’ বিশ্বকাপের দু:খ পেলে সুদে-আসলে মিটিয়েছেন ১৯৭০ বিশ্বকাপে। চার গোল করে সেবারের টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন কালো মানিক।
- জিওভান্নি ফেরারি, গুইদো মাসেত্তি, এরাল্ডো মঞ্জেগ্লিও, গুইসেপ্পে মিয়াজ্জা – ইতালি
১৯৩৪ বিশ্বকাপে প্রথম স্বাগতিক দল হিসেবে শিরোপা জেতার সৌভাগ্য অর্জন করে ইতালি। কেবল তাই নয়, প্রথম দল হিসেবে চার বছর বাদে ফ্রান্স বিশ্বকাপেও শিরোপা ধরে রেখেছিল তাঁরা। সেই দলেরই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন চারমূর্তি – জিওভান্নি ফেরারি, গুইদো মাসেত্তি, এরাল্ডো মঞ্জেগ্লিও এবং গুইসেপ্পে মিয়াজ্জা। মিয়াজ্জা ছিলেন এই দলের প্রাণ। ১৯৩৮ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কারও জিতে নিয়েছিলেন তিনি।
এই তালিকায় নাম যুক্ত হতে পারে কিলিয়ান এমবাপে, আলফনসো আরিওলা, অলিভার জিরুড, লুকাস হার্নান্দেজ, মানদান্দা, রাফায়েল ভারানে, বেঞ্জামিন পাভার্ড, কিমপেম্বে, আঁতোয়ানে গ্রিজম্যানের নামও।
ফ্রান্সের এই সোনালি প্রজন্ম ২০১৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে এনে দিয়েছিল বিশ্বকাপের শিরোপা। কাতার বিশ্বকাপেও তাঁদের সামনে শিরোপা ধরে রাখার সুবর্ণ সুযোগ। এখন দেখা যাক আরো একবার বিশ্বকাপের শিরোপা নিজেদের কাছে রেখে দিতে পারেন কিনা এমবাপেরা।