দ্য এমবাপ্পে ফ্যাক্টর

ফলটা কী? ডান পায়ের কাজ নিয়ে জন্মানো খোকার সামনে বাঁদিকে প্রচুর স্পেস খুলে যাওয়া। বডি ফেন্ট করে, দু'পায়ের মাঝে বল রেখে সহজাত ড্রিবলটা ভয়ংকর ড্রিবলে পরিণত করে ফেলতে পেরেছে। ট্র্যাকব্যাকটার দরকার পড়ে না কারণ পচেটিনো দুটো পিভট নিয়ে নামতো, আর থিয়াগো সিলভা-নুনো-মারকুউনহোস সামলে নিতো। এবার নিচের গ্রাফের দিকে চোখ বোলানো যাক।

কিলিয়ান এমবাপ্পের স্পিড আর টেম্পো নিয়ে কথা বলাটা নেহাত ঐ হিন্দি প্রবাদে ‘বগলমে ছোরা অউর শহরমে ঢিন্ঢোরা’। ছেলেটার মোনাকো থেকেই স্পিডটা ছিল। পিএসজিতে এসে ঘাঁটি গাড়ার পর থেকে স্পিডের সাথে মিশেছে ড্রিবলিং। আর সে অতি চমৎকার ড্রিবলিং। এই কাজে সহায়তা প্রদান করেছে নেইমার। কীভাবে? পিএসজিতে ডানদিকে অনেকটা ফ্রি জায়গা পেত টুখেলের আমলে ডি মারিয়া।

কারণটা হল সেই সময় থেকে নিজের বাঁদিকে ফ্ল্যাঙ্কটা ছেড়ে মিড করিডরের ঠিক ওপরে খেলতে শুরু করে নেইমার। অনেকটা এনগ্যাঞ্চে পজিশনে। লাতিন আমেরিকার খুব জনপ্রিয় অন ফিল্ড সিচুয়েশন এই এনগ্যাঞ্চে। মিডলাইন আর ফাইনাল থার্ডকে গিঁট দিয়ে বেঁধে রাখার কাজ। এই রোলটা প্লে করার সময়, পরবর্তীতে পচেটিনো কোচ হয়ে আসার পর নেইমার আরও নিচে নেমে রাবিওটের কাছ থেকে বল নিতে থাকে। যে রোলটা নেই এখনও প্লে করে পিএসজিতে, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মেসির ডায়গোনাল মুভমেন্ট।

ফলটা কী? ডান পায়ের কাজ নিয়ে জন্মানো খোকার সামনে বাঁদিকে প্রচুর স্পেস খুলে যাওয়া। বডি ফেন্ট করে, দু’পায়ের মাঝে বল রেখে সহজাত ড্রিবলটা ভয়ংকর ড্রিবলে পরিণত করে ফেলতে পেরেছে। ট্র্যাকব্যাকটার দরকার পড়ে না কারণ পচেটিনো দুটো পিভট নিয়ে নামতো, আর থিয়াগো সিলভা-নুনো-মারকুউনহোস সামলে নিতো। এবার নিচের গ্রাফের দিকে চোখ বোলানো যাক।

যত দিন এগিয়েছে, খোকা নিজেকে এমন তৈরি করেছে যে লো এক্সজি থেকে অধিকাংশ সময় গোল এসেছে। হাই এক্সজির গোলগুলো টু মাচ প্রেডিক্টেবল এবং গোল। লো এক্সজির ক্ষেত্রে, যেমন ধরা যাক ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আগের কাপের ফাইনালটা। সে কোথা থেকে, প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে শটে গোল। আর শট মারার সময় এমবাপের একটা জিনিস খুব ইমপ্রেসিং, ছেলে ডান পায়ে শট মারলে বডি প্রায় ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গলে রাখে।

ফলে শটটা প্রিসাইস হয়, ফিনেশ ভাল হয়, বডির আপার পোর্শন এবং পায়ের বেন্ডিংয়ের মধ্যে পারফেক্ট অ্যাঙ্গেল ক্রিয়েট করলে বলের ঠিক মাঝে পা আসবেই। আর সেটাই এমবাপের প্লাস পয়েন্ট। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোল এসেছে লো এক্সজিতে। স্ট্যাট? ২৯ শটে ৯ গোল। যেখানে এক্সজি ৫। পার শটে এক্সজি ০.১৭।

এমবাপ্পেকে এই কারণেই সম্ভ্রম জাগানো এক তরুণ সুপারস্টার যে দুর্নিবার স্পিডের মধ্যে মিশিয়ে দেয় দু’পায়ে বল রাখা আপাত কঠিন ড্রিবল, শটের সময় ভাঁজ করা বডি পারফেক্ট শেপে থাকে আর ফাঁক খুঁজে দুটো ডিফেন্ডারের মধ্যে থেকে পাস খেলতে পারে ফাইনাল থার্ডে। পিএসজির গ্রাফটা পাওয়া গেল না, না হলে ছবিটা আরও অনেকটা পরিস্কার হতো।

ইদানিং ওর স্বভাবসুলভ ড্রিবলের মধ্যে একটা জিনিস খেয়ার করার, সামনে টাফ ট্যাকল এক্সপেক্ট করলে চ্যানেল ঘুরিয়ে কাছে থাকা মিডের সাথে একটা ওয়াল খেলে ভেতরে ঢুকে পড়ে আপফ্রন্টের দিকে একটা থ্রেট তৈরির চেষ্টা করছে। যেটা অপোনেন্টের ডিফেন্স স্ট্রাকচারকে ঘেঁটে দিচ্ছে। এটার শুরুটা হয়েছে এই সিজনে, যেখানে নেই আর খোকা মাঝে মাঝেই জায়গা বদল করে খেলছে এবং মেসি ফাঁকায় উঠে এসে এক-দু’টাচের ওয়ালে ছোট্ট স্পেস ক্রিয়েট করছে।

রিসেন্ট ইংল্যান্ড ম্যাচেও ওয়াকারের ট্যাকল অ্যাসাম্পশন করে চকিতে একটা ওয়ালে ভেতরে ঢুকে ওয়ান অন ওয়ানে এগিয়ে আসা ডেম্বেলেকে বল দিয়েই ভেতরে মুভ নিল। ফলে মার্কিং ঘাঁটল, আর ডেম্বেলে উঠে আসা চুয়ামেনিকে বল দিল। যে শটটা কেউ এক্সপেক্টই করেনি, সেটাই গোল হল।

দেখা যাক এই সব ইকুয়েশন আজ রাতে মরক্কোর দেওয়ালের সামনে কাজ করে কি না। খোকা কিন্তু ইস অন ফায়ার হতে দু’মিনিট সময় নেবে জাস্ট! আর, শুধু অ্যাটিটিউডটা যদি একটু ঠিক থাকতো।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...