ভারতীয় ক্রিকেটের দুই মহীরুহ তাঁরা দুজন। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপার পর ভারতের সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়টাও এসেছিল তাদের হাত ধরেই। মহেন্দ্র সিং ধোনি হয়েছিলেন সে ফাইনালের ম্যাচ সেরা। আর যুবরাজ সিং হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা। ধোনি-যুবরাজের যুগলবন্দী তাই ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয়ই হয়ে আছে। তবে ধোনিকে নিয়ে এবার বিস্ফোরক এক মন্তব্য করলেন যুবরাজ সিং।
ধোনি-যুবরাজ, দুজন একে অপরের অন্তরঙ্গ বন্ধু, এমনটাই এতদিন লোকমুখে শোনা যেত। তবে এবার তা প্রকাশ্যেই অস্বীকার করলেন যুবরাজ সিং।সরাসরিই জানিয়ে দিলেন, ধোনির সঙ্গে তাঁর কোনও বন্ধুত্বই নেই। টিআরএস ক্লিপে এক সাক্ষাৎকারে যুবি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ধোনি মোটেই আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু না। ক্রিকেটের স্বার্থেই আমরা বন্ধু হয়েছিলাম একটা সময়ে। আমরা একসঙ্গে খেলেছি। ব্যাস এত টুকুই। মাহির জীবনযাপনের ধরন আমার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। দেশের হয়ে দুজনই শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করতাম। সে অধিনায়ক ছিল, আর আমি সহ-অধিনায়ক ছিলাম। আর এই দু’টো রোলে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কিছু ফারাক থাকেই। আমাদের মধ্যেও হয়েছিল।’
এরপর নিজেদের মতবিরোধের কথা জানিয়ে যুবি বলেন, ‘দেখা যেতো, কোনো সময় ওর সিদ্ধান্ত আমার পছন্দ হত না। আবার আমার সিদ্ধান্ত ওর ভালো লাগতো না। এটা স্বাভাবিক। যে কোনো দলেই হতে পারে। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে, আমি ওর কাছে পরামর্শ চেয়েছিলাম। কারণ আমি দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। ধোনি আমাকে সরাসরি জানিয়েছিল যে, নির্বাচকরা আমাকে আর দলে চাইছে না।’
জাতীয় দলের সকলেই যে সকলের ভালো বন্ধু হবেন, এমনটাও মনে করেন না যুবি। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঠের বাইরে দলীয় সতীর্থরা ভাল বন্ধু নাও হতে পারে। কারণ সবার নিজস্ব জীবনযাত্রার আলাদা ধরণ রয়েছে। মাঠের বাইরে অনেকেই নির্দিষ্ট বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে ভালোবাসে। কোনো দলেরই ১১ জন সকলে সকলের বন্ধু হয়না। তবে মাঠে নামলে নিজেদের ইগো সরিয়ে পারফর্ম করতে হয়।’
এরপর আরো যুক্ত করে বলেন, ‘মাঠে এমন নজিরও রয়েছে যেখানে ধোনি চোট পাওয়ার পর আমি রানার হিসাবে নেমেছি। এখনও মনে আছে, ধোনি এক ম্যাচে নব্বইয়ের ঘরে ব্যাটিং করছিল। আমি ওর সেঞ্চুরির জন্য ওকে স্ট্রাইক দিয়েছিলাম। সে ম্যাচে ধোনির জন্য দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ডাইভও দিয়েছি। ২০১১ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আমি ৪৮ রানে ব্যাটিং করছিলাম। তবে আমাদের জিততেও প্রয়োজন ছিল ২ রান। ঐ সময় মাহি দুটো বল ডিফেন্স করেছিল যাতে আমি ফিফটি পাই।’
এরপর ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা টেনে এনে যুবরাজ বলেন, ‘সেই ফাইনালে ঠিক করা ছিল, গম্ভীর যদি আউট হয়ে যায় আমি নামব। বিরাট আউট হলে ধোনি নামবে। তবে ঐ পরিস্থিতিতে ধোনি আগে নেমেছিল। যেটাতে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। আমরা সবসময়ই পেশাদার ছিলাম। এখন দুজনেই এখন অবসরে। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক যে খারাপ, তাও কিন্তু না। দুজন কয়েকদিন আগেই এক বিজ্ঞাপনের শুটিং করলাম। আগের কত কথা শেয়ার করলাম সেদিন। বেশ মজা করেছিললাম দুজনে।’