আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ পাঁচ বার শিরোপা জেতা দলটির ব্যাটিং অর্ডারের সুনাম ছিল বরাবরই। এবারের মৌসুমেও যেন দুইশো রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতাকে এক প্রকার ছেলেখেলাই বানিয়ে ফেলেছে রোহিত শর্মার দল।
মৌসুম শুরুর আগেই নিজেদের বোলিং লাইনআপ নিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে দলটি। মূল তারকা জাসপ্রিত বুমরাহ ইনজুরিতে ছিটকে যান গোটা মৌসুমের জন্য। আরেক পেসার জোফ্রা আর্চারও ফিরে পাননি পুরনো ছন্দ। ফলে ভঙ্গুর এক বোলিং লাইনআপ নিয়ে এবারের মৌসুমে মাঠে নেমেছে দলটি।
প্রতি ম্যাচেই বড় রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হচ্ছে। অথচ অধিনায়ক রোহির শর্মা ফর্মে নেই বহুদিন, মিডল অর্ডারের পুরনো সেনানী কিয়েরন পোলার্ডও বিদায় নিয়েছেন।
অন্য কোনো দল হলে হয়তো বড় হারই হতো নিয়তি, কিন্তু দলটা মুম্বাই বলেই নড়েচড়ে বসতে হয়। নিজেদের ব্যাটিং অর্ডারের সুনাম ধরে রেখে বড় লক্ষ্য তাড়া করে জেতাকে রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করেছে দলটি।
এবারের মৌসুমে চারবার দুইশো রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে দলটি। সর্বশেষ ম্যাচে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে রীতিমতো রাজসিক এক জয় তুলে নিয়েছে দলটি। ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয় পেয়েছে ২১ বল বাকি থাকতেই। আইপিএলের ইতিহাসে এত বল বাকি থাকতেই ২০০ রান তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দলই।
সেদিন রান তাড়া করতে নেমে রীতিমতো ঝড়ের গতিতে ব্যাটিং করেছেন মুম্বাইয়ের ব্যাটাররা। বিশেষ করে সুরিয়াকুমার যাদব এবং তরুণ নেহাল ওয়াধেরার তৃতীয় উইকেট জুটিতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ব্যাঙ্গালুরু।
এবারের আসরে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৬৭ রানের জুটি গড়ে দলের জয় এক প্রকার নিশ্চিত করে দেন এই দুই তারকা। সুরিয়াকুমার ৩৫ বলে ৮৩ রান করে আউট হলেও নেহাল অপরাজিত ছিলেন ৪০ বলে ৫২ রানে। মুম্বাইয়ের ইতিহাসে এটি তৃতীয় উইকেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।
ওয়াংখেড়েতে সেদিন রেকর্ডবুক উল্টেপাল্টে দেখতে হয়েছে আরো বেশ কয়েকবার। মুম্বাইয়ের ব্যাটিংয়ের সুবাদেই কিনা লজ্জার এক রেকর্ডের সম্মুখীন হয়েছেন ব্যাঙ্গালুরুর বোলাররা।
আইপিএলের প্রথম দল হিসেবে এক আসরে পাঁচ বার দুইশো রানের বেশি হজম করলেন দলটির বোলাররা। মোহাম্মদ সিরাজ, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, হার্শাল প্যাটেলরা কেউই যেন বাঁধা দিতে পারছেন না প্রতিপক্ষের রান উৎসবে।
তবে ব্যাট হাতে অবশ্য সফল ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটাররা। অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মিলে গড়েন ১২০ রানের জুটি। এবারের আইপিএলে এই দুই তারকা এটি চতুর্থ শতাধিক রানের জুটি।
আইপিএলের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয় জুটি হিসেবে এই রেকর্ড গড়েন তাঁরা। এর আগে বিরাট কোহলি-এবি ডি ভিলিয়ার্স ও ডেভিড ওয়ার্নার-জনি বেয়ারেস্টোর জুটিরই এই রেকর্ড ছিল।
এছাড়া এদিন যেন ছিল তৃতীয় উইকেট জুটির জন্য স্মরণীয় এক ম্যাচ। দুই দল মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে মোট ২৬০ রান তুলেছে, যা কিনা আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৬ মৌসুমে গুজরাট টাইটান্স এবং রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর ম্যাচে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ২৫৭ রান তুলেছিলেন ব্যাটসম্যানরা।