খোলস খুলছেন মুস্তাফিজ

২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে দুর্দান্ত কাটার ভেলকিতে ‘কাটার মাস্টার’ নাম কুড়িয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর একটি বছর ছিল স্বপ্নের মতো। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের টুর্নামেন্টের পুরষ্কার জেতার সাথে সাথে শিরোপাও হাতে তোলেন!

অভিষেকের পর থেকেই গগনে উড়ছিলেন ফিজ। তার কাটার-স্লোয়ারে দিশেহারা হয়ে পড়তেন ব্যাটসম্যানরা। এরপর প্রায় অনেকটা সময় কোথায় যেনো হারিয়ে গিয়েছিলেন সেই কাটার মাস্টার। তার বোলিংয়ের সেই ধারটা যেনো হারিয়ে গিয়েছিলো! রান খরচায় যেনো উপরেই থাকতেন তিনি।

তবে বাজে সময় কাটিয়ে আবারো নিজের চেনা রুপে ফিরতে শুরু করেছেন ফিজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আস্তে আস্তে সেই আগের রূপটা দেখা যাচ্ছে, অস্ত্রশালায় যোগ হয়েছে নতুন অস্ত্র। এবার আইপিএলেও নিজের খোলস ভাঙতে পেরেছেন তিনি। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে তিনি ম্যাচ পাবেন কি না – সেটা নিয়েই একটা সময় সন্দেহ ছিল, তবে যত দিন যাচ্ছে তিনি একাদশে ততই থিতু হচ্ছেন। সর্বশেষ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে বেশ সমীহ করার মত বোলিংই করলেন।

দলীয় চতুর্থ আর নিজের প্রথম ওভারে এসে মাত্র ৭ রান দেন তিনি। তার করা প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই স্লোয়ার ভেলকিতে ক্যাচ তুলেন শুভমান গিল। কিন্তু কিছুটা দৌড়ে এসেও ক্যাচটি নিতে পারেননি শুভমান গিল। ৭ রান খরচা করলেও তিনি বেশ দারুন বল করেন সেই ওভারে। এরপর দলীয় ষষ্ঠ ও নিজের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন তিনি৷ সেই ওভার থেকে মাত্র দুই রান দেন সেই সাথে রান আউট করেন গিলকে। যেই শুভমান গিলের উইকেট তিনি নিতে পারেননি সেই গিলকেই নিজের বলে রান আউটের ফাঁদে ফেলেন ফিজ। নিজের করা প্রথম দুই ওভার থেকে দেন মাত্র নয় রান।

এরপর দলীয় ১৬ তম ও ব্যক্তিগত ৩য় ওভার করতে আসেন তিনি। নিজের দ্বিতীয় বলেই স্লোয়ারে উইকেট তুলে নেন রাহুল ত্রিপাঠির উইকেট! ডেথ ওভারে দীনেশ কার্তিককে পুরোটা ওভারেই কাটার ভেলকিতে নাঁচিয়েছেন তিনি। নিজের স্লোয়ার আর কাটারের কম্বিনেশনে কার্তিক যেনো বোলিং প্রান্তে যেতে পারলেই হাফ ছেড়ে বাঁচে।

কিন্তু ফিজের টানা তিন বলেই কোনো রান বের করতে পারেননি তিনি। সেই ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি ছাড়া করে চার রান আদায় করেন কার্তিক৷ সেই ওভার থেকে ফিজ দেন মাত্র ৫ রান। তিন ওভারে ১৪ রান খরচায় এক উইকেট শিকার করেন তিনি।

দলীয় ১৯তম ও ব্যক্তিগত শেষ ওভার করতে আসেন ফিজ। এই ওভার থেকে নয় রান আসলেও উইকেটের সুযোগ তৈরি করেন তিনি। তবে দুর্ভাগ্য যেনো পিছু হটছে না তাঁর! ক্যাচ উঠলেও ধরতে পারেননি কেউই! তবে বল হাতে দূর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন তিনি। তার কাটারে ব্যাটসম্যানের সাথে সাথে বোকা বনে গিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনও! বেশ কয়েকটি বল তিনি ঠিকমতো ধরতেও পারেননি। মোট চার ওভারে ২২ রানের বিনিময়ে এক উইকেট নেন মুস্তাফিজ।

দূর্ভাগ্য সাথে না থাকলেও আজও ফিজের নামের পাশে অন্তত তিনটি উইকেট থাকতো। তবে সেটাই মূখ্য নয়, খোলস খুলে মুস্তাফিজ যে আগের রূপে ফিরতে শুরু করেছেন তারই বড় প্রমাণ হয়ে থাকলো আজকের বোলিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link