ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের অভিষেক ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। এরপর বিশ্বকাপের মঞ্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পাঁচ উইকেট নেয়ার কোন কীর্তি ছিল না এই পেসারের। আজ বিপিএলে তৃতীয় বাঁহাতি পেসার হিসেবে এই রেকর্ডের মালিক হলেন ফিজ।
বিশ্বকাপে যাবার আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দারুণ বোলিং করেছিলেন। ফলে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপের বড় ভরসা ছিলেন এই পেসার। তবে বিশ্বকাপে প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি ফিজ। এবার অবশ্য বিপিএলে শুরু থেকে ভালো বোলিং করছিলেন। তবে বোলিং ফিগার গুলো ঠিক ফিজের মত হচ্ছিল না।
যদিও এবারের বিপিএলে শুরু থেকেই নিজের নতুন অস্ত্র দিয়ে ব্যাটসম্যানদের ভোগাচ্ছিলেন। প্রতি ম্যাচেই ইকোনমিক্যাল বোলিং করেছেন। কোন ম্যাচেই এখন পর্যন্ত ২৬ রানের বেশি খরচ করেননি। বিপিএলে এখন পর্যন্ত তাঁর ইকোনমি রেট ছয়ের কাছাকাছি। তবে বিপিএলে মুস্তাফিজের উপস্থিতিটা ঠিক প্রকট হচ্ছিল না। বল হাতে প্রতিপক্ষকে তছনছ করে দেয়া কোন স্পেল দেখা যাচ্ছিল না। সেই আক্ষেপ আজ মিরুপুরে মেটালেন ফিজ। আজ আবার ফিরলেন স্বরূপে।
এর আগের চার ম্যাচে ফিজের ঝুলিতে ছিল মোট ৬ উইকেট। আজ চট্টগ্রামের হয়ে ব্যাট হাতে লড়াইটা ভালোই শুরু করেছিলেন উইল জ্যাকস ও শামীম পাটোয়ারি। এরপর বৃষ্টির কারণে প্রায় একঘন্টা খেলা বন্ধ থাকে। বৃষ্টির পর আবার মাঠে নামলেই চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইন আপ ভেস্তে দিলেন মুস্তাফিজ।
শুরু করেছিলেন ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকা উইল জ্যাকসের উইকেট দিয়ে। এরপর শামীম, বেনি হাওয়েল দুজনকেই পরপর ফেরান এই পেসার। চট্টগ্রামের অধিনায়ক নাঈম ইসলামকে ফেরান ফলো থ্রুততে নিজেই দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে। এরপর মিরাজের উইকেট নিয়ে নিজের পাঁচ উইকেটের কোটা পূরণ করলেন মুস্তাফিজ। এই নিয়ে তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মোট ১০ বারের মত পাঁচ উইকেট নিলেন।
চট্টগ্রামের বিপক্ষে আজ নিজের কোটার পুরো চার ওভার বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ। সেখানে মাত্র ২৭ রান দিয়েই ৫ উইকেট তুলে নিলেন এই পেসার। ডট বল দিয়েছেন মোট ১০ টি। আজ ৫ উইকেট নিয়ে বিপিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবে উঠে আসলেন মুস্তাফিজ। মাত্র ৫ ম্যাচ খেলেই এই পেসার তুলে নিলেন ১১ উইকেট। এছাড়া খুলনার পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিও ছয় ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১১ উইকেট।
ওদিকে বিপিএলে মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজের পর তৃতীয় বাঁহাতি পেসার হিসেবে নিলেন ৫ উইকেট। এবারের বিপিএল এই প্রথম কোন বোলারদের পাঁচ উইকেট নিতে দেখলো। এছাড়া বাংলাদেশের সপ্তম বোলার হিসেবে বিপিএলে পাঁচ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়লেন মুস্তাফিজ। এর আগে সাকিব আল হাসান, আল আমিন হোসেন, আবুল হাসান, তাসকিন আহমেদ, আফিফ হোসেন, শফিউল ইসলাম ও নাসির হোসেন পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন।
মুস্তাফিজের এই ফর্মে থাকাটা বড় শক্তি হয়ে কাজ করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্য। এছাড়া এই বছর বাংলাদেশও রঙিন পোশাকে অনেক ম্যাচ খেলছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও আছে এবছর। তাই এখন মুস্তাফিজের ফর্মে থাকাটা বাংলাদেশের জন্যেও বড় স্বস্তি। শরিফুল, তাসকিনদের নিয়ে গড়া পেস বোলিং অ্যাটাকটাকে তো মুস্তাফিজই নেতৃত্ব দিবেন।