গতির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশের টেস্ট দলে আবির্ভাব হয় নাহিদ রানার। বাংলাদেশ যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছিল সেদিন। ঘন্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার ছুঁইছুঁই গতি তুলে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। সেই নাহিদ এবার প্রথমবারের মত জাতীয় দলের হয়ে বিদেশ সফরে গেলেন।
তাঁর জন্য অপেক্ষায় পাকিস্তান। আর পাকিস্তান মানেই তো পেস বোলারদের আঁতুড়ঘর। ওয়াসিম আকরাম কিংবা একালের শাহীন শাহ আফ্রিদি – সেরা পেসার প্রোডাকশনে কখনও কার্পণ্য করেনি পাকিস্তান। নাহিদ অবশ্য প্রতিপক্ষ বা কন্ডিশন নিয়ে ভাবছেন না। কেবল নিজের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে চান তিনি।
পাকিস্তানের বিমানে ওঠার আগে খুব অল্প করে বলে গেলেন, ‘আমি খুবই এক্সাইটেড। ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই। দেশের জন্য ভাল কিছু আনতে চাই।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ও প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে গতির ঝড় তুলে আবির্ভাব হয় নাহিদ রানার। অথচ, চার বছর আগেও ক্রিকেট বল নিয়ে বল করার অভ্যাস ছিল না। ২০২০ সালে ক্রিকেট বলে বোলিং করা শুরু করেন। ক্রিকেট বল হাতে নেওয়ার এক বছরের মধ্যেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক।
২০২২-২৩ মৌসুমে নেন ৪১ উইকেট। এরপর বিপিএল। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি নাহিদকে। ২০২৪ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক। অভিষেকের দুই ইনিংস মিলিয়ে নেন পাঁচ উইকেট, আর তাতেই বেড়ে যায় প্রত্যাশার পারদ।
যদিও, এরপর আর কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা হয়নি। কেবল ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। লঙ্গার ভার্সন খেলার সুযোগ না থাকায় প্রস্তুতিতে কিছুটা হলেও ঘাটতি তো থাকছেই।
রানা অবশ্য ঘাটতি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘না, প্রস্তুতি কম হয়েছে সেটা বলব না। আমাদের তিন মাসের একটা ক্যাম্প হয়েছে। সেখানে নিজেকে ফিট রাখার ভাল সুযোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী।’
তারপরও নাহিদকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধার কোনো বিকল্প নেই। গতি তাঁর শক্তি। সাথে আছে উচ্চতা। সহজাত বাউন্স পান। ডেলিভারি হ্যান্ড সোজা, পেয়ে যান কিছু বাড়তি মুভমেন্ট। লাইন লেংথ নিয়ে কাজ করলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে দুর্দান্ত এক পেসার হতে পারেন তিনি।
কে জানে, এই নাহিদই হয়তো একদিন সত্যিকারের এক্সপ্রেস বোলারের আক্ষেপ মেটাবেন বাংলাদেশের। আর সেই শুরুটা হয়ে যাক পাকিস্তানের বিপক্ষেই!