ক্রিকেট যত আধুনিকতার দিকে এগুচ্ছে বোলাররা ততই যেন অবহেলার শিকার হচ্ছেন। চলতি আইপিএল সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে; ব্যাটাররা যেখানে মোয়া মুড়কির মত চার-ছক্কা হাঁকাচ্ছেন, সেখানে বল হাতে কিছুই করার থাকছে না। তবে থাঙ্গারাসু নটরাজন সেখানে ব্যতিক্রম, ব্যাটিং স্বর্গে দাঁড়িয়েও সমান তালে পারফরম করে যাচ্ছেন তিনি।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ছুঁড়ে দেয়া ২৬৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা পেয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। শুরু থেকেই দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন ফ্রেসার ম্যাকগার্ক, অভিষেক পোড়েলরা। তবু শেষপর্যন্ত দলটি জয়ের কাছাকাছিও যেতে পারেনি সেটার কারণ এই পেসার, তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ের কারণেই সাত ওভারে ১০০ রান পার করা দিল্লি থেমে গিয়েছে ১৯৯ রানেই।
এদিন চার ওভার হাত ঘুরিয়ে মোটে ১৯ রান দিয়েছেন তিনি; বিনিময়ে শিকার করেছেন চার চারটি উইকেট। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার, একটি মেডেন ওভারও নিজের ঝুলিতে পুরেছেন; সেটিও আবার ইনিংসের উনিশতম ওভারে এসে।
এই বাঁ-হাতি যখন আক্রমণে আসেন ততক্ষণে পাঁচ ওভার খেলে ৮১ রান করেছিল স্বাগতিকরা। অথচ হিংস্র দুই ব্যাটারের বিপরীতে মাত্র সাত রান খরচ করেই ওভার শেষ করেন তিনি। নিজের দ্বিতীয় ওভারেও তাঁর কাছ থেকে আসে কিপ্টে বোলিং, এবার স্রেফ পাঁচ রান আদায় করেন ব্যাটাররা। পরের ওভারে এসে প্রথমবারের মত উইকেট উদযাপন করতে দেখা যায় তাঁকে।
তবে এই তারকার ভয়ঙ্কর মূর্তি দেখা গিয়েছিল ব্যক্তিগত চতুর্থ ওভারে। দুর্ধর্ষ সব ইয়র্কারে উইলো হাতে দাঁড়ানো মানুষদের উড়িয়ে দিয়েছিলেন; অক্ষর প্যাটেল, আনরিখ নর্কিয়া তাঁর সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল। সবমিলিয়ে দারুণ একট পারফরম্যান্স উপহার দিলেন তিনি।
পুরো ম্যাচের গড় ইকোনমি যেখানে ১১ এর উপরে সেখানে এই বোলার ওভারপ্রতি পাঁচ রানও দেননি। উইকেটসংখ্যা বাদ থাকুক; মাঝের ওভারে তাঁর তিন ওভারে রান তুলতে না পারা এটিই তো দিল্লির সঙ্গে হায়দ্রাবাদের ব্যধধান তৈরি করে দিয়েছে।
বাঁ-হাতি একজন পেসারের অভাব অনেকটা সময় ধরেই অনুভব করছে ভারতীয় ক্রিকেট; বছর কয়েক আগে নটরাজনের আগমন আশান্বিত করেছিল সমর্থকদের। কিন্তু এরপর আবার ইনজুরির কারণে হারিয়ে যেতে বসেছিলেন তিনি; তাই তো তাঁকে এমন রূপে দেখে আবারো নিশ্চয়ই আশাবাদী হবেন সবাই।