পাকিস্তান ক্রিকেটে এই মুহূর্তে বইছে দু:সময়ের হাওয়া। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে রীতিমত শূন্য অর্জন নিয়ে ফিরতে হয়েছে পাকিস্তানকে। দেশটির এমন হতাশায় ঘেরা সময়ের জন্য হুটহাট রদবদলের প্রক্রিয়াকে দায়ী করেছেন পাকিস্তানের সাবেক কোচ মিকি আর্থার। তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কারোর উপর কেউ ভরসা করতে পারে না। আর এ কারণেই দলটি সফলতার মুখ দেখতে পারছে না।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মিকি আর্থার বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত দেখছি, পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়ে পেরেক মারছে। প্রতিভা আছে, প্রয়োজন সঠিক কাঠামো, ভালো নেতৃত্ব। ওরা কারো উপর ভরসা করতে পারে না। ২০১৬ থেকে ২০১৯, নাজামকে ধন্যবাদ, তখন আমাদের কাছে এমন খেলোয়াড় ছিল, যারা প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করত। আমি তখনকার নির্বাচক ইনজামাম উল হকের সাথে নিয়মিত বসতাম। একটা দারুণ বোঝাপড়া ছিল আমাদের। আর এ কারণে সেই সময় আমরা সফলতাও পেয়েছি।’
কোচ, অধিনায়ক থেকে শুরু করে প্রশাসনের বারবার পরিবর্তনের ফলে ক্রিকেটাররা ঠিক মতো পারফর্ম করতে পারে না মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ‘যদি এখানে ক্রমাগত পরিবর্তন এবং অস্থিরতা থাকে, খেলোয়াড়রা তাহলে নিজের জন্যই খেলবে, পরবর্তী সফরের কথা চিন্তা করবে। এটা দেখা হতাশাজনক যে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হয় না, কোনো সঠিক উপায়ে যোগাযোগ নেই এবং তারা জানে যে বিষয়গুলো সব সময় পরিবর্তন হতে চলেছে।’
২০২২ সালের ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন নাজাম। দায়িত্বে ফিরেই তিনি পাকিস্তান ক্রিকেটে ফেরান আর্থারকে। নাজাম শেঠি বিদায় নেওয়ার পর পাকিস্তান বিশ্বকাপে ভালো করতে না পারলে আর্থারকেও চুক্তির আগে চলে যেতে হয়। নতুন পিসিবির প্রধান জাকা আশরাফ আর্থারের ওপর ভরসা রাখেননি। বদলে ফেলা হয় পুরো কোচিং স্টাফকে। ইনজামাম তো বিশ্বকাপ চলাকালীনই পদত্যাগ করেন।
এই রদবদল যে পাকিস্তানের ক্রিকেটে মোটেই ভাল কিছু বয়ে আনছে না, তা জানিয়ে আর্থার বলেন, ‘আমি ও ইনজি তাদের ধারাবাহিকতা এনে দিচ্ছিলাম। আমি একজন খেলোয়াড়কে বলতে পারি,যে তুমি আগামী ১০টি ওয়ানডে খেলবে। আমরা জানি ও আমাদের ম্যাচ জেতাবে। মাঝেমধ্যে এটা অনেক ঝুঁকির। কিন্তু অন্তত খেলোয়াড়দের কাঠামোর প্রতি বিশ্বাস ছিল, নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বিশ্বাস করত এবং দলের জন্য খেলত।’
২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধান কোচ ছিলেন মিকি আর্থার। তাঁর অধীনেই ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জিতেছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে না পারায় অবশ্য প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আর্থারকে। তবে আর্থার আবার ফেরেন ২০২৩ সালে। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে। ভারতে গত অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বিশ্বকাপের পর সে ভূমিকা থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।