বিশ্বকাপের মূলপর্বের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলো আগের বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৮৯ রানে হারিয়ে দুবাইয়ে ফাইনালে হারার মধুর প্রতিশোধ নিল কিউইরা।
এই ম্যাচ ২০২২ টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গ্রুপ পর্ব শেষে এবার শুরু হল মূল লড়াই। যে লড়াইয়ে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে আসা চার দলের সাথে আগে থেকে কোয়ালিফাই করা বাকি আট দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে মাঠে নামবে।
বৃষ্টি শঙ্কা মাথায় রেখে শুরু হওয়া ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং বেছে নেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তবে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে ভুল প্রমাণ করতে বেশিক্ষণ সময় নেয়নি নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার। বিশেষ করে ফিন অ্যালেন শুরুর দিকে ছিলেন বিধ্বংসী। ইনিংসের ৩.৫ ওভারেই দলের পঞ্চাশ রানের কোটা পূরণ করে।
পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে জশ হ্যাজেল উডের বলে ফিন অ্যালেন মাত্র ১৬ বলে ৪২ করে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে কিছুটা ধীর হয় নিউজিল্যান্ডের রানের গতি। ফিন অ্যালেনের আউট হওয়ার পরের দুই ওভারে মাত্র ৯ রান আসলেও ৬ ওভারে এক উইকেটে ৬৫ রান করে পাওয়ারপ্লে শেষ করে কিউইরা। এরপর অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও শুরু হয় ডেভন কনওয়ে শো।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে সাথে নিয়ে ৫৩ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। কিউই অধিনায়ক ব্যাট হাতে ২৩ বলে সমান রান করে আউট হয়ে যান। এরপর গ্লেন ফিলিপস উইকেটে আসলে তিনিও বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি ডেভন কনওয়েকে। ১০ বলে ১২ রান করে জশ হ্যাজেলউডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি।
জিমি নিশাম ও ডেভন কনওয়ে শেষ চার ওভারে ৪৮ রান তুললে ২০ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ২০০ রানের চূড়ায় পৌঁছায় নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ। ডেভন কনওয়ে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র আট রান দূরে ৫৮ বলে ৯২ করে অপরাজিত থাকেন। জিমি নিশাম ১৩ বলে করেন ২৬ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুইটি উইকেট নেন পেসার জশ হ্যাজেলউড।
২০১ রানের জবাব দিতে নেমে নিউজিল্যান্ডের ঠিক বিপরীত শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই ডেভিড ওয়ার্নার, অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও মিচেল মার্শের উইকেট তুলে নেয় নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। পাওয়ারপ্লে শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান দাঁড়ায় তিন উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান।
এরপর দুই অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোয়িনিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করলেও দলীয় ৫০ রানে গ্লেন ফিলিপসের অতিমানবীয় ক্যাচের শিকার হয়ে মার্কাস স্টোয়িনিস সাজঘরে ফিরে যান।
শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ১৩৯ রান, হাতে ছিল ছয় উইকেট। তবে শুরু থেকেই চাপে পড়া অজিরা আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। এক প্রান্তে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল চেষ্টা করে গেলেও অপর প্রান্ত থেকে যথাযথ সাহায্য না পাওয়ায় তা হারের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ১১১ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও পেসার টিম সাউদি।
সিডনিতে এদিন ফিন অ্যালেনের দুরন্ত শুরুর পর হাত থেকে ফসকে যাওয়া ম্যাচে আর কখনোই ফিরতে পারেনি অ্যারন ফিঞ্চরা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অজিদের পেছনে ফেলে ম্যাচ জিতে নেয় কেইন উইলিয়ামসন-ডেভন কনওয়েরা। এই গ্রুপের ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান কিছুক্ষনের মধ্যেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে। গ্রুপ- ১ এর বাকি দুই দল হলো আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা।