কাঁটা তারের বৈরীতা আবার তুঙ্গে!

কালে ভদ্রে এশিয়া কাপ কিংবা আইসিসির ইভেন্টে দু’দলকে একসঙ্গে মাঠে দেখা গেলেও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয় না প্রায় এক দশক ধরে। তবে এত কম ম্যাচ হওয়া স্বত্ত্বেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের জৌলুশের রেশ কিন্তু এতটুকুও কমেনি। দুই দেশের সমর্থকদেরই এ ম্যাচ নিয়ে থাকে আলাদা আগ্রহ। সে আগ্রহের বীজ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশেও। 

রাজনৈতিক বৈরিতায় ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ নতুন কিছু নয়। বরং সেটা যুগের পর যুগ ধরেই চলে আসছে। সময় যত গড়িয়েছে সে বৈরিতার তীব্রতা বেড়েছে। তবে কাঁটা তারের মাঝে যতই বিভাজন থাকুক, দুই দেশের ক্রিকেটীয় লড়াইয়ের চিত্র কিন্তু এক সময় ঠিকই নিয়মিত দেখা যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে আইসিসি আর এসিসি’র কোনো ইভেন্ট ছাড়া এ দুটি দলকে কখনোই একে অপরের মুখোমুখি হতে দেখা যায় না। দু’দল শেষ বারের মত নিজেদের মধ্যে টেস্ট খেলেছিল সেই ১৫ বছর আগে, ২০০৭ সালে। 

এরপর থেকে কালে ভদ্রে এশিয়া কাপ কিংবা আইসিসির ইভেন্টে দু’দলকে একসঙ্গে মাঠে দেখা গেলেও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয় না প্রায় এক দশক ধরে। তবে এত কম ম্যাচ হওয়া স্বত্ত্বেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের জৌলুশের রেশ কিন্তু এতটুকুও কমেনি। দুই দেশের সমর্থকদেরই এ ম্যাচ নিয়ে থাকে আলাদা আগ্রহ। সে আগ্রহের বীজ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশেও। 

যা হোক, নতুন করে ভারত-পাকিস্তান লড়াই আলোচনায় এসেছে বিসিসিআই এর একটি সিদ্ধান্তের পর থেকে। বিসিসিআই সচিব জয় শাহ সরাসরিই জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী বছর পাকিস্তানে হতে যাওয়া এশিয়া কাপে ভারত অংশ নেবে না। 

আর ভারতের এ সিদ্ধান্তের পরই চটেছেন পাকিস্তানের বেশ কিছু ক্রিকেট গ্রেট। ওয়াকার ইউনুস ভারতের এ সিদ্ধান্তের পর বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না এটা বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্ত। মিসবাহ যেমনটি বলেছে আমারও ঠিক তেমনই মনে হয়। এটি আসলে উপর মহল থেকে এসেছে। আর ভারত একটা সিম্পল পলিসি নিয়ন্ত্রণ করে। সেটি হলো, তাঁরা আমাদের সাথে খেলতে চায় না। তাঁরা পাকিস্তান ক্রিকেটকে ধ্বংস করতে চায়। এই মুহূর্তে অবশ্যই পাকিস্তানের নিজস্ব অবস্থান নেওয়া উচিৎ। এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পাশে আছি। এখন আমি দেখব, পরবর্তী দিনগুলোতে কী হয়। আমি অপেক্ষায় আছি।’

ওয়াকার ইউনুসের সাথে সুর মিলিয়ে আরেক কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম বলেছেন, ‘পাকিস্তান কিভাবে ক্রিকেট খেলবে তা তো ভারত নির্ধারণ করতে পারে না। এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। জয় শাহের অবশ্যই সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে পাকিস্তান বোর্ডের সাথে মিটিং করা উচিৎ ছিল। এতো স্বেচ্ছাচারিতা মেনে নেওয়া যায় না।’

আরেক ক্রিকেটার সালমান বাট তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে আবার আইসিসির শক্তি আর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলেই কি আইসিসির কোনো অস্তিত্ব আছে? মানে তাঁরা কি আসলেই নিরপেক্ষ কেউ? ভারতের কারণে তাঁরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়। এটাই কি তাদের চুপ থাকার কারণ? এসিসি থেকে জয় শাহর উপস্থিতিতেই পাকিস্তানকে আয়োজক দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তাহলে সেই পাকিস্তানে ভারতের আসতে সমস্যা কোথায়?’

বিসিসিআইয়ের এমন সিদ্ধান্তের পর অবশ্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও চুপ থাকেনি। তাঁরাও কড়া সিদ্ধান্তের আভাস দিয়ে রেখেছে। ভারত ২০২৩ এর এশিয়া কাপে না গেলে পাকিস্তানও ২০২৩ বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে না- এমন আগাম হুমকিই দিয়ে রেখেছে পিসিবি। এখন এই বিভাজন, বৈরীতার সুর কতদূর গড়ায় সেটিই দেখার বিষয়। 

তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন বাকযুদ্ধ আবার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে একটা অন্যরকম মাত্রাই যোগ করছে। আগামী ২৩ অক্টোবর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একে অপরের মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। সেই ম্যাচের আগেই জমে উঠেছে কথার লড়াই। তাই এ ম্যাচ নিয়ে কাঁটা তারের বেড়ায় বিভাজিত দুই প্রতিবেশি দেশের উত্তেজনা পারদ তো নিশ্চিতভাবেই তুঙ্গে থাকবে। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...