ক্যাসিনো বিতর্কে দুই পিসিবি কর্তা

এশিয়া কাপ নিয়ে আলোচনা যখন ঝড় তুলছে চায়ের কাপে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) দুই কর্মকর্তা তখন আলোচনার নতুন শাখা সৃষ্টি করলেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায় দুই পাকিস্তানি কর্মকর্তা কলম্বোতে একটি ক্যাসিনোতে ঘুরছেন। জানা গিয়েছে তাঁরা হলেন পাকিস্তান দলের মিডিয়া ম্যানেজার উমর ফারুখ কালসন এবং জেনারেল ম্যানেজার আদনান আলী।

এসব ভাইরাল হওয়ায় পর থেকেই সমালোচনা আর ব্যঙ্গ বিদ্রুপ ভেসে আসছে পিসিবির দিকে। শুধু নৈতিকতার ব্যাপারও নয়; এই দুইজনের আচরণ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) অ্যান্টি-করাপশন কোডের নীতিমালাও ভঙ্গ করেছে এমন শঙ্কাও রয়েছে।

সমালোচকরা একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট চলাকালীন এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত পিসিবি কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব এবং প্রজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আর এই ঘটনাটি পিসিবি কর্মকর্তাদের এশিয়া কাপের সময় অতিরিক্ত কলম্বো ভ্রমণকেও লাইমলাইটে নিয়ে এসেছে।

এসব কিছুই এখন তদন্ত করে দেখবে পাকিস্তানের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পিসিবির অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানিয়েছে, দেশে ফিরে আসার পরে এই দুই কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনা হতে পারে।

যদিও ইতোমধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য জানিয়েছেন আদনান আলী এবং উমর ফারুখ। তাদের ভাষ্যমতে রাতের খাবার খেতে ক্যাসিনোতে গিয়েছেন তাঁরা। যদিও এমন যুক্তিতে মন গলেনি কারোই; ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটার সবাই একহাত নিয়েছেন পিসিব কর্তাদের।

লেখক ওমর আলাভি বলেন, ‘তাঁরা ক্যাসিনোতে খেতে গিয়েছেন এটা খুব বেশি মানুষ মানতে পারবে না। এটা মানে আসলে একটু কঠিনই।’ অন্যদিকে সাবেক ব্যাটার মহসিন খান এই ব্যাপারে একই সাথে বিস্মিত এবং হতাশ হয়েছেন।

ম্যাচ চলাকালীন জুয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন জায়গাগুলো ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া আছে আইসিসির পক্ষ থেকে। কিন্তু আদনান আলী, ওমর ফারুখরা সেই নিয়ম ভঙ্গ করে ফেলেছেন।

তবে এমন ঘটনা পাকিস্তান ক্রিকেটে এবারি প্রথম নয়। এর আগে মঈন খানের মত কিংবদন্তিও জড়িয়ে পড়েছিলেন ক্যাসিনো বিতর্কে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কথা, সেসময় পাকিস্তান দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ক্রাইস্টচার্চের একটি ক্যাসিনোতে মঈন খান এবং তাঁর স্ত্রীকে দেখা যায়। সেই ঘটনার পরে দ্রুততম সময়ে তাঁকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনা হয়।

সেসময়ও ক্যাসিনোতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছেন এমন দাবি করেছিলেন মঈন খান। কিন্তু তৎকালীন পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান স্পষ্ট করেছিলেন যে মঈনের কাজ জাতীয় দল এবং পিসিবি উভয় ক্ষেত্রেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে।

পিসিব বস সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে সব কর্মকর্তা এবং খেলোয়াড়দের বোর্ড এবং আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কোড মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাতে অবশ্য লাভ হয়নি, আট বছর আগের ঘটনা আবারো পূন:প্রচার হলো পিসিবি কর্তাদের কল্যাণে। এখন দেখার বিষয়, এবার পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link