আফ্রিদি কি আদৌ ফিট?

ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচে পাকিস্তানের হারের পর নানাদিক থেকে পাকিস্তান দলের দুর্বলতা নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শাহীন আফ্রিদিকে নিয়েও। শাহীন আফ্রিদি, যিনি গত দুই বছর ধরে পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বোলিং অস্ত্র বলে বিবেচিত হন। সেই তিনি তাঁর প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে আগের সেই জৌলুস দেখাতে পারেননি বলে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

কারণ ভারতের বিপক্ষে তাঁর শেষ দুই ওভারে এই ফাস্ট বোলার ২৫ রান দিয়েছেন। রোমাঞ্চকর ম্যাচটিতে যেখানে ভারতের বিপক্ষে আফ্রিদিকে তুরুপের তাস ভাবা হচ্ছিল, সেখানে তিনি নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। নিজের শেষ ওভারে তিনি ১৯ টি রান খরচ করেন। অথচ গত এশিয়া কাপে শাহীন আফ্রিদি ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ।

পাকিস্তানের পেস বোলিংয়ের কাণ্ডারি শাহিন আফ্রিদি গত আগস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে চোট পেয়েছিলেন। সেই চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকেও ছিটকে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে কাটানোর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে ফিট হয়ে ফিরে এসেছেন। অথচ প্রত্যাবর্তনের মঞ্চে নিজের পছন্দের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে উইকেট শূন্য ছিলেন, রানও দিয়েছেন দেদারছে। চার ওভারে ৩৪ টি রান ব্যয় করেছেন তিনি। যে পারফরমেন্স মোটেও শাহীনসুলভ বলে মনে করছেন না ভক্তরা।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) শাহীন শাহ আফ্রিদিকে ইনজুরি সেরে ফিট হয়েছেন বলেই রায় দিয়েছিল। টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছিল বোর্ডের মেডিকেল বোর্ড, সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।

পাকিস্তানের ফাস্ট বোলিং গ্রেট ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, সাবেক অধিনায়ক মিসবাহউলহক এবং লাহোর কালান্দার্সের প্রধান কোচ আকিব জাভেদ সকলেই মনে করছেন যে মেলবোর্নে রোববার ভারতের বিপক্ষে খেলার সময় শাহীনের ম্যাচ ফিটনেস এবং অনুশীলনের ঘাটতি দেখা গিয়েছে।

ওয়াকার ইউনিস বলেন, ‘আমরা যেই শাহীনকে চিনি, এই ম্যাচে তিনি ছিলেন না। তাঁর ছন্দ সেখানে ছিল না। তাঁকে কি খুব তাড়াতাড়ি দলে নেওয়া হয়েছে এবং সে কি এত বড় টুর্নামেন্টের জন্য আদৌ ফিট?’

ওয়াসিম আকরামও ওয়াকার ইউনিসের সাথে একমত হয়েছেন। তিনি শাহীন প্রসঙ্গে বলেন, ‘তার বোলিংয়ে আগের সেই ব্যাপারটা ছিল বলে মনে হয়নি। এটা বোধগম্য, কারণ হাঁটুর ইনজুরি থেকে ফিরে আসা যে কোনো ফাস্ট বোলার প্রথমে ফ্ল্যাট আউট হওয়ার বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। দেখা যাক সে কত তাড়াতাড়ি পুরো ফিটনেস অর্জন করে।’

আকিব জাভেদ লাহোর কালান্দার্স ফ্র্যাঞ্চাইজিতে শাহীনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তিনিও বলেছেন যে এতে কোন সন্দেহ নেই যে শাহীন ভারতের বিপক্ষে তার স্বাভাবিক রূপে ছিলেন না। তাঁর মতে, ‘সে সত্যিই তার পিঠ বাঁকানো নিয়ে চিন্তিত এবং অপারগ ছিল। অবশ্য কেউ যখন হাঁটুর চোট থেকে ফিরে আসে তখন এটাই স্বাভাবিক। আমি শুধু ভাবছি যে শাহীন আফ্রিদিকে দলের প্রয়োজনে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছে কি না।’

পাকিস্তানের এককালের দীর্ঘদিনের অধিনায়ক মিসবাহ উল হক মনে করেন একজন খেলোয়াড় শতভাগ ফিট হলে তবেই তাঁকে মাঠে নামানো উচিত। শাহীন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কম অনুশীলন করা একজন বোলারকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে জুয়া খেলাটা ঝুঁকিপূর্ণ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link