চলতি বছরে এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। এবারের আসরের মূল আয়োজক দেশ পাকিস্তান আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও এখন পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে এক সুতোয় বাঁধতে পারেনি।
পাকিস্তানে এশিয়া কাপ খেলার ব্যাপারে প্রথম আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। এরপর তার সমাধান হিসেবে ‘হাইব্রিড’ মডেলের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেই মডেলে আবার আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা। এমতাবস্থায় পাকিস্তান থেকে অন্যত্র এশিয়া কাপ আয়োজনের কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।
তবে এমন কিছু ঘটলে যে পাকিস্তানও ছাড় দেবে না, সেটিরই একটা আভাস দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তাদের সাফ কথা, পাকিস্তান থেকে অন্যত্র এশিয়া কাপ আয়োজন করলে তাঁরা এবারের এশিয়া কাপ বয়কট করবে। এমনকি এসিসি থেকেও বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি।
হাইব্রিড মডেলে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার মূল আপত্তির জায়গাটা হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গরম আবহাওয়া। বিশ্বকাপের আগে তাঁরা ক্রিকেটারদের ভ্রমণজনিত কোনো ঝুঁকিতে ফেলতে চায় না। কিন্তু পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি এমন কারণকে এক প্রকার হাস্যকর বলেই দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ ও ২০২২ এশিয়া কাপও সংযুক্ত আরব আমিরাতে হয়েছিল। ঐ দুই আসরের সময়ের মতো এবারেও সেপ্টেম্বরে আমরা আয়োজন করার ব্যাপারে আশাবাদী। এখন গত বছর একই আবহাওয়ায় এশিয়া কাপ খেলতে পারলে এখন নয় কেন?’
নাজাম শেঠি এরপর আইপিএলের কথা টেনে বলেন, ‘২০২০ এর আইপিএল তো এই সেপ্টেম্বর, অক্টোবরেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে হয়েছিল। তাহলে এবার সমস্যা কোথায়।’
গুঞ্জন আছে, পাকিস্তান থেকে সরিয়ে শ্রীলঙ্কার মাটিতে গড়াতে পারে এবারের এশিয়া কাপ। এ নিয়ে নাকি রীতিমত বিসিসিআইয়ের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড। আর এতেই খানিকটা বিস্ময় প্রকাশ করে নাজাম শেঠি বলেন, ‘আমি খুব অবাক হয়েছি। এই ফেব্রুয়ারিতেই আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ হওয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। তাঁরা সবাই পাকিস্তানকেই আয়োজক দেশ হিসেবে রাখতে সম্মত হয়েছিল।’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এবারের এশিয়া কাপের ভাগ্য তাহলে কোন দিকে মোড় নেবে? শেষ খবর বলছে, পিসিবি তাদের প্রস্তাবে অটল। তাদের আয়োজক না করা হলে তাঁরা এসিসি থেকেই বেরিয়ে আসতে পারে। আর পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি এরই মধ্যে এশিয়া কাপের বিকল্প হিসেবে পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করার ব্যাপারে ভাবছেন।
অন্যদিকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাও বসে নেই। পাকিস্তান বাদে তাঁরা ছয় জাতি টুর্নামেন্ট আয়োজনের ব্যাপারে প্রাথমিক পরিকল্পনায় এগিয়েছে। এখন দেখার পালা, এশিয়া কাপ আয়োজনের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত আসে কিংবা এশিয়া কাপ না হলে এসিসিতে কেমন প্রভাব পড়বে, পাকিস্তান থাকবে কি থাকবে না- এমন নানা সম্ভাবনা, শঙ্কায় ঝুলে আছে এই এক এশিয়া কাপ।