বাংলাদেশে তো বটেই, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ বিশ্বজুড়েই খুব আলোচিত। অনেক সময়ই এই লড়াইটা স্রেফ মাঠে সীমাবদ্ধ থাকে না, পরিণত হয় রেষারেষিতে। যদিও, ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার কিংবদন্তিদের বন্ধুত্বতার গল্প নিয়ে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ করা যাবে চাইলে।
তেমনই এক বন্ধু জুটি ছিলেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও পেলে। সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে? এই প্রশ্নে বরাবরই আসে এই দু’টি নাম। তবে, তারা নিজেরা কখনোই নিজেদের মধ্যে এই তুলনাটা পছন্দ করেন না।
বয়সের বড় পার্থক্য থাকলেও তারা ছিলেন আত্মার আত্মীয়। ফুটবলের প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছাপিয়ে তাঁদের কাছে সেই বন্ধুত্বটাই ছিল বড় ব্যাপার।
ফুটবলের ঈশ্বর আর্জেন্টাইন গ্রেট ম্যারাডোনা চলে গেছেন জীবন নদীর ওপারে। তবুও টিকে আছে সেই বন্ধুত্ব। বন্ধুর বিদায়ে পেলে মুষড়ে পড়লেও প্রতিটা মুহূর্ত খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁর প্রিয় ডিয়েগোকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পেলের পোস্ট যেন সেই কথাই বলছে।
তুমি চলে গেলে সাত দিন হয়ে গেল। অনেক মানুষ আমাদের মাঝে সারা জীবন তুলনা করতে ভালোবাসে। তুমি একজন প্রতিভাধর ফুটবলার ছিলে যে, পৃথিবীকে মুগ্ধ করেছিল। পায়ে বল নিয়ে ছুটে চলা একজন জাদুকর। একজন সত্যিকারের কিংবদন্তি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি আমার জন্য, তুমি সবসময় একজন বড় বন্ধু হয়ে থাকবে, একজন বড় হৃদয়ের অধিকারী হয়ে থাকবে।
আজ জানলাম পৃথিবী অনেক ভালো হতো যদি আমরা একে অপরের সাথে কম তুলনা করে একে অপরকে বেশি প্রশংসা করতে পারতাম। তাই, আমি বলতে চাই যে – তুমি একজন অতুলনীয় হয়ে ছিলে।
তোমার গতিপথ ছিল সততা দিয়ে পরিপূর্ণ। তোমার অনন্য আর অভিনব ধারা আমাদের যে শিক্ষা দিয়ে গেছে, তাতে দিক্ষিত হয়ে আমা বলতে চাই, ‘তোমাকে ভালবাসি আমি।’ বলার আরো অনেক কিছুই আছে, এর চেয়ে অনেক বেশি কিছু।
তোমার দ্রুত চলে যাওয়া আমাকে আমাকে আর সরাসরি বলতে দেবে না। তাই আমি শুধু লিখি, আমি তোমাকে ভালোবাসি, ডিয়েগো!
আমার দুর্দান্ত অন্তরঙ্গ বন্ধু, আমাদের সমস্ত যাত্রার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। একদিন স্বর্গে আমরা একই দলে একসাথে খেলবো। আর বলে রাখি, এটা প্রথমবারের মত আমি কোন গোল উদযাপন ছাড়াই বাতাসে ঘুষি মারতে যাচ্ছি। কারণ আমি তোমাকে অবশেষে আরেকবার আলিঙ্গন দিতে পারি।