ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট হলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। যেই লিগে খেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন বিশ্বের নামি দামি ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটাররা বেশ ভালো দামও পেয়ে থাকেন এই লিগ থেকে।
আবার এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও হয়। অনেকেই বলেন আইপিএল কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট হল টাকার খেলা। তবে, যারা এই আসরগুলো খেলে বিস্তর অর্থ আয় করেন, তাঁরা যোগ্য বলেই পান। আইপিএলে যারা কমপক্ষে ১০০ কোটি রুপি আয় করেছেন – তাঁদের তালিকা দেখলেই বিষয়টা পরিস্কার হয়ে যাবে
- এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা)
এবি ডি ভিলিয়ার্স এখন পর্যন্ত আইপিএলে পঞ্চম সর্বোচ্চ আয় করা খেলোয়াড়। তিনি আইপিএল থেকে ১৩ আসরে মোট আয় করেছেন ১০২ কোটি ৫১ লাখ ৬৫ হাজার রুপি। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের (বর্তমান দিল্লী ক্যাপিটালস) হয়ে ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরেই অভিষেক হয় এবি ডি ভিলিয়ার্সের। এরপর ২০১১ সালে তাকে কিনে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। এরপর টানা ১০ আসর ব্যাঙ্গালুরুর হয়েই খেলে আসছেন তিনি।
আইপিএলে ডিভিলিয়ার্স তার ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য অনেক ম্যাচ একা হাতে জিতিয়েছেন। দলের জন্য এই ৩৬০ ডিগ্রি খ্যাত এবি ডি ভিলিয়ার্স বড় একটি সম্পদ। দূর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের সাথে সাথে তিনি উইকেটকিপিংও করে থাকেন। প্রায় দীর্ঘদিন ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে খেলা এই ব্যাটসম্যান তাকিয়ে আছেন বিরাট কোহলির নেতৃত্বে আইপিএল ট্রফি জয়ের দিকে।
- সুরেশ রায়না (ভারত)
আইপিএলে সর্বোচ্চ আয়ের দিক থেকে চার নম্বরে আছেন সুরেশ রায়না। যিনি এখন পর্যন্ত ১৩ টি আসর থেকে মোট আয় করেছেন ১১০ কোটি ৭৪ লাখ রুপি। চেন্নাই সুপার কিংসের সেরা পারফর্মারদের একজন এই সুরেশ রায়না। যাকে আইপিএলে তার দূর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য মিস্টার আইপিএল নাম দেওয়া হয়।
আইপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিন নম্বরে আছেন রায়না। ব্যক্তিগত কারণে অবশ্য গত আসরে তিনি খেলতে পারেননি। ২০১৬ এবং ২০১৭ আসরে তিনি গুজরাট লায়ন্সের হয়ে অধিনায়কত্ব করেন। এর বাদে, আইপিএলের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চেন্নাই সুপার কিংস দলেই আছেন।
- বিরাট কোহলি (ভারত)
আইপিএলে মোট আয়ের দিক দিয়ে তিন নম্বর অবস্থানে আছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ১৩ টি আসরে ১৪৩ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় করেছেন। তিনি আইপিএলের একমাত্র খেলোয়াড় যিনি উদ্বোধনী আসর থেকেই সবকয়টি আসরে একটি নির্দিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু) হয়ে খেলেছেন।
আইপিএলে ব্যাট হাতে দূর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও এখন পর্যন্ত আইপিএল ট্রফি হাতে নেওয়ার ইচ্ছেটা তার অধরাই রয়ে গেলো। ভারতীয় ক্রিকেট দলে তিনি একজন সেরা ম্যাচজয়ী খেলোয়াড়। এটা মানতে কষ্ট হলেও সত্যি যে তার মতো একজন খেলোয়াড় এখনো ব্যাঙ্গালুরুকে ট্রফি জেতাতে পারেননি। ২০০৯, ২০১১ এবং ২০১৬ আসরে ফাইনালে গেলেও একদম কাছ থেকে হার নিয়ে ফিরেছেন।
- রোহিত শর্মা (ভারত)
আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় করা খেলোয়াড় হলেন রোহিত শর্মা। ১৩ আসরে মোট ১৪৬ কোটি ৬০ লাখ রুপি আয় করেছেন তিনি। ডেকান চার্জারসের হয়ে ২০০৮ সালে তিনি আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু করেন৷ ২০১১ সালে তাঁকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স কিনে নেয় এবং ২০১৩ সালে তিনি মুম্বাইয়ের অধিনায়কের দায়িত্ব পান।
আইপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক হচ্ছেন রোহিত শর্মা। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয় তিনি পাঁচবার শিরোপা জিতেছেন। এছাড়া অ্যাডাম গিলক্রিস্টের অধিনায়কত্বে ডেকান চার্জারসেও তিনি শিরোপা জয় করেন৷ যখন থেকেই রোহিত ওপেনার হিসেবে খেলা শুরু করেছেন, তিনি নিজের সেরা ছন্দেই ছিলেন।
- মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)
আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড় হলেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ১৩ আসরে তিনি মোট আয় করেছেন ১৫২ কোটি ৮৪ লাখ রুপি। ২০০৮ সালের উদ্ভোধনী আসর থেকে ২০১৫ পর্যন্ত চেন্নাই সুপার কিংসের সাথে ছিলেন ধোনি। এরপর ২০১৬ এবং ২০১৭ তে রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টসের হয়ে খেলেন। ২০১৮ সালে চেন্নাই আইপিএলে প্রত্যাবর্তন করলে ধোনিও ফিরে যান চেন্নাইতে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন। এখন শুধুমাত্র আইপিএল খেলে থাকেন। গত দুই আসরে ব্যাট হাতে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি তিনি। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে তিনি তিনবার শিরোপা জয় করেন। পরিসংখ্যান বলে তিনি আইপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় সফল অধিনায়ক।