দামে কম, মানে ভাল

জমজমাট এক মেগা নিলামে ব্যস্ত সময় কাটালো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১০ টি ফ্র্যাঞ্চাইজি। আর নিলাম অনুষ্ঠানটা কেবল অর্থের লড়াই না, এখানে টাকার সাথে সাথে ‍বুদ্ধিমত্তা কিংবা পরিকল্পনা – অনেক রকম পরীক্ষাই হয়।

দলগুলো তাঁদের পছন্দের খেলোয়াড়দের নিজেদের শিবিরে নিয়ে আসতে খরচ করতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি। অন্যদিকে বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটারদের দল না পাওয়ার খবরও খানিকটা বিচলিত করেছে ভক্ত সমর্থকদের। তবে স্বল্প দামে ভাল মানের খেলোয়াড়দেরও ভেড়াতে সক্ষম হয়েছে বেশ কিছু ফ্রাঞ্চাইজি। সেই সব খেলোয়াড়দের নিয়েই হবে আজকের আলোচনা।

  • শাহবাজ নাদিম (ভারত)

ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ রুপিতে শাহবাজ নাদিমকে দলে ভিড়িয়েছে নবাগত ফ্রাঞ্চাইজি লক্ষনৌ সুপার জায়েন্ট। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে বেশ মিতব্যায়ী একজন বোলার নাদিম। তিনি এখন পর্যন্ত সব ধরণের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১১৮টি উইকেট বাগিয়েছেন তিনি।

তাছাড়া ৬.৮১ ইকোনমি রেট নিয়মিত বজায় রাখতে পারেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিচারে এই ধরণের ইকোনমিকাল বোলিং বেশ কার্য্যকর। নতুন ফ্রাঞ্চাইজির জন্যে শাহবাজ নাদিম দারুণ এক স্ট্রাইক বোলার প্রমাণিত হতে পারেন। অন্তত তাঁর পারিশ্রমিক বিবেচনায় তিনি প্রত্যাশার বেশি ভাল পারফর্ম করার সামর্থ্য রাখেন।

  • মাহিশ থিকশানা (শ্রীলঙ্কা)

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের স্পিন বোলিং দিয়ে নজর কেড়েছেন মাহিশ থিকশানা। সাত ম্যাচে নিয়েছিলেন আট উইকেট। ইকোনমি রেটটা ছিলো ছয়ের নিচে। এমন দূর্দান্ত বোলিং পারফর্মেন্সের বদৌলতে আইপিএলে ২০২২ আসরে প্রথম বারের মতো দল পেলেন মাহিশ থিকশানা।

তরুণ এই ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দল চেন্নাই সুপার কিংস। মাত্র ৭০ লাখ রুপিতে তাঁকে দলে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নরা। মাত্র ২১ বছর বয়সী এই তরুণ বোলারকে অনেকেই ভাবছেন আগামী দিনের অজন্থা মেন্ডিস হিসেবে। সেই ভাবনা সত্যি করতে আইপিএলের মতো বড় মঞ্চ কাজে লাগানোর জন্যে নিশ্চয়ই মুখিয়ে রয়েছেন মাহিশ থিকশানা।

  • ডেভন কনওয়ে (নিউজিল্যান্ড)

মাত্র এক কোটি রুপি ভিত্তি মূল্য ছিলো নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটার ডেভন কনওয়ের। সেই ভিত্তিমূল্যেই তাঁকে দলে নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। তিনি ২০২১ এ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছিলেন। ইনিংস বিপর্যয়ের মুহূর্তে তিনি দলের হাল ধরে রান তোলাতে বেশ পটু।

তাছাড়া তাঁর মধ্যে বেশ সম্ভাবনাও রয়েছে এই ফরম্যাটে ভাল করার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর মাঝে। আন্তর্জাতিক পর্যায় ছাড়াও টি-টোয়েন্টি খেলার বেশ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ১১৫ ম্যাচে ৪৩ এর ঘরে রয়েছে তাঁর গড়। এমন একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে ভাল পারফর্মেন্সের প্রত্যাশা করতেই পারে চেন্নাই। নিশ্চয়ই তিনি নিরাশ করবেন না। তাছাড়া উইকেট রক্ষকের একটা বিকল্পও হতে পারেন কনওয়ে।

  • জেসন রয় (ইংল্যান্ড)

২০২১ সালের আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অংশ ছিলেন জেসন রয়। সেই মৌসুমে তিনি প্রায় ১২৪ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন। গেলো বছর হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ছিলেন ছন্দে। প্রায় ১৩৮ স্ট্রাইকরেটে রান তুলেছেন তিনি। তাছাড়া পাকিস্তান সুপার লিগে রয়েছেন তিনি ভয়ংকর ফর্মে।

সেখানে ব্যাট করছেন ২০০ স্ট্রাইকরেটে। এমন একজন খেলোয়াড়কে গুজরাট টাইটান্স দলে ভিড়িয়েছে মাত্র দুই কোটি রুপিতে। প্রত্যাশার তুলনায় দাম কম পেলেও হয়ত ব্যাট হাতে জেসন রয় নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখবেন আইপিএলের পঞ্চদশ আসরে।

  • মুস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস আক্রমণের অন্যতম সেনানী মুস্তাফিজুর রহমান রয়েছেন দারুণ ফর্মে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মুস্তাফিজুর গত বছর আইপিএল খেলেছিলেন রাজস্থান রয়েলসের হয়ে। কিন্তু এবার তাঁকে দলে নেয়নি দলটি। যদিও তিনি ১৪ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৪ উইকেট।

ইকোনমি রেট ছিলো আটের ঘরে। এটা সত্য যে মুস্তাফিজুর রহমান ২০১৬ এর মতো আর দুর্ভেদ্য নেই। তবে তিনি তাঁর ঝুলিতে যুক্ত করেছেন নতুন ভেরিয়েশন। সেই ভেরিয়েশনের জোড়ে তিনি দিল্লি ক্যাপিটালসের জন্যে একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন। দলটি তাঁকে কিনেছে দুই কোটি রুপির ভিত্তি মূল্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link