মেজর লিগ ক্রিকেট, আমেরিকার ক্রিকেট স্বপ্নের উড়ান

ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দৌরাত্ম যেন থামছেই না। গত বছরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আরব আমিরাতে শুরু হয়েছিল দুইটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট; আর এবার যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রথমবারের মত আয়োজিত হবে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট - মেজর লিগ ক্রিকেট(এমএলসি)।

ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দৌরাত্ম যেন থামছেই না। গত বছরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আরব আমিরাতে শুরু হয়েছিল দুইটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট; আর এবার যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রথমবারের মত আয়োজিত হবে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট – মেজর লিগ ক্রিকেট(এমএলসি)।

চলতি মাসে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে মেজর লিগ ক্রিকেটের প্রথম আসর, তবে অন্যান্য টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের সঙ্গে এটির একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। আইপিএল সব প্রায় সব টি-টোয়েন্টি লিগ শুরু হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিত দেশগুলোতে।

অথচ, এমএলসি আমেরিকা ভিত্তিক টুর্নামেন্ট, কিন্তু আমেরিকায় ক্রিকেট ততটা পরিচিত নয়। তাই স্থানীয়দের কাছে ব্যাট-বলের খেলাটা জনপ্রিয় করে তোলাই এই টুর্নামেন্টের অন্যতম লক্ষ্য।

যে দেশে ক্রিকেট অপ্রচলিত খেলা সেখানে এমন একটি টুর্নামেন্ট করা যে কঠিন সেটা মানছেন এমএলসির ডিরেক্টর জাস্টিন গিল। এর আগে আট বছর ধরে আইপিএলের মত টুর্নামেন্টে কাজ করা অভিজ্ঞ ক্রিকেট প্রশাসক গিল বলেন, ‘এটা আমার করা সবচেয়ে কঠিন কাজ।’

যে দেশে উন্নতমানের ক্রিকেট স্টেডিয়ামই আছে হাতেগোনা, সেখানে ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজন কঠিন হবে সেটা তো বোঝাই যায়। তবে দূরদর্শী ব্যবসায়ী, আইপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিদের কারণে জাস্টিন গিলের কাজ কিছুটা সহজ হয়েছে।

১২০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ফান্ড হিসেবে ইতোমধ্যে পেয়েছে টুর্নামেন্ট কতৃপক্ষ। এছাড়া ৩০ জনের বেশি হাই প্রোফাইল খেলোয়াড়ের সঙ্গেও চুক্তি করেছে দলগুলো। তাঁদের পারিশ্রমিকও অবশ্য চোখ কপালে তোলার মত, মাত্র আড়াই সপ্তাহ খেলেই তাঁরা পাবেন ১৭৫০০০ ডলারের বেশি।

২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে যৌথভাবে আয়োজক হিসেবে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। স্বাভাবিকভাবেই সেসময় ক্রিকেট জনপ্রিয় হয়ে উঠবে স্থানীয়, এমন চিন্তা করেই এমএলসি-তে কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।

জাস্টিন গিল বলেন, ‘এমএলসি ইউএসএ ক্রিকেট কতৃক নিয়ন্ত্রিত নয়। বরং দূরদর্শী কয়েকজন ব্যবসায়ী ব্যক্তিগতভাবে এই টুর্নামেন্টে বিনিয়োগ করেছে।’

আপাতত দুইটি মাঠেই সব ম্যাচ আয়োজন করা হবে। তবে সময়ের সাথে সাথে সব দলের নিজস্ব স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা আছে আয়োজকদের, সেসময় থেকে হোম এন্ড এওয়ে ভিত্তিতে সূচি তৈরি করা হবে। তবে দুইটি স্টেডিয়ামেই মানসম্পন্ন খেলা উপহার দেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী গিল।

নতুন টুর্নামেন্টকে ঘিরে প্রথমেই যে প্রশ্ন উঠে সেটি হলো দর্শক কেমন হবে। সেসব নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নন জাস্টিন গিল। তাঁর মতে পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড় দলে নেয়ায় পুরো ক্রিকেট বিশ্বের নজর থাকবে এমএলসির দিকে।

আবার ভারতীয় ফ্রাঞ্চাইজি থাকায় ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদেরও আকৃষ্ট করতে পারবে টুর্নামেন্টটি। এছাড়া রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিতে পারলে পরবর্তীতে দর্শকের অভাব হবেে না বলেই বিশ্বাস গিলের।

আমেরিকার মাটিতেও ক্রিকেট সম্ভব সেটাই প্রমাণ করেছে এমএলসির এর প্রথম মৌসুম নিয়ে এমন মাতামাতি। তবে ক্রিকেট বিশ্বে আমেরিকানদের আধিপত্য বিস্তারের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হবে কি না সেটা জানা যাবে টুর্নামেন্ট শেষেই; স্থানীয়রা ব্যাট-বলের এই দ্বৈরথকে কিভাবে গ্রহণ করবে সেটার উপর নির্ভর করছে আমেরিকার ক্রিকেট ভবিষ্যৎ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...