সময়ের সাথে ক্রিকেটে বাণিজ্যকীকরণ যেন বেড়েই চলেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বিশ্বায়নে ক্রিকেটের সংজ্ঞাটাই এখন পাল্টে যাওয়ার পথে। অর্থের ঝনঝনানিতে ক্রিকেটাররাও এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাপিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। একই সাথে চলমান লিগগুলোর মাঝেও যেন একটা শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠেছে।
এই যেমন বিপিএল, আইএলটি-টোয়েন্টি শেষ না হতেই শুরু হতে যাচ্ছে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। পাকিস্তানের এই লিগকে ধরা হয় আইপিএলের পর সবচেয়ে জমকালো ইভেন্ট হিসেবে। কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম তো পিএসএলকে মিনি আইপিএল আখ্যাই দিয়েছিলেন। তবে এই সময়ে এসে পিএসএলকে কি দ্বিতীয় সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বলা যায়?
প্রথমত, আগের চেয়ে এই সময়ে এসে প্রতিযোগিতা অনেক বেড়েছে। একই সময়ে চলছে ভিন্ন ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। ফলত, আইপিএল ব্যতিত কোনো লিগই একাধিপত্ত ধরে রাখতে পারছে না। এই যেমন পিএসএলের শুরুর দিনেই হচ্ছে আইএলটি-২০ এর ফাইনাল। আবার বিপিএলের এখন গোটা দশেক ম্যাচ বাকি। সব মিলিয়ে তারকা ক্রিকেটার ভেড়ানোর প্রক্রিয়ায় কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সব লিগই।
তবে পিএসএল দিয়ে আইপিএলের পর পিসিবি যেভাবে জাগরণ শুরু করেছিল, তার কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে এসএ টি-টোয়েন্টি আর আইএলটি-২০ আসার পর। এমনকি দ্বিতীয় সেরা লিগ থেকে পিএসএল তিনে নেমে যাচ্ছে কিনা, সে নিয়েও বিতর্ক আছে।
যেমন, প্রাইজমানির দিক দিয়ে আইপিএলের পরেই এখন এসএ টোয়েন্টির অবস্থান। তারা এবার বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪০ কোটি টাকার কিছু বেশি অর্থ প্রাইজমানি হিসেবে দিয়েছে। যেখানে পিএসএলের অবস্থান চারে। তাদের উপরে রয়েছে বিগব্যাশ। বিগব্যাশে যদিও এক দলে ২ বিদেশি খেলতে পারে বিধায় এটি এখনও বৈশ্বিক ভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি।
তবে, পিএসএলকে এবার টেক্কা দিয়েছে আইএলটি-টোয়েন্টি। প্রথমত, এই লিগে বিদেশির কোনো কোটা নেই। অর্থাৎ, এক দলে ১১ জনই বিদেশি থাকতে পারে। ফলশ্রুতিতে, খুব অল্প সময়েই এই টুর্নামেন্টটি নজর কাড়তে পেরেছে। এ ছাড়া এর আগে যে আইসিসির স্বীকৃতি ছিল না, সেই স্বীকৃতি মিলেছে এবারের আসর থেকে।
এ দিলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল না। এমনকি পিসিবিতেও বিরাজ করছে অস্বস্তিকর পরিবেশ। যার ছাপ পাওয়া গেছে পিএসএলের ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানেই। যেখানে অধিনায়কদের কেউ পরে এসেছিলেম জিন্স-টিশার্ট, আবার কেউবা জার্সি। সব মিলিয়ে একটা অরাজকতার দৃশ্যায়ন কিংবা আভাস মিলেছে শুরুতেই। পিসিবির জন্য তাই আসন্ন পিএসএল বেশ চ্যালেঞ্জেরই নাম হতে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতার বিশ্বায়নে নিজেদের উপরের সারিতে রাখতে হলে এবার ভিন্ন কিছুই করতে হবে পাকিস্তানকে।