সবাই যখন ব্যস্ত আইপিএল নিয়ে, তখন তিনি নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছিলেন কাউন্টি ক্রিকেটে। লক্ষ্যটা খুবই স্পষ্ট। কদিন পরেই যে ওভালের মাটিতে গড়াবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচ। প্রস্তুতিটা তাই শতভাগ হওয়া চাই-ই চাই।
ভারতের চেতেশ্বর পুজারার জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা সব সময়ই এক চ্যালেঞ্জের নাম। টেস্ট ক্রিকেট ছাড়া বাকি দুই ফরম্যাটে তেমন ম্যাচ খেলার সুযোগ পান না। আইসিসি’র এফটিপি অনুযায়ী ওয়ানডে, টেস্ট— দুই ফরম্যাটেই আগের চেয়ে দলগুলোর জন্য ম্যাচ কমে গিয়েছে। টেস্ট স্পেশালিস্টদের জন্য তাই দীর্ঘ বিরতির পরই মাঠে নামতে হয়। তাই তাদের জন্য পারফর্ম করে দলে টিকে থাকার লড়াইটাও করতে হয় বছরের পর পর।
চেতেশ্বর পুজারাকে অবশ্য ভারতের বর্তমান টেস্ট দলের একজন প্রবীণ সদস্য হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। একশো টার উপরে টেস্ট খেলেছেন। আর এই অভিজ্ঞ পুজারাই যে আসন্ন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অমূল্য একজন সম্পদ হতে যাচ্ছেন, সেটিই জানিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার।
তিনি মনে করেন, ‘পুজারা সাসেক্সকে নেতৃত্ব দিয়েছে। ওর অধীনে স্টিভ স্মিথও খেলেছে। গত দুই মাসে ওর এই অভিজ্ঞতা দারুণ কাজে দিবে বলেই মনে করি। যদিও ওভালে পুজারা খেলেনি। তবে সাসেক্স তো তার আশেপাশেই। কন্ডিশন নিয়ে তাই ওর আলাদা করে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
আইপিএলের রেশ শেষ হতে না হতেই লাল বলের ক্রিকেটে মাঠে নামছে ভারত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই মোমেন্টামের পর টেস্ট ক্রিকেটে হঠাৎ মানিয়ে নিতে পারবে তো ভারত? এমন প্রশ্নের উত্তরে গাভাস্কার বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে টেস্টের টেম্পারমেন্ট অনেকটাই আলাদা। এই ফরম্যাটে ব্যাটারদের নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং করতে হয়। তবে আমার মনে হয়, তাদের মানিয়ে নিতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’
ইংলিশ কন্ডিশন বরাবরই পেস সহায়ক। এখানে পেসাররা দারুণ সুইং পান। তাছাড়া, ব্যাটারদের ব্যাটে বল আসতে দেরি হয়। এ ক্ষেত্রে টিম ইন্ডিয়ার জন্য গাভাস্কারের পরামর্শ হল, ‘এমন কন্ডিশনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অভ্যস্ত হতে হয়। এখানে ব্যাটারদের জন্য খেলাটা বেশ কঠিন। কারণ অনেকেই বলের লাইন মিস করে ফেলতে পারে। তাই এখানে নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং করতে হলে, সাবধানী অ্যাপ্রোচেই খেলতে হয়।’
বোলারদের জন্য ভারতের সাবেক এ ক্রিকেটার বলেন, ‘যেহেতু ডিউক বলে খেলা হবে, তাই পেসারদের নতুন বলে ফুলার লেন্থে বল করা উচিৎ। একটা সময় পর বল পুরনো হয়ে গেলে পেসাররা অনায়াসেই বল পিচ করতে পারবে।’
এরপরও অবশ্য ওভালের ফাইনাল ম্যাচটা ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জিংই ভাবছে সুনীল গাভাস্কার। তাঁর মতে, ‘ভারত সাধারণত রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় খেলতে অভ্যস্ত। আর ইংল্যান্ডের আবহাওয়া থাকবে কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন। সেই সাথে ঠান্ডা তো থাকছেই। যা উপমহাদেশের প্রতিটা দলের জন্যই প্রতিকূলতা তৈরি করে।’
এ জন্য এমন কন্ডিশনে ম্যাচ খেলার আগে দুই, তিনটা ওয়ার্ম ম্যাচের প্রয়োজনীয়তা দেখেন গাভাস্কার। কিন্তু ভারত আপাতত সেই সুযোগটাই পাচ্ছে না। যদিও আগের বারের রানার্সআপ ভারত এবার চ্যাম্পিয়ন হতেই মাঠে নামবে।
ভারতের জন্য সুখস্মৃতির ব্যাপার হল, অপর ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাটিতে এই গত সিরিজেই ২-১ এ হারিয়েছে ভারত। এ ছাড়া বেশ ক’বছর ধরেই দেশের বাইরের মাটিতেও দারুণ ছন্দে আছে ভারত। সব কিছু মিলিয়ে আগের বারের শিরোপা খোয়ানো দলটা যে এবারের ফাইনাল জয়ের ক্ষুধায় থাকবে, সেটি সন্দেহাতীতভাবে বলাই যায়।