মালানের আরেক মাইলফলক

বর্তমানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অঙ্গনে যে ক’জন ২২ গজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তার মধ্যে একজন ক্রিকেটার হলেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান। বর্তমান টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিয়ে সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। সদ্য সমাপ্ত ভারত ও ইংল্যান্ড এর টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মালান। বাবর আজমের রেকর্ড ভেঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ১০০০ রানের মালিক এখন ডেভিড মালান।

২০শে মার্চ মালান টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৪তম ম্যাচ খেলার পথে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিলো বাবর আজমের ঝুলিতে। ২৬ ম্যাচে এই মাইলফলকে পা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের এই অধিনায়ক। তিন নম্বরে আছেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি! যিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করতে সময় নিয়েছেন ২৭ ম্যাচ।

২৫শে জুন, ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হয় মালানের। তখন তার বয়স প্রায় ৩০! তাহলে এতো বছর তিনি কোথায় ছিলেন? মাত্র ৩ বছরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দখল করে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টির সেরা ব্যাটসম্যানের জায়গা। প্রতিভা, সামর্থ্য আর যোগ্যতা দেখিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন বাবর-কোহলিদের কাতারে।

মূলত, ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে মালানের নজরকাড়া পারফরম্যান্স ই তাকে জাতীয় দলে টেনে এনেছে। ২০১৭ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, কাউন্টি, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ও পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) মাতিয়েছেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। তার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় দিকটি হচ্ছে বিপিএলে পারফর্ম করা!

বরিশাল বুলস ও খুলনা টাইটান্সের হয়ে দুই সেশন খেলেছেন তিনি। সেখান থেকেই মালানের প্রতিভা চর্চা শুরু হয়, তারপর কাউন্টিতেও অনবদ্য পারফরম্যান্স! ব্যাস, খুলে গেলো জাতীয় দলের দরজা। সুযোগ পেয়ে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেকের!

এরপর জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি তে একের পর এক চোখ ধাঁধাঁনো ইনিংসে দলে জায়গা পাঁকা করে নেন মালান! ওয়ানডেতে খেলেছেন মাত্র এক ম্যাচ, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচে করেছেন ২৪ রান। এছাড়া টেস্ট খেলার সুযোগ হয়েছে মাত্র ১৫টি! প্রায় ২৮ গড়ে করেছেন ৭২৪ রান, এক সেঞ্চুরি আর ৬টি হাফ সেঞ্চুরি! টেস্ট ও ওয়ানডেতে নিয়মিত হতে না পারলেও টি-টোয়েন্টিতে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। ২৪ ম্যাচে প্রায় ৫১ গড়ে আছে ১ হাজারের বেশি রান। ১ সেঞ্চুরির সাথে আছে ১০টি হাফ সেঞ্চুরি!

সবশেষ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) তাকে কিনে নিয়েছে পাঞ্জাব কিংস। নিলামে তাকে নিয়ে খুব বেশি মাতামাতি না হলেও এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান যে এই ফর্মেটে কতটা ভয়ংকর হতে পারেন তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এবারের আসরের আইপিএলে পাঞ্জাবের হয়ে মাঠ মাতাবেন মালান।

ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগে। নিজের প্রতিভাকে জানান তিনি পেরিয়েছে বেশ ক’বছর। তবে ধৈর্য্য আর নিজের উপর আত্ববিশ্বাস তাকে শেষ পর্যন্ত টেনে এনেছে জাতীয় দলে। এতো এতো তারকাদের ভীড়ে বাকি দুই ফর্মেটে নিয়মিত না হতে পারলেও টি-টোয়েন্টি তে নিজের সামর্থ্যর সবটুকু দিয়ে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন সবার উপরে। বয়স অনুযায়ী ক্যারিয়ারটা হয়তো বেশ ছোট, তবে প্রতিভা আর সামর্থ্যে থাকলে যে সাফল্য ধরা দিবেই সেটা যে বয়সেই হোক! তার যথার্থ প্রমাণ ডেভিড মালান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link