রকিবুল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের একজন। সাবেক এই অধিনায়ককে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) মর্যাদার নজরেই দেখে। বোর্ডের প্রধান ম্যাচ রেফারিও তিনি।
তবে রকিবুল হাসানের দেয়া বক্তব্য নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতেই পড়তে হয়েছে বিসিবিকে। বাধ্য হয়ে রকিবুলের কাছ থেকে জবাব চাইতে হয়েছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
সংস্থাটির বেতনভুক্ত কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও বিসিবি পরিচালক, প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে ও তাঁর ছেলে চাইক হাতুরুসিংহেকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিত বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগে একটি সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বিসিবির উচ্চপদস্থ কর্তা খালেদ মাহমুদ সুজনের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করেছিলেন রকিবুল হাসান। কোন প্রমাণ ছাড়াই কোচ নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে সুজনকে জড়িয়ে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
সম্প্রতি দলের হেডকোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহেকে নিয়েও হানিকর কথা বলেছেন রকিবুল হাসান। হাতুরু দেশের ক্রিকেটের জন্য ক্ষতিকর বলে জানান তিনি। সেই সাথে লঙ্কান এই কোচের ছেলে চাইক হাতুরুসিংহে মুশফিকদের অনুশীলনে থাকায় তাঁকে ফিক্সার বলে বসেন একসময়ের জনপ্রিয় এই ব্যাটার।
এসব নিয়ে গত ১৪ আগস্ট রকিবুল হাসানকে কার্যালয়ে ডেকেছিল বিসিবি। পরিচালককে নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করার ব্যাপারে তাঁকে সেসময় জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে ভুল স্বীকার করেন তিনি।
সেটার রেশ না কাটতেই আবারো বিসিবিতে ডাক পড়েছে বর্ষীয়ান ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব রকিবুলের। এবার হেডকোচ ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলার ব্যাপারে শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
টাইগারদের প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে ছুটি কাটিয়ে দেশে আসার সময় নিয়ে এসেছিলেন বড় ছেলেকে। বাবার সঙ্গে ঢাকায় এসে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দেখার সুযোগও কাজে লাগিয়েছেন চাইক। বাংলাদেশ দলের প্র্যাকটিস কিট গায়ে গত কয়েকদিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিয়মিত আসেন তিনি।
শুধু মাঠের অনুশীলন সেশনই নয়, ‘পারফরম্যান্স সাইকোলজিস্ট’ ফিল জন্সির ক্লাসেও ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকেন চাইক হাতুরুসিংহে। আর এসব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে হাতুরুসিংহের ছেলেকে ‘ফিক্সার’ হিসেবে সন্দেহ করেন রকিবুল হাসান। একই সাথে ফিক্সিং শ্রীলঙ্কার ডিএনএতে আছে – এমন বর্ণবাদী মন্তব্যও শোনা যায় তাঁর কণ্ঠে। কোনরূপ নির্ভরশীল প্রমাণ ছাড়াই এমন গুরুতর অভিযোগ তোলায় স্বভাবতই অসন্তুষ্ট হয়েছে বিসিবি।
শুনানিতে রকিবুল হাসান কিভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন সেটার উপর নির্ভর করছে তাঁর ভাগ্য। আপাতত ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান ম্যাচ রেফারি হিসেবে মাসে মোটা অংকের বেতন পান তিনি। কিন্তু বিসিবির অসন্তুষ্টির কারণে ম্যাচ রেফারির এই পদ থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হতে পারে এই সাবেক অধিনায়ককে।