বুড়িয়ে গেছেন রিয়াদ!

কোন একটা শট খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছেন। আবার উঠে দাঁড়ালেন। পরের বলে নতুন করে চেষ্টা করলেন। এইযে উঠে দাঁড়াতে জানা এটাই তো স্পোর্টসম্যান স্পিরিটি। তবে এই উঠে দাঁড়ানো কেবলই রূপক। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে পড়ে গিয়েছেন আরো অনেক বড় বিপদে। সেখান থেকে কী তিনি উঠে দাঁড়াতে পারবেন?

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আবারো ফিরেছে বিপিএল। এটাই ঢাকায় বিপিএলের তৃতীয় ও শেষ পর্ব। শেষ ম্যাচগুলোতে দলগুলো মুখোমুখি হওয়ার আগে আজ অনুশীলন করেছে ফরচুন বরিশাল। নয় ম্যাচে ছয় জয় নিয়ে দলটা এখন আছে টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে।

বরিশাল দুরন্ত ফর্মে থাকলেও ভালো সময় কাটছে না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ব্যাট হাতে দিনের পর দিন ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং করার ধরণ হয়েছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এমনকি তাঁর অফ ফর্মের কারণে খেলতে পারেননি গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

 

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে বাদ পড়া এই ক্রিকেটারের ফিরে আসার মঞ্চ হতে পারতো বিপিএল। তবে বিপিএলেও নিজের সেরাটা দেখাতে পারলেন। বরং তাঁর ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছে বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছেন।

বয়সের ছাপ পড়েছে রিয়াদের চোখে মুখেও। সেটা চোখে পড়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজারও। একইসময় মিরপুরে অনুশীলন করছিল সিলেটও। রিয়াদকে দেখে মাশিরাফি বলে উঠলেন,’ ও (রিয়াদ) তো বুড়া হয়ে গেসে।‘

রিয়াদ বুড়ো হয়ে গেলেও তাঁর ব্যাটের ধারটা নিশ্চয়ই এখনো কিছু বাকি আছে। বিপিএলের শেষ পর্যায়ে এসে হলেও তা নিশ্চয়ই দেখাবেন এই ব্যাটার। কেননা রিয়াদ উঠে দাঁড়াবেন সেটাই তো সবার প্রত্যাশা।

তবে এখন পর্যন্ত সেই আভাস পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর ব্যাটে। বরিশালের হয়ে খেলে ফেলেছেন ৮ ম্যাচ। যার তিনটাতে খুলতে পারেননি রানের খাতাই। দুই অংকের স্কোর গড়তে পেরেছেন তিন ম্যাচে। যার সর্বোচ্চ ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস।

তবে সেই ৩৫ রানে দলের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়েছে। ইনিংসটি রিয়াদ খেলেছিলেন ৩১ বল থেকে। সাত নাম্বারে নেমে ব্যাটিং করেছেন ১১২.৯০ স্ট্রাইকরেটে। অথচ তাঁরই সাথে অপরাজিত থাকা ইফতেখার আহমেদ ব্যাটিং করেছেন ১৬৪.৭০ স্ট্রাইক রেটে। ওই ম্যাচেই সাকিব ব্যাট চালিয়েছেন ১৭৬.৪৭ স্ট্রাইকরেটে।

ফলে বোঝাই যাচ্ছে দলের বাকিদের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাটিংটা করতে পারছেন না তিনি। আসলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সাথেই তাল মেলাতে পারছেন না অনেকদিন ধরে। সেজন্যই জায়গা হারাতে হয়েছে বরিশালের হয়ে। আর এবার তাঁর ধীরগতির ইনিংস ভোগাচ্ছে বিপিএলের একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।

রিয়াদের জন্য তাই জাতীয় দলে ফেরাটা এখন প্রায় অসম্ভব। ফিরতে হলে নিজের ব্যাটিং স্টাইলে আনতে হবে বিরাট পরিবর্তন। নাহলে হয়তো বরিশালের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর ব্যাটিং লাইন আপেও তাঁর জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়ে উঠবে। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাই রিয়াদের যাত্রার শেষই দেখা যাচ্ছে।

তবে বিশ্বাস জোগায় সেই ছবিটা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পড়ে গেলেন। আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। বাইশ গজেও রিয়াদ বিরাট এক  বিপাকে পড়েছেন। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টাটাও তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। রিয়াদ আবার ফিরে আসবেন সেই অপেক্ষাটাই করা যাক। মাশরাফির মতে রিয়াদ বুড়িয়ে গেলেও তাঁর ব্যাট তো আর বুড়িয়ে যায়নি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link