চেন্নাই সুপার কিংস- ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়াতে বেশ বড় একটা নাম। সেই দলের অধিনায়কত্বের ভার ঠিক কতটুকু, তা নিশ্চয়ই টের পেয়ে গেছেন রুতুরাজ গায়কড়। গেল আসরে চেন্নাইয়ের অধিনায়কত্ব করেছিলেন গায়কড়। দলকে প্লে-অফ অবধি নিয়ে যেতে পারেননি। তবুও আরও একটি আসরকে সামনে রেখে তার উপরে চেন্নাই ম্যানেজমেন্ট রাখছে ভরসা। আর চেন্নাইয়ের সফলতার অনেকটাই নির্ভর করে রুতুরাজের ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের উপর।
চেন্নাই সুপার কিংসের ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের চাবিকাঠি হতে পারেন রুতুরাজ। শুধু তার অধিনায়কত্ব দিয়ে নয়, এক্ষেত্রে তার ব্যাটিংটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। টপ অর্ডার হিসেবে রুতুরাজের প্রধান দায়িত্ব প্রথম পাওয়ার প্লে-কে যথাযথভাবে ব্যবহার করা।
সেই কাজটা অবশ্য বেশ ধূর্ততার সাথেই করতে পারেন গায়কড়। প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে আইপিএলে ১২৬ এর একটু বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন রুতুরাজ গায়কড়। একটা স্থিতিশীল শুরু এনে দেওয়ার ক্ষেত্রে বারংবার নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করেছেন রুতুরাজ। খুব বেশি তাড়াহুড়ো করেননা, বরং আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজের শটগুলো খেলার চেষ্টা করেন।
এমনকি অপরপ্রান্তে থাকা সঙ্গীকে হাতখুলে খেলার সুযোগও তৈরি করে দিতে পারেন রুতুরাজ। আগ্রাসী যে কোন ব্যাটারকে তিনি আস্থা দেন, আরেকপ্রান্ত ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অপর ব্যাটারকে মারকুটে ব্যাটিংটা চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।
এছাড়াও গায়কড়ের সবচেয়ে বড় বিশেষণ হচ্ছে, স্পিন অথবা পেস- দু’টোই বেশ সাবলীলভাবে খেলতে পারেন। খুব বেশি দূর্বলতা নেই। তাইতো দ্রুততার সাথে তিনি নিজের রোল পালটে ফেলতে পারেন বাইশ গজে। মাঝের ওভারগুলোতে তার স্ট্রাইকরেটও বৃদ্ধি পায় অনেকটাই। এখন অবধি ১৪২ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি ৭-১৫ ওভারের সময়কালে।
স্ট্রাইকরোটেশনের সাথে নিজের দারুণ শুরুটাকে বড় করবার দিকেই থাকে নজর। যেহেতু মাঝের ওভারে স্পিনাররাই সাধারণত বোলিং করে থাকেন, তাদেরকে তুলোধুনো করতে দ্বিধা করেননা রুতুরাজ গায়কড়। ম্যাচের গতিপথ সেখানেই নির্ধারণ করে ফেলতে পারেন তিনি।
তবে এবার অন্তত বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে তাকে। সেই অর্থে চেন্নাই দলে নেই কোন ফিনিশার। মহেন্দ্র সিং ধোনির সেই জৌলুস এখন ফিকে হয়ে গেছে। তাইতো রুতুরাজের ইনিংস করতে হবে আরও খানিকটা লম্বা। ডেথ ওভারে সেট ব্যাটারদের বিপক্ষে বল করা যেকোন বোলারদের জন্যেই কঠিন। তাইতো যতটা সম্ভব নিজের খোলস না পালটে ইনিংস বড় করবার দিকেই মনোযোগ দিতে হবে তাকে।
১৭টি ইনিংসে ডেথ ওভারে ব্যাটিং করতে পেরেছেন গায়কড়। সেই ইনিংসগুলোতে ১৭২ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন রুতুরাজ। অতএব তার সে পর্যন্ত টিকে থাকাও হতে পারে চেন্নাইয়ের সফলতার অন্যতম এক নিয়ামক। এখন দেখবার বিষয়, চেন্নাই দলের ভার সামলে নিজেকে ঠিক কতটুকু মেলে ধরতে পারেন রুতুরাজ গায়কড়।