সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিযার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ শেষ করে ইংল্যান্ড পাড়ি দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। স্থায়ী ভাবে নয়, নিজেকে চাঙ্গা করতে। দেশে থাকাকালীন নিজেকে ফিট রাখতে করেছিলেন কঠোর পরিশ্রম। পরিশ্রমের পুরস্কার ডাবল সেঞ্চুরির পেয়ে গেলেন এই ব্যাটার।
ব্রিটিশ কন্ডিশনে রীতিমত ঝড়ই তুলেছেন এই ব্যাটার। অ্যাভেলি ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে করেছেন অপরাজিত ২০০ রান। ওকেনডনের মাঠে সুপার নোভার বিপক্ষে ইনিংসটি সাজানো ১৭ চার আর ১২ ছয়ে। ম্যাচে সাব্বির বল খেলেছেন ১০১ টি।
যদিও, এটা ছিল যুক্তরাজ্যের মাইনর ক্রিকেট লিগের ম্যাচ। মূলত অপেশাদার ক্রিকেটাররাই এখানে খেলেন ছুটির দিনগুলোতে। সেখানে তাই সাব্বিরের এমন ব্যাটিং খুবই প্রত্যাশিত।
সম্প্রতি সাব্বিরের ঘরোয়া পারফরম্যান্স দারুণ বটে। ডিপিএলে পেয়েছেন রান। আসরে করেছেন ৫৪৯ রান। তিন অর্ধশতকের পাশাপাশি সেঞ্চুরি সংখ্যা এক। টুর্নামেন্টে ব্যাটিং করেছেন প্রায় ৮০ স্ট্রাইক রেটে। এখানে গড় ৪২.২৩।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয়েছিল সাব্বিরের। অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার নাথান লিঁও তাঁর মাঝে বিরাট কোহলির ছায়া খুঁজে পেয়েছিলেন। কোহলি নিজেও প্রশংসা করেছেন সাব্বিরের। তবে নিজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারায় বাদ পড়েছিলেন দল থেকে।
সাব্বির শুরুতে গা ছাড়া ভাবে চললেও বাদ পড়ে বুঝেছিলেন বাস্তবতা। নিজেকে ভেঙে তেরির প্রচেষ্টা করেছেন। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে মাশরাফির চাওয়াতেই বিশ্বকাপ দলে পেয়েছিলেন সুযোগ। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। এরপর আবার বাদ পড়েন দল থেকে।
২০২২ সালের এশিয়া কাপের আগেও ছিলেন দলের বাইরে। অধিনায়কের চাওয়াতে আবার সুযোগ হয় দলে। এশিয়া কাপে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেনি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে সুযোগ পেয়েছেন। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছেন শতভাগ। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত বাদ পড়েন দলের বিশ্বকাপ পরিকল্পনা থেকে।
জাতীয় দলের জার্সিতে সাব্বির ম্যাচ খেলেছেন ১২৫টি। তিন সংস্করণ মিলে করেছেন ২৭৮১ রান। ওয়ানডেতেই কেবল পেয়েছেন একটি সেঞ্চুরি।
আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে আবারও আলোচনায় সাব্বির। তবে এবার হুট করে অন্তত জাতীয় দলে ঢুকার সুযোগ পাবেন না এই ব্যাটার। ঘরোয়া লিগে বিশ্বকাপের আগে পারফরম্যান্স করার মত মঞ্চ নেই সামনে। এছাড়াও চান্দিকা হাথুরুর অধীনে নির্বাচকরাও খেলোয়াড় নির্বাচনে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে নিশ্চিতভাবে সাব্বির আক্ষেপের নাম। ছিলেন প্রতিভাবান। ধারাবাহিক হতে পারলে লাভবান হতো বাংলাদেশ ক্রিকেট। এমন ক্রিকেটারের অনুপস্থিতি জাতীয় দলের জন্যই ক্ষতির।
সাব্বিরের সামনে এখনও সুযোগ রয়েছে জাতীয় দলে ফেরার। বয়স সবেমাত্র ৩২। ব্যাটসম্যান হওয়ায় এই বয়স আপাতত সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেননা আগের সিরিজে ৩০ বছর বয়সে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল রনি তালুকদারের।
নির্বাচকরা কথা রেখেছেন। পারফর্ম করলে সুযোগ আসবে, কথার বাস্তবায়ন করেছেন। সাব্বির আবার ছন্দে ফিরলে জাতীয় দলে আসবেন। কেননা তিনি তো রনির চাইতেও পরীক্ষিত জাতীয় দায়িত্বে।