ক্রিকেটীয় প্রতিভা জন্মদানে জুড়ি নেই পাকিস্তানের। সাত দশকেরও বেশি সময়ের ক্রিকেট ইতিহাসে অগণিত ক্রিকেটীয় প্রতিভা জন্ম দিয়ে এসেছে উপমহাদেশের এই দেশটি। কিন্তু ১৯৯২ এর ওডিআই বিশ্বকাপ আর একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্ব আসরের শিরোপা পাকিস্তানের প্রতিভার পরিচায়ক নয় মোটেও।
প্রতিভার জন্ম যেমন দিয়েছে পাকিস্তান ঠিক তেমনি প্রতিভার অপচয়ও হয়ছে ঢের। কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামও মনে করেন তাই। সাঈদ আনোয়ারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অসাধারণ সব রেকর্ড থাকলেও ওয়াসিম মনে করেন পাকিস্তানের ব্রায়ান লারা হবার সক্ষমতা ছিল সাঈদের।
কিন্তু তাঁর ক্যারিয়ারের প্রতি উদাসী মনোভাবের কারণে তার প্রতিভার পুরোটা পায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট। এক অনন্ত আক্ষেপ হয়েই ক্যারিয়ারের ইতি ঘটেছে তাঁর। আর ব্যক্তিগত জীবনের বিষাদে একটা পর্যায়ে জাগতিক মোহ থেকেই মন উঠে যায় সাঈদ আনোয়ারের।
নব্বই এর দশকে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই অসাধারণ সব প্রতিভা এসেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটে। বিশ্ব ক্রিকেটেরই সর্বকালের সেরাদের মধ্যে অন্যতম ধরা হয় পাকিস্তানের বাঁহাতি ব্যাটার সাঈদ আনোয়ারকে।
পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট আর ২৪৭ টি ওয়ানডে খেলা সাঈদের আন্তর্জাতিক রান সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। তবে পরিসংখ্যান ছাপিয়ে সাঈদ আনোয়ারকে ভক্তরা মনে রেখেছে তাঁর অসাধান শট গুলোর জন্য। যেকোনো ফরমেটেই পাকিস্তানকে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেবার জন্য সাঈদ যেন ছিলেন আদর্শ ব্যাটার।
সাঈদের প্রতিভায় মুগ্ধ এক সময় তার সতীর্থ আরেক কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম। নিজেকে আত্মজীবনী ‘সুলতান’- এ আকরাম লেখেন, ‘সাঈদকে নিয়ে আমার একমাত্র সমালোচনা হল, তাঁর প্রতিভা অনুযায়ী তাঁর পাকিস্তানের ব্রায়ান লারা হওয়া উচিত ছিল। সে তাঁর ফিটনেস নিয়ে ছিলো উদাসীন, খেলা নিয়ে খুব বেশি কাজ করত না, এমনকি খুব বেশি চিন্তাও করত না।’
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইডেন টেস্টে প্রথম ইনিংসে শূণ্য রানে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ জেতানো ১৮৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। পাকিস্তান সে ম্যাচ জেতে ৪৬ রানে।
এমন দুর্দান্ত ইনিংসের কথা নিজের আত্মজীবনীতে তুলে এনেছেন ওয়াসিম আকরাম। এমন অসাধারণ সব ইনিংসই অমর করে রাখবে সাঈদকে। কিন্তু তবুও সাঈদ আনোয়ারের প্রতিভার পুরো বিচ্ছুরণ না দেখার আফসোস রয়েই গেছে ‘সুলতান অব সুইং’ খ্যাত ওয়াসিম আকরামের।