পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত সাইফউদ্দিন

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ শুরুর আগে অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে গোড়ালির চোটে পড়েছিলেন সাইফউদ্দিন। চোট কাটিয়ে টুর্নামেন্টের শেষের দিকে কিছু ম্যাচ খেললেও এখনো সেই চোট বয়ে বেড়াচ্ছেন এই অলরাউন্ডার। চোটের কারণে অনিশ্চিত ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দলে থাকাও।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের ২৪ জনের প্রাথমিক স্কোয়াডে আছেন সাইফউদ্দিন। ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে অনুশীলন এবং ঐ দিনই জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলে প্রবেশ করবেন ক্রিকেটাররা। সাইফউদ্দিন এর আগেই ফিট হয়ে উঠবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে।

গতকাল শুক্রবার সবাই ছুটিতে থাকলেও বিসিবির একাডেমি মাঠে সাইফউদ্দিন ছিলেন ফেরার লড়াইয়ে। গতকাল পাঁচ ওভার বলও করেছেন তিনি। ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে সাইফউদ্দিন জানিয়েছেন আসন্ন সিরিজের মূল স্কোয়াডে থাকতে  বোলিং ও ফিটনেস টেস্ট দিতে হবে তাকে।

সাইফউদ্দিন বলেন, ‘আমি মাত্র পাঁচ ওভার ৬০ শতাংশ গতিতে বোলিং করেছি। তবে আমাদের প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরুর আগেই পুরো গতিতে বল করতে পারবো। আগামীকাল আমি ৮০ শতাংশ গতিতে বল করবো। এবং পরের দিন আমি শতভাগ গতিতে বল করতে আত্ববিশ্বাসী। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে আমাকে বোলিং ও ফিটনেস টেস্ট দিতে হবে। আমি যদি সফল ভাবে এগুলোতে পাস করতে পারি তবে আমি ছাড়পত্র পাবো।’

চোট পাওয়ার পর চিকিৎসক দুই তিন সপ্তাহ সময় বেঁধে দিলেও এতো সময় কেনো লাগছে সেটাও জানিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, ‘আমি টুর্নামেন্ট চলাকালীন এমআরআই করাতে পারিনি। কারণ আমরা জৈব সুরক্ষা বায়ো বাবলে ছিলাম। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর যখন এমআরআই করেছি তখন জানতে পেরেছি যে লিগামেন্টে কিছু সমস্য আছে। আমি ভেবেছিলাম এটি সাধারণ আঘাত ছিলো এবং এক সপ্তাহের মধ্যেই চলে যাবে। তবে এটি ধীরে ধীরে বেরে যাচ্ছিলো। বোর্ডের চিকিৎসক আমাকে আমার পুনর্বাসন শুরু করতে বলেছিলো।’

ক্যারিয়ারে এটাই সাইফউদ্দিনের প্রথম চোট নয়। এর আগেও অনেক বার চোটে পেয়েছেন সাইফউদ্দিন। চোট আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন যেনো একে অন্যের সমার্থক শব্দ। প্রতিবার চোট জয় করে মাঠে ফিরলেও মিস করেছেন অনেক ম্যাচ।

চোটের কারণেই খেলতে পারেননি বাংলাদেশের সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-বিপিএল। চোটের কারণে গত বছর নভেম্বরে যেতে পারেননি ভারত সফরে। ২০১৯ এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর পিঠের সমস্যায় ভুগছেন সাইফউদ্দিন। পিঠের চোটের কারণে বিশ্বকাপের পর ৫ মাস মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি।

২০১০ সাল থেকে পিঠের ইনজুরি বয়ে বেড়াচ্ছেন সাইফউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘মূলত আমি ২০১০ সাল থেকে ইনজুরিতে আক্রান্ত ছিলাম। যখন আমি প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলতে গেলাম তখন আমার পিঠে সমস্য ছিলো। আমি বুঝতে পারিনি যে সিটি ক্লাব মাঠে ড্রাইভ করার পর আমার কব্জি ফেটে গেছে।’

তবে এই চোটের জন্য শুধু নিজকেই নয়, বরং ভাগ্যকেও দোষ দিচ্ছেন এই অলরাউন্ডার। সাইফউদ্দিন এ প্রসঙ্গে রুবেল ও মাশরাফির উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘সবাই এক নয়। উদাহরণস্বরূপ রুবেল ভাই এতোটা চোটে পড়েন না। যেখানে মাশরাফি ভাই এতো বার ইনজুরি থেকে ফিরে এসেছে। মূলত এটি ভাগ্যের উপর নির্ভর করে এবং আপনি এর সাথে লড়াই করতে পারবেন না। আমি সর্বদা ফিট থাকার চেষ্টা করেছি এবং শেষ বার নির্বোধের মতো চোটে পড়েছি।’

সব চোট জয় করে বার বার মাঠে ফিরে এসেছেন সাইফউদ্দিন। সাইফউদ্দিন জানেন নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে। সাইফউদ্দিন জানিয়েছেন নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী গতি পরিবর্তন করে বল করেই সফল তিনি।

এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমি প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক বা বুমরার মতো ১৪০-১৫০ কিঃমিঃ গতিতে বল করতে পারিনা; কারণ এরকম শরীর আমার নেই। তাই আমি ১৩০-১৩২ কিঃমিঃ গতিতে বল করে সফল হওয়ার চেষ্টা করি। নতুন বল হোক বা স্লগ ওভারে হোক আমি গতি পরিবর্তন করে বল করার চেষ্টা করি।মাঝে মাঝে আমি সফল হই। আবার কখনো কখনো ব্যর্থ হই। তবে আমি সব সময় চেষ্টা করি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link