২০২১, মাঝখানে পেরিয়ে গেছে সাড়ে তিন বছর। ঘরের মাঠে একটা টেস্ট ও জেতেনি পাকিস্তান, শুরু হল ইংল্যান্ডের সাথে সিরিজ, যাদের সাথে আবার ৯ বছর ধরে সিরিজ জেতা হয়নি পাকিস্তানের। প্রথম টেস্টে শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, আমির জামালদের পিটিয়ে তুলোধুনো করে ৮২৩/৭ ডিক্লেয়ার করল ইংল্যান্ড। ফলাফল! ইনিংস ব্যবধানে হার।
এখান থেকেই দৃশ্যপটে হাজির সাজিদ খান, বয়স ৩১।সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০২২ সালে। আফ্রিদি, নাসিম এর পরিবর্তে টেস্ট দলে আসেন সাজিদ খান আর নোমান আলী। বাকিটা ইতিহাস! দুই টেস্টে ৪০ উইকেটের মধ্যে এই দুইজনই নিয়েছেন ৩৯ উইকেট। প্রথম টেস্টে এক ইনিংসে ৮২৩/৭ করা ইংল্যান্ড, পরবর্তী দুই টেস্টের চার ইনিংসে করেছে ৮১৪/৪০।
এ অবিশ্বাস্য ঘটনা কিভাবে সাধন হল ? এটা একটা রহস্য যদি হয় তবে তার রহস্য মানব সাজিদ। যার মধ্যে নেই ভয়, যেন লড়াইয়ের জন্য জন্ম তার। দুই টেস্টে বল হাতে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। ব্যাট হাতে করেছেন মূল্যবান ৭২টি রান। বুদ্ধি ও কৌশল কাজে লাগিয়েই, বাঘা বাঘা ইংলিশ ব্যাটার ও বোলারকে কাহিল করেছে তারা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটা ইন্টারভিউ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যেখানে সে বলছে- সাদা চামড়ার ভিনদেশিদের বিপক্ষে যদি হালকা একটু বলে টার্ন করতে পারেন, তাহলেই ওরা নার্ভাস হয়ে যায়। আমরা(উপমহাদেশীয়রা) যেমন সেনা কান্ট্রি গুলোতে গিয়ে ঘাবড়ে যাই, ভয় পাই ওদের পেস বান্ধব উইকেটে দেখে ওরাও আমাদের স্পিন বান্ধব উইকেট দেখে ভয়ে নার্ভাস হয়ে যায়।
সাজিদ খান ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে কৌশলগতভাবে মোকাবেলার একটি মজার গল্পও জানিয়েছেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পাকিস্তানের সৌদ শাকিল ও সাজিদ খান ৭২ রান যোগ করেন ৭৮ বলে, যা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তাদের লিড নিতে সহায়তা করে। ইংল্যান্ডের বোলাররা রেহান আহমেদ এবং শোয়েব বাশির উর্দু বোঝেন, তাই শাকিল ও সাজিদ তাদের ব্যাটিং কৌশল লুকিয়ে রাখতে একটা কথার ধুম্রজাল ব্যবহার করেন।
ম্যাচের পর, স্ট্যাম্প মাইকে শোনা যায় সাজিদের কিছু কথা—’কিছু বল দেখো এবং তারপর তোমার খেলা শুরু কর’ তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কিছু বল দেখব। কিন্তু আসল বার্তা ছিল, যখন বল বাতাসে থাকবে তখন আক্রমণাত্মক শট নিতে হবে।’ এর মাধ্যমে তারা ইংলিশ বোলারদের লফটেড বল করার জন্য উৎসাহিত করছিলেন, যা তাদেরকে আক্রমণাত্মক শট খেলার সুযোগ দিচ্ছিল।
সাজিদ মজা করে বলেন, ‘আমার চেহারা দেখেও অনেকে ভয় পায়, হাহাহা।’ চেহারা দেখে না হোক, অন্তত আজকাল সাজিদকে যে লোকে ভয় পাচ্ছে সেটা আর বলে না দিলেও চলে!’