তাকে আজকাল খুজে পাওয়াই শক্ত।
প্রায় সারাটা দিন মাস্কো-সাকিব ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এর ফাঁকে একটু সময় পেলেই ছুটে যান জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের পাশে। কারো একটু ব্যাটিংয়ে সমস্যা ঠিক করে দিতে হয়, কারো ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করতে হয়। মোট কথা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এখন নি:শ্বাস ফেলার সময় পান না – বললেই চলে।
এর মধ্যেই ফোনে একটু সৌজন্য বিনিময় করা গেলো। কিন্তু আসল যে ব্যাপার, সে নিয়ে একেবারে মুখে তালা এই বাংলাদেশি কোচের। বোর্ড থেকে কোনো প্রস্তাব পেয়েছেন কি না, প্রস্তাব পেলেও কাজ করবেন কি না; এসব নিয়ে কোনো কথাই নেই। শুধু হেসে বললেন, বোর্ড সব জানে।
বোর্ডের কাছে, মানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনের কাছে অবশ্য সব প্রশ্নেরই উত্তর আছে। তিনি কিছুই এড়ালেন না। পরিষ্কার করে জানালেন, জাতীয় দলের সাথে কাজ করার জন্য সালাউদ্দিনকে প্রস্তাব দিয়েছে বিসিবি। কিন্তু সালাউদ্দিন মারাত্মক ব্যস্ততা ও বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির কারণে এখনই জাতীয় দলে ফিরছেন না। তবে সাকিবদের এই কোচ জাতীয় ক্রিকেটের জন্য কিছু করতে খুব আগ্রহী। তাই তাকে এর ফাঁকেই হয়তো বোর্ডের ক্রিকেটার তৈরির কোনো কার্যক্রমে কাজ শুরু করবেন সালাউদ্দিন।
সাকিব-তামিমদের শৈশবের কোচ সালাউদ্দিন এখন মূলত দুটো মেগা প্রজেক্ট সামলাচ্ছেন। তাকে প্রধাণ করে গড়ে উঠেছে সাকিব আল হাসানের মাস্কো-সাকিব অ্যাকাডেমি। এ ছাড়া গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিভিন্ন ডিভিশনের কার্যক্রমনের প্রধাণ কোচ তিনি। এই দুটো কাজ আসলে একজন কোচকে ব্যস্ত রাখার জন্য যথেষ্ঠ।
এই বাস্তবতাটা মনে করিয়ে দিয়ে সুজন বলছিলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা সালাউদ্দিন সাহেবকে জাতীয় দলে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। উনি খুব আগ্রহের সাথে প্রস্তাবটা শুনেছেন। আমাদের তরফে যেমন খুব আগ্রহ আছে, ওনার দিক থেকেও দেশের ক্রিকেটের জন্য কিছু করার খুব আগ্রহ আছে। কিন্তু আসলে উনি এই মুহূর্তে জাতীয় দলে আসতে পারছেন না। আমাদের ওনার বাস্তবতাটা বুঝতে হবে। দেশের বড় দুটো ক্রিকেটিয় প্রতিষ্ঠান ওনাকে কেন্দ্র করে চলছে। একটা অ্যাকাডেমি ওনাকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে। আরেকটা প্রিমিয়ার লিগের দলের দায়িত্ব আছে। এর বাইরে ওনার কিছু ব্যক্তিগত কমিটমেন্টও আছে। ফলে চাইলেই উনি সব ছেড়ে আসতে পারছেন না।’
তবে ব্যাপারটা এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বদলালে বিসিবির এই প্রস্তাবে মিলেও যেতে পারে সালাউদ্দিনের পথ। কিন্তু তার আগেই তিনি বিসিবিতে খণ্ডকালীন কোনো একটা কাজ শুরু করতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেলো নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনের কথায়।
প্রধান নির্বাহী সুজন বলছিলেন, সালাউদ্দিন আপাতত ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। ফলে এরকম কোনো জায়গায় তাকে দ্রুতই দেখা যেতে পারে, ‘আমাদের এখনও কথা চলছে। আমরা আলোচনা শেষ করিনি। উনি ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা দেখবো, আমাদের কোথায় কেমন অপরচুনিটি আছে। ওনার কিরকম ভাবে সময় বের করা সম্ভব, সেটাও দেখতে হবে। তারপর ভিন্ন কোনো ভূমিকায় তাকে দেখলে দেখাও যেতে পারে।’