ক্রিকেট যখন বিজ্ঞানময়

ক্রিকেট শব্দটা শোনার সাথে সাথেই আপনার কী মনে পড়ে?

লম্বা রানআপ এ কোন পেস বোলার বল করতে ছুটে আসছে? কিংবা ধরুন কোন স্পিনার হাত ঘুরিয়ে আঙুলের প্যাঁচে ভেলকি দেখাচ্ছে? পিচের অপর প্রান্তে দাঁড়ানো কোন ব্যাটসম্যান সেই বলকে কাট, লেট, স্কুপ বা যেকোন শটেই সীমানা ছাড়া করছে?

তা এখান থেকে একটু জাতে উঠে বোলার শেন ওয়ার্ন হলে আর ব্যাটসম্যান অ্যালিস্টেয়ার কুক হলে অবশ্য লম্বা রান আপ আর বলে বলে শটের দেখা মিলবে না!

কিন্তু এই যে ক্রিকেট আমরা দেখছি, আদতেই কি খেলাটা এতটাই সহজ? বোলারের পক্ষে ঘন্টায় ১৪৫ কিমি. বেগে বল ছোড়া কি ‘ডালভাত’? কিংবা সেই ১৪৫ কিমি. ২২ গজ পার হয়ে ব্যাটসম্যানের কাছে পৌছলে সেই বলটি খেলা কি খোকার মায়ের ‘দুধভাত’? বা ‘আপহিল’ করতে গিয়ে সেই বলই ‘ফ্লাই স্লিপ’-এ ক্যাচ উঠলে ‘স্লিপ’এ দাঁড়ানো কারো কাছে কি তা লুফে নেওয়া গাছের আম লুফে নেয়ার মতই?

ক্রিকেটের এই জটিল ও কঠিন তত্ত্বগুলি যদি আপনি বুঝেই ফেলেন তবে ক্রিকেটকে আপনি বলে দেবেন ‘এলিয়েন’স স্পোর্টস’! সাথে জানলে অবাক হতে পারেন খেলাটির এই জটিল কঠিন তত্ত্বগুলি ব্যাখ্যা করার জন্যে ‘স্পোর্টস সায়েন্স’ এর একটি শাখা ‘ক্রিকেট সায়েন্স’ ই খোলা হয়েছে! যে শাখাতে পড়ানো হয় বায়োমেকানিক্স, বায়োকেমিস্ট্রি, ফিজিক্স আর ফিজিক্যাল হার্মোনিক!

ভাবুন তাহলে, ডাউন দা ট্রাকে মারা তামিম ইকবালের হাঁকানো ছক্কা এতটাই রহস্যময়!

ক্রিকেট খেলতে লাগবে ‘মিস্ট্রিয়াস স্কিল’। গুগলি, কাটার, ইয়োর্কার এমনকি যদি মারতে চান গোল্ডেন ডাকও সেখানেও আপনাকে প্রয়োগ করতে হবে নিখাদ পদার্থবিজ্ঞান। এই ছোট পরিসরে পুরো ক্রিকেটের পদার্থবিজ্ঞান টুকু আমার পক্ষে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। তবে পুরোটুকু না হলেও ক্রিকেট-পদার্থবিজ্ঞানের দুনিয়াতে আমরা খানিকটা উঁকি দিয়ে তো আসতেই পারি।

ক্রিকেটের ‘জটিল-সহজ’ এই দুনিয়াতে উঁকি মারার আগে আমাদের জেনে ফেলা উচিত -‘ক্রিকেটে আসলে কী লাগে?’

প্রথমেই তাত্ত্বিক আলোচনায় না গিয়ে উপমার সাহায্যে ব্যাপারটি বলে নিই।

ক্রিকেটে আপনার লাগবে একজন অ্যাথলেটের সমান স্ট্যামিনা, একজন জিমন্যাস্টের সমান ফ্লেক্সিবিলিটি, একজন জ্যাভেলিন থ্রোয়ারের সমান স্ট্রেন্থ এবং সবিশেষে একজন গ্রান্ডমাস্টারের সমান মস্তিষ্ক!

কিন্তু এত কিছুর পরেও ‘ব্যাটল’ টা হয় ঐ ব্যাটসম্যান আর বোলারের মধ্যেই, বলা ভাল ব্যাটসম্যান আর বোলারের মনস্তত্ত্বের মধ্যে!

ইংলিশ ক্রিকেট একাডেমীর সাবেক অস্ট্রেলিয়ান কোচ রড মার্শ ক্রিকেট-বিজ্ঞানে সাইকোলজিকেই দেখেন সবচেয়ে বড় করে! ক্রিকেটের পদার্থবিজ্ঞান কে তিনি বলেছেন ‘ভাইটাল এলিমেন্ট ইউজিং সাইকোলজি’। অর্থাৎ তাঁর মতে ক্রিকেটের এই পদার্থবিজ্ঞানকে কাজে লাগাতেই চাই সাইকোলজি। যা হোক, ক্রিকেটে সাইকোলজির প্রয়োগ সংক্রান্ত বক্তব্য চর্বিতচর্বণ। আমি আর তাই সে হিসাবে যাচ্ছি না। সরাসরি ঢুকে পড়ছি পদার্থবিজ্ঞানে!

  • বোলার

বল খেলার আগে বল করা চাই! তাই বোলার দিয়েই শুরু করব। আস্তের আগে আবার জোর চাই! তাই শুরু করব ফাস্ট বোলার দিয়েই! ক্রিকেটে ফাস্ট বোলিং এর সক্ষমতাকে প্রথমেই ধরে নেওয়া হয় ‘ন্যাচারাল স্কিল’। এই ‘ন্যাচারাল স্কিল’ ধারীরাই পদার্থবিজ্ঞান টুকু ব্যাবহার করেন। অবশ্যি ‘হিউম্যান বডি মেকানিক্স’ বা ‘বায়োমেকানিক্স’ এর সহায়তায়ও এই ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করে ফেলা যায়। ক্রিকেটে ফাস্ট বোলিং এর ‘টেকনিক’ দুই রকম-

১) প্যারালাল ওয়ান টেকনিক
২) ফ্রন্ট ওয়ান টেকনিক

প্যারালাল ওয়ান টেকনিক

প্যারালাল ওয়ান টেকনিকের প্রচুর উদাহরণ পেতে আমাদের ঘুরে আসতে হবে আশির দশকেরও আগের জোয়েল গার্নারদের সময়ে, হাতের কাছে বড় উদাহরণ সাবেক উইন্ডিজ পেসার ফিদেল এডওয়ার্ডস। প্যারালাল ওয়ান টেকনিকে ‘হিপস’ এবং ‘শোল্ডার’ একই সমান্তরালে থাকে। বোলার যখন পা সামনে ফেলেন তখন সেই পায়ের হাঁটুসন্ধিতে ঐটুকু সময়ের জন্যে তাঁর দেহের ৫ গুণ বেশি ওজন ক্রিয়া করে। এতে নিচের অংশ যখন ভারী হয়ে যায় তখন গতি জড়তায় থাকা দেহের প্রায় বেশিরভাগ গতি কাজ করে উপরের অংশে, যে গতির জোরে পেস বোলাররা ভীষণ জোরে বল করে ফেলেন।

(জড়তা ব্যাপারটি হল কোন কিছু তার নিজস্ব অবস্থায় রাখার একটা প্রবণতা। যদি কোন বস্তু গতিতে থাকে তবে সেই বস্তু [মানে বস্তুর কণাগুলি] গতিতেই থাকতে চায়, আবার স্থির থাকলে স্থিতিতেই থাকতে চায়, এই প্রবণতাটিই হল জড়তা। প্রথমটি গতিজড়তা, দ্বিতীয়টি স্থিতিজড়তা)

এ তো গেল প্যারালাল ওয়ান টেকনিকের হাঁড়ির খবর। ফ্রন্ট ওয়ান টেকনিকের ক্ষেত্রে কি হয়?

ফ্রন্ট ওয়ান টেকনিক

ফ্রন্ট ওয়ান টেকনিক বুঝতে আমাদের তাকাতে হবে ব্রেট লি’র দিকে। এই টেকনিকে ফ্রন্ট ফুটই পেস বোলারের মূল সম্বল বা ‘ফোর্স পয়েন্ট’। ‘প্যারালাল ওয়ান’ টেকনিকে ওজন পায়ের হাঁটুসন্ধিতে ক্রিয়া করলেও ‘ফ্রন্ট ওয়ান’ টেকনিকে ওজন কাজ করে গোড়ালি বরাবর। গতি জড়তায় থাকার পরও রানআপ এর ঠিক শেষ মুহুর্তে বোলার নিজের হাতকেই ভিন্নভাবে গতি জড়তায় নিয়ে আসেন।

এই ব্যাপারটি বুঝতে চাইলে আমাদেরকে একটু কল্পনাশক্তির আশ্রয় নিতে হবে। মনে করুন, আপনি একটি সুতাতে একটি পাথর বেঁধে ঘোরাচ্ছেন। ঘূর্ণনকালে হঠাৎ যদি সুতো কেটে ফেলেন, পাথর কোনদিকে যাবে?উত্তর- কাটার সময় পাথর বৃত্তের যে বিন্দুতে ছিল, সেই বিন্দুতে অঙ্কিত স্পর্শক বরাবর।

ফ্রন্ট ওয়ান টেকনিকের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি এমনই। বোলার হাত সামনে থেকে এনে আরেকটি সার্কেল তৈরি করেন। ওজন গোড়ালীতে থাকার দরুণ এই সার্কেল তৈরিতে ওজন কোন প্রভাব ফেলে না। এবং হাত মাথার উপরে এনে পুরো একটি রোটেশন (আবর্তন) হওয়ার আগেই বোলার বল ছুড়ে দেন… শাই করে বল ব্যাটসম্যানের দিকে ছুটে যায়!

স্যুইং

ক্রিকেটে পদার্থবিজ্ঞান ব্যাবহারের সবচেয়ে সেরা দৃষ্টান্তটি হল ‘স্যুইং’। ‘অ্যাটমোস্ফেরিক প্রেশার’ আর ‘উইন্ড ফ্লো’ কে কাজে লাগানো এক দুর্ধর্ষ পদার্থবিজ্ঞান হল এই সুইং। ইন সুইংগারের ক্ষেত্রে বলের এক পাশ মসৃণ করে নেওয়া হয় আর আরেকপাশ ‘রাফ’ থাকে, এবং বলকে কাত করে ছোড়া হয়। বল যখন ‘অন দ্য এয়ার’ এ থাকে তখন বলের দুই পাশ থেকে বাতাস কেটে বের হয় এবং বলের পিছনের অংশে একটি ক্ষুদ্র পরিসরে ‘আনসেটলড ভ্যাকুয়াম স্পেস’ এর মত সৃষ্টি হয়। বলের দুই পাশ দিয়ে যে বাতাস কেটে বের হয় তা দুই রকম হয়, কখনও একই রকম হয় না। মসৃণ অংশে বাতাস দ্রুত কেটে গেলেও রাফ অংশে বাতাস বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে একটি চাপ ঐ অংশে কাজ করে। এই চাপ আর সামনের দিক থেকে আসা বাতাসের চাপে বল ‘বলের বাতাস কেটে বের হওয়া’ দিকে ঘুরে যায়। (বলটির গ্রিপ কাত করে নেওয়া হয়, আর বের হওয়া দিক বেশির ভাগ সময় গ্রিপের প্যারালালে হয়!)

ইনসুইংগারের চেয়েও ভয়ংকর পদার্থবিজ্ঞান ব্যাবহৃত হয় রিভার্স স্যুইংয়ে। রিভার্স স্যুইংয়ের  ক্ষেত্রে বলের দুই দিকই ‘রাফ’ থাকে। এক্ষেত্রে বল যখন বাতাসে থাকে তখন বলের পাশ দিয়ে বাতাস কেটে বের হওয়ার সময় বলের দুই দিকেই বাধাপ্রাপ্ত হয়। এবং সামনের দিক থেকে বাতাসও একটি বল প্রয়োগ করে। এতে কি হয়? ইনিসুইংগারে আমরা দেখেছিলাম বল সেদিকেই মুভ করে যেদিকে গ্রিপ থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে বল মুভ করে গ্রিপ ভ্যাকুয়াম অঞ্চল এর সাথে যে এংগেল তৈরি করে একই এংগেল বিপরীত পাশে তৈরি করলে যেদিক বরাবর ভেক্টর হয় সেদিকে! ব্যাপারটি বোঝার জন্যে একটি গাছ কল্পনা করা যাক। ধরা যাক গাছের কান্ড থেকে দুদিকে দুটি ডাল গজিয়েছে। বাম পাশের ডাল কান্ডের সাথে যে কোণ তৈরি করে, ডান পাশের ডালও ঐ একই কোণ তৈরি করে। এখন বাম পাশের ডালটি যদি বলের গ্রিপ হয়, ডান পাশের ডালটি তবে রিভার্স সুইং করে বল ধেয়ে যাবার দিক!

  • ব্যাটসম্যান

আধুনিক ক্রিকেট নাকি ব্যাটসম্যানের খেলা। মার-মার কাট-কাট ক্রিকেটের এই যুগে ডি ভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ছক্কাতে আমরা বিনোদিত হই। এই যে বল আসল, ব্যাটসম্যান ধুম-ধাড়াক্কা শট খেললেন, ব্যাপারটি দেখা যতটা সহজ করা মোটেও ততটা না।

ধরা যাক, একজন বোলার ১৪৫ কিমি/ঘন্টা তে বল ছুড়ল। মিটার/সেকেন্ড এ তা ৪০.২৭৭৭৭৭৭৮ মিটার/সেকেন্ড! ক্রিকেট পিচের দৈর্ঘ্য ২০.১১৭০৪৪৬২ মিটার!

বল ছোঁড়ার পর বল এ মাথা থেকে ও মাথা যেতে তাহলে সময় লাগবে ১ সেকেন্ডেরও কম- ০.৪৯৯৪৫৭৬৫৯৬ সেকেন্ড! এই যে সময় সেটা বল ছোড়ার পর, বল পিচে পড়ার পর নয়। অর্থাৎ, ব্যাটসম্যানকে তড়িৎ গতিতে কি শট খেলবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়!

এখন, ০.৫ সেকেন্ডেরও কম সময়ে ব্যাটসম্যান কিভাবে এই সিদ্ধান্ত নেন? এই ব্যাপারটির ব্যাখ্যা দেয় বায়োমেকানিক্স।

আসলে, এই সংক্রান্ত শুধু ব্যাখ্যাই নয়, আছে আস্ত একটা এক্সপেরিমেন্ট! পরীক্ষাটি করেন ইংল্যান্ডের লিভারপুলের স্পোর্টস সায়েন্টিস্ট মার্ক উইলিয়ামসন! তিনি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে একজন ব্যাটসম্যানকে দ্রুত গতির বলের সম্মুখীন করেন।শুধু তাই না, মার্ক উইলিয়ামসন ব্যাটসম্যানের হাত-পা – মস্তিষ্ক সহ বিভিন্ন অর্গানে সেন্সর স্থাপন করেন। এতে দেখা যায়, ব্যাটসম্যান কি শট খেলবেন তা ৯০ শতাংশ ঠিক করে ফেলেন বোলারের রানআপ নেওয়ার সময়! বাকি ১০ শতাংশ পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঠিক করেন!

আরো পড়ুন

এই এক্সপেরিমেন্টে একাধিক ব্যাটসম্যান ব্যাবহার করা হলে উঠে আসে আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য! ব্যাটসম্যান শট খেলার সময় তাঁর ‘আই-সেন্সর’ তিনদিকে কাজ করতে পারে। বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান বল কে ফলো করা শুরু করেন বল ছোড়ার পরমুহূর্ত থেকে। অল্পসংখ্যক ব্যাটসম্যানই বোলারের আঙুলের গ্রিপ থেকে বল কে ফলো করা শুরু করেন। খুবই অল্পসংখ্যক ব্যাটসম্যান তীক্ষ্ণভাবে বোলারের আঙুলের দিকে লক্ষ করেন। মার্ক বলেন, শেষের ক্যাটাগরির ব্যাটসম্যানের দক্ষতা অন্য সবার চেয়ে বেশি হয়। পরে দেখা যায়,শচীন টেন্ডুলকার তীক্ষ্ণভাবে গ্রিপ লক্ষ করতেন।

এ তো গেল ব্যাটসম্যান-বোলারের কেচ্ছা! কিন্তু এই যে ক্রিস সাহেব লম্বা লম্বা ছয় মেরে বল-কে স্টেডিয়াম ছাড়া করেন, এর পেছনে? এর পেছনেও আছে পদার্থবিজ্ঞান! পদার্থবিজ্ঞানে এই ব্যাপারটিকে বলা হয় ‘প্রজেক্টাইল’ বা প্রাস! সাধারণত পিচ থেকে বাউন্ডারি লাইনের গড় দূরত্ব ৭৫ মিটার!

যদি একেবারে বাউন্ডারিতেই ছক্কা পড়তে হয় তবে ব্যাটসম্যানকে স্ট্রোক খেলতে হবে ২৭.১১ মিটার / সেকেন্ডে।

[ এই ক্যালকুলেশনে আমি ধরে নিয়েছি ব্যাটসম্যান জ্যাভেলিন থ্রোয়ারের মত সর্বোচ্চ ‘হরিজন্টাল রেঞ্জ’ চান তাই ৪৫ ডিগ্রি কোণে স্ট্রোক খেলেছেন]

এখন এই যে প্রজেক্টাইলের একটা সোজা হিসাব দেখালাম, এই ব্যাপারটার ফিজিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশন কি? ব্যাটসম্যান যখন বল কে হিট করেন তখন এমন একটা বেগে তা করতে চান যেন বলের উপর প্রতিনিয়ত এপ্লাইড অভিকর্ষণ ত্বরণ কে তা উপেক্ষা করে সীমানায় পৌছাতে পারে। আর এই বলের উলম্ব উপাংশ অভিকর্ষণ ত্বরণ এর বিরুদ্ধে ক্রিয়া করতে পারে আর আনুভূমিক উপাংশ বলকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে!

  • উইকেটরক্ষক

ক্রিকেটে উইকেটের পেছনে থাকেন উইকেটরক্ষক! প্রবাদ আছে, একজন উইকেটকিপার তৈরি হন না, একজন উইকেট কিপার জন্মগ্রহণ করেন। ২২ গজে ব্যাটসম্যানের কাছে বল পৌছাতে যদি ০.৫ সেকেন্ডের কম সময় লাগে তবে ব্যাটসম্যানের ব্যাটে বল হিট করার পর উইকেটরক্ষকের কাছে পৌছাতে তা কত কম সময় নেবে আমরা কি তা আন্দাজ করতে পারছি? উইকেট-কিপার তাহলে কিভাবে এত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন? আমাদের মানব-মস্তিষ্ক তো অন্তত ০.১ সেকেন্ডের কম কিছু রিড করতে পারে না।

বায়ো-মেকানিক্সের পরীক্ষায় দেখা গেছে, উইকেট কিপার তার মস্তিষ্কে কিছু পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম সেট করে রাখেন। শুধু তাই নয়, ‘করণীয়’ স্থির তিনি করে ফেলেন বলের পিচে পড়ার আগে থেকেই, ব্যাটসম্যানের মুভমেন্ট আর বলের গতির উপর অনুমান করে!

ক্রিকেট পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ এখানেই শেষ হল। ছোট্ট পরিসরে সব কিছু ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি বলে আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু এখন কি ক্রিকেটকে ‘এলিয়েন’স স্পোর্টস’ মানতে কারো আপত্তি আছে?

লেখক পরিচিতি

আদ্যোপান্ত স্টোরিটেলার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link