আবদুল্লাহ শফিক, পাকিস্তানের আশার প্রদীপ

শুরুতেই হোচট খেয়ে জয়ের আশা যেন আরও ক্ষীণ হতে শুরু করে। তবে আবদুল্লাহ শফিক একটু একটু করে জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। 

ফখর জামানের অফ ফর্ম দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল পাকিস্তানের কপালে। সেই দুশ্চিন্তার সমাধান হয়েই সামনে এলেন আবদুল্লাহ শফিক। গোটা পাকিস্তান শিবিরে স্বস্তির সঞ্চার ঘটালেন ডানহাতি এই ব্যাটার। বিশ্বকাপের মহামঞ্চেই নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পেলেন আবদুল্লাহ শফিক।

পাকিস্তানের ভয়ংকর পেস আক্রমণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েও তাণ্ডব চালিয়েছে শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। পাকিস্তানকে ছুড়ে দেয় ৩৪৫ রানের বিশাল টার্গেট। এমন সুবিশাল লক্ষ্য পেরিয়ে জয় পাওয়াটা ভীষণ কঠিন কাজ। শুরুতেই হোচট খেয়ে জয়ের আশা যেন আরও ক্ষীণ হতে শুরু করে। তবে আবদুল্লাহ শফিক একটু একটু করে জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।

শ্রীলঙ্কার দু’জন ব্যাটার এদিন সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। তাদের ব্যাটে ভর করেই শ্রীলঙ্কা রানের পাহাড়ে চড়ে বসে। সেই চূড়া জয়ে পাকিস্তানের টপ অর্ডারের বাড়তি দায়িত্ব ছিল। কিন্তু ১৬ রানে ইমাম-উল হক ও ৩৭ রানে অধিনায়ক বাবর আজম ফিরে যান প্যাভিলনে। তাতে বরং চাপেই পড়ে যায় পাকিস্তান।

সেই চাপ সামলে নেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন শফিক। মাত্র ৫ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ার শফিকের। তাছাড়া অভিজ্ঞ ফখরের জায়গায় খেলতে নামার চাপ তো ছিলই। কিন্তু শফিক সব চাপকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন। খেলে ফেললেন নিজের ক্যারিয়ারের অন্যতম অনবদ্য এক ইনিংস।

প্রাথমিক সেই ধাক্কা সামলে নিয়েছেন দারুণভাবে। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সঙ্গী করে নিজের ইনিংস বড় করতে থাকেন। সেই সাথে পাকিস্তানের রানের চাকাও সচল রাখেন শফিক। দেখে বোঝারই উপায় নেই ক্যারিয়ারের পঞ্চম ম্যাচ খেলতে নেমেছেন তিনি। তার যেন সেসবে ভ্রুক্ষেপ নেই। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

বলের মেরিট বুঝে শট খেলেছেন। বাজে বলকে বাউন্ডারি ছাড়া করতেও দ্বিধাবোধ করেননি তিনি। এদিনে শ্রীলঙ্কার অন্যতম সেরা বোলার দিলশান মাদুশাঙ্গাকে ডিপ মিড-উইকেট অঞ্চল দিয়ে চার মেরে পৌঁছে যান সেই ম্যাজিকাল ফিগারে। এরপর ব্যাটিংয়ের গিয়ার বাড়িয়ে দিলেন আবদুল্লাহ শফিক।

৯৭ তম বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে দেখা আবদুল্লাহ শফিক ব্যাট চালিয়ে যেতে থাকেন সমান গতিতেই। তবে ১০৩ তম বলে তাকে থামতে হয়। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা বদলি ফিল্ডার দুশান হেমান্তা দূর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন। ১১৩ রান করা আবদুল্লাহ শফিক পরিণত হন মাথিশা পাথিরানার উইকেটে।

তবে আউট হওয়ার আগে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সাথে তিনি জয়ের ভীতটাই গড়ে দিয়ে যান। শফিক-রিজওয়ানের ১৭৬ রানের জুটিতে ভর করেই নিভু নিভু জয়ের প্রদীপের আলো প্রবল হয়। আবদুল্লাহ শফিকই যে জুটির সবচেয়ে বড় অংশীদার।

একেবারেই স্বল্প অভিজ্ঞতা নিয়ে শফিক বিশাল রান তাড়া করতে নেমেছিলেন। তবে সাদা পোশাকের টেম্পারমেন্টের সাথে সাদা বলের চাহিদার দারুণ মিশেল ঘটাতে সক্ষম হন শফিক। আর তাতেই পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা যেমন ঘুচে যায়, তেমনি খুলে যায় নতুন উষার দুয়ার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...