মিস্টার আন্ডাররেটেড

১৪ বছর পর মুলতানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই মাঠেই ১১৬ রানের ইনিংস খেলেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইয়াসির হামিদ। ১৯ বছর ধরে সেটি ছিল ওয়ানডেতে মুলতানে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সেই রেকর্ড ভেঙে নিজের নামে করেছেন হোপ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ইনিংসের পর মুলতানে এখন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক তিনি। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে মুলতানে গড়েন সেঞ্চুরির কীর্তি।

স্যার ভিভ রিচার্ডস: অ্যান্টিগার ছোট্ট এক দ্বীপ থেকে উঠে এসে ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করেছিলেন। ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তারকার নাম আসলে প্রথম কাতারে জায়গা করে নিবেন তিনি। ওয়েস্ট ক্রিকেটের কিংবদন্তি এই তারকা নিজের নামটা সফলতার চূড়ায় রেখে গেছেন। ভিভ রিচার্ডসের পাশে কোনো রেকর্ডে নাম লেখানোটা নেহায়েত চাট্টিখানি বিষয় নয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম ৪ হাজার রানের মালিক তিনি; বিশ্বব্যাপি এই তালিকায় তিনি ছিলেন তিনে। ভিভের সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন আরেক ক্যারিবীয় তারকা।

একসময় ক্রিকেট দুনিয়া শাসন করা সেই ভয়ংকর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটা নেই। নিকোলাস পুরান, রভম্যান পাওয়েলদের এই দলটা এখন ক্রিকেটের খর্বশক্তির এক দল। একসময়ের অপ্রতিরোধ্য এই দলটাই এখন মুড়ি মুড়কির মত ভেঙে পড়ে প্রতিপক্ষের সামনে। এই মুখ থুঁবড়ে পড়া দলটার আন্ডাররেটেড এক পারফর্মার শাই হোপ।

১৪ বছর পর মুলতানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ২০০৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই মাঠেই ১১৬ রানের ইনিংস খেলেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার ইয়াসির হামিদ। ১৯ বছর ধরে সেটি ছিল ওয়ানডেতে মুলতানে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সেই রেকর্ড ভেঙে নিজের নামে করেছেন হোপ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ইনিংসের পর মুলতানে এখন ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক তিনি। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে মুলতানে গড়েন সেঞ্চুরির কীর্তি।

বর্তমান সময়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে আন্ডাররেটেড পারফর্মার এর নাম জিজ্ঞেস করলে আপনার উত্তর কি হতে পারে?

লাইমলাইট নেই, মাতামাতি নেই, অন্যান্য ক্রিকেটাদের মত সবসময় আলোচনায় থাকেন – এমনও না। কিন্তু দিব্যি তিনি পারফর্ম করে যাচ্ছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে মুলতানে করেছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। আর এই সেঞ্চুরির পথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম চার হাজার রানের রেকর্ডে ভিভ রিচার্ডসের পাশে নাম লেখান হোপ। ১৯৮৫ সালে ৮৮ ইনিংসে এই রেকর্ড নিজের নামে করেন ভিভ। সেসময় তিনি ছিলেন ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রততম চার হাজার রানের মালিক।

পাকিস্তানের কাছে প্রথম ওয়ানডেতে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের বাকিদের ব্যর্থতার দিনে শামরাহ ব্রুকসের সাথে ক্রিজে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান হোপ। ১৩৪ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় খেললেন ১২৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি। এই সেঞ্চুরির পথে তিনি উঠে এসেছেন ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির তালিকায় চারে।

এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে ৯৩ টা ওয়ানডে খেলেছেন। ৮৮ ইনিংস ব্যাট করে ৪০২৬ রান করেছেন হোপ। আছে ১২ সেঞ্চুরি ও ২০ ফিফটি। তবে এসব ছাপিয়ে শাই হোপের গড়টা চোখ কপালে তোলার মত। ওয়ানডেতে তিনি গড়ে ৫২.২৮ রান করেছেন।

ওয়ানডেতে বর্তমান সময়ে শাই হোপের অবস্থান স্পষ্ট করতে এই পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। আলোচনায় যেমন থাকেন না, তেমনি সমালোচনাও নেই। ক্রিকেট মাঠে এ যুগের নিপাট এক ভদ্রলোক তিনি। তবে, হোপের এই পরিসংখ্যান কিংবা রেকর্ডেও প্রশ্ন তোলার জায়গা আছে। স্ট্রাইক রেট? হ্যাঁ, মাত্র ৭৫.৪৩ স্ট্রাইক রেটে তিনি ওয়ানডেতে ৪ হাজারের বেশি রান করেছেন।

ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা পাওয়ার হিটিং কিংবা ঝড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ পরিচিত হলেও এ দিক থেকে বিপরীত হোপ। উইকেট বাঁচিয়ে একপ্রান্তে তিনি রান করতে থাকেন। মূলত দলে অ্যাংকরের ভূমিকাতেই থাকেন তিনি। স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনার জায়গা থাকলেও ভঙ্গুর প্রায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটায় অন্তত ওয়ানডে ফরম্যাটের সেরা তারকা তিনি – সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...