সাত নম্বর পজিশন নিয়ে দ্বিধান্বিত সাকিবও!

দরজায় কড়া নাড়ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। মাস পাঁচেকও আর বাকি নেই। সেই লক্ষ্যে দল সাজানোর এখনই মোক্ষম সময়। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এরই মধ্যে সিংহভাগ পজিশনের জন্য এক প্রকার দল চূড়ান্ত করার পথেই আছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

তবে বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিশ্বকাপ দলে এখনো চিন্তার বিষয় ৭ নম্বর পজিশন। ফিনিশিং রোলে শেষ পর্যন্ত কার উপর আস্থা রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট, তা নিয়ে এখনো ‘পর্যবেক্ষণ’ নামক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর্যায়েই আছে।

মূলত এই পজিশনে বিশ্বকাপ দলে জায়গার দাবিদার বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। আর এতেই মধুর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। দলের সেরা তারকা, সাকিব আল হাসানও মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে একটি জায়গার দৌঁড়ে থাকা পাঁচ সাতজন ক্রিকেটারের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়া মোটেই সহজ কাজ হবে না।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষের পরদিন ইংল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে সাকিব এ নিয়ে বলেন, ‘আমি আসলে নির্বাচক না। কিংবা সিদ্ধান্ত নেওয়ারও কেউ নই। আমার জন্য আসলে বলা মুশকিল। তবে দল নিয়ে আমি খুশি এবং আমি নিশ্চিত যারাই এই দলে থাকবে তাঁরা তাদের জায়গা থেকে ১৭ কোটি মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করবে এবং একই সাথে বাংলাদেশের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে।’

৭ নম্বর পজিশন নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করে অভিজ্ঞ এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে  যেটা মনে করি, এটা একজনের জন্য চূড়ান্ত কোনো জায়গা নয়। আরো অনেকেই এই পজিশনে খেলার জন্য বিবেচনায় আছে। সবাই ভাল পারফর্ম করছে। যেমন আফিফ, মোসাদ্দেক, সোহানরা ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ খেলছে। আবার রিয়াদ ভাইও ছন্দে আছেন। এ দিকে দলে মিরাজ ওখানে ব্যাট করেছে, স্কোয়াডে রাব্বি আছে। অনেক অপশন। তাই সিদ্ধান্তটা মোটেই সহজ হবে না। আমি নিশ্চিত বিশ্বকাপের জন্য কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ মাথায় রেখে নির্বাচক, অধিনায়ক, কোচ যথাযথ সিদ্ধান্তটাই নেবে।’

৭ নম্বর পজিশনে আইরিশদের বিপক্ষে শেষ সিরিজে খেলেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। খুব একটা খারাপ করেননি। তবে এখনই তাঁর জায়গাটা চূড়ান্ত হচ্ছে না। অধিনায়ক তামিম ইকবালই জানিয়েছেন, এখনো অনেকেই বিবেচনায় আছেন।

তবে এই মুহূর্তে সাতে খেলার অভিজ্ঞতায় আফিফ, মিরাজের চেয়ে কেউ খুব একটা এগিয়ে নেই। মুশফিক ছয়ে খেলার কারণে অবশ্য সাতের জন্য বিবেচনা করা হতে পারে রিয়াদকে। একই সাথে, বিশ্বকাপের সম্ভাব্য স্কোয়াডে এই রোলে জায়গা পাওয়ার দৌঁড়ে রয়েছেন রাব্বি, সোহানরাও। যদিও এ দুই ক্রিকেটার একাদশে সুযোগই পেয়েছেন কম।

সাকিব অবশ্য এশিয়া কাপের আগেই সাত নম্বরের পজিশনের জন্য চূড়ান্ত কাউকে দলে দেখতে চান। কারণ তাঁর মতে, যাকে ঐ পজিশনের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে সে যেন বিশ্বকাপের আগেই একটা প্রস্তুতি সেরে নিতে পারে।

এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বকাপের দল নিয়ে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। কোথায় ভুল বা ঠিক হচ্ছে, এসব কিছুই বিশ্বকাপ বা এশিয়া কাপ থেকে ঠিক হওয়া শুরু হবে। আমাদের সামনে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচও নেই। আমি নিশ্চিত কোচ, অধিনায়ক এ ব্যাপারগুলো সম্পর্কে অবগত। কিভাবে দলের আরো উন্নতি ঘটানো যায়, সেই লক্ষ্যেই তাদের ভাবনা থাকে। আসলে কোনো অধিনায়কই দলের জন্য খারাপ চায় না। সিদ্ধান্ত ঠিক কিংবা ভুল হতেই পারে। তবে তাদের ইন্টেনশন কখনোই খারাপ থাকে না।’

উপমহাদেশের কন্ডিশন আর নিজেদের শক্তিমত্তা বিবেচনায় আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বড় সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই। এ বিশ্বকাপ নিয়ে বেশ আশাবাদী সাকিব নিজেও।

বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ আসতে তিনি বলেন, ‘আইসিসির টুর্নামেন্টে কন্ডিশন সব সময় স্পোর্টিংই থাকে। সব দলের জন্যই ব্যাপারগুলো হবে একই রকম। প্রত্যাশিত ফল পেতে হলে, আমাদের দল হয়ে ভাল খেলতে হবে। আগের বিশ্বকাপে কিন্তু আমাদের ভালো সুযোগ ছিল। কিন্ত সামান্য কিছু কারণে তা হয়নি। এবার ঐ ভুলগুলো করা যাবে না। অন্যান্য দলগুলো এই সময়কালে  নিজেদের জায়গা থেকে উন্নতি করেছে। তাদের সাথে তাল মেলাতে হলে আমাদেরও উন্নতি করতে হবে।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link