সেরা অধিনায়কের হাতেই নেতৃত্ব

না, কোন চমক নয়; সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে যেই নামটা তিনিই হলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। লাল-সবুজের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসানকেই নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে; আসন্ন এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপে তাঁর অধীনেই অংশ নেবে টিম বাংলাদেশ।

তামিম ইকবালের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকেই ক্রিকেটাঙ্গনে শুরু হয়েছিল গুঞ্জন; নতুন অধিনায়ক কে হবেন সেটা নিয়ে চলেছে বিস্তর আলোচনা। তবে ভেতরে ভেতরে একটা কথাই বেশি শোনা যাচ্ছিল, সাকিব আল হাসানই পেতে যাচ্ছেন ওয়ানডে দলের কাপ্তানি।

যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ কিছুদিন; বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সাথে দীর্ঘ আলাপের পরেই তাঁর হাতে আর্মব্যান্ড তুলে দিয়েছে টিম ম্যানেজম্যান্ট।

অভিজ্ঞতা নাকি তারুণ্য, অধিনায়ক নির্বাচনে এই একটা প্রশ্নে বারবার আটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২০১১ বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেয়া সাকিব নাকি ভবিষ্যত বাংলাদেশের অংশ লিটন, মিরাজদের কেউ – কাকে দেয়া যেতে পারে ক্যাপ্টেন্সি সেই ভাবনা ভাবতে হয়েছে বোর্ডকে। তবে শেষমেশ দ্বিতীয়বারের মত টাইগারদের দায়িত্ব উঠলো সাকিবের কাঁধে।

জানা গিয়েছিল, লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়ক হতে চান সাকিব আল হাসান। বিসিবিও চেয়েছে অন্তত দুই বছরের জন্য কাউকে অধিনায়ক নির্বাচিত করতে। তাই তো দুইয়ে দুইয়ে চার মেলায় আবারো বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের নিয়মিত ক্যাপ্টেন হলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

টেস্ট আর টি-টোয়েন্টিতে ইতোমধ্যে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বে আছেন সাকিব আল হাসান, ওয়ানডে অধিনায়ক হওয়ায় তিন ফরম্যাটে এক নেতৃত্বের যুগে ফিরে গেলো বাংলাদেশ দল। ফলে এই তারকা ক্রিকেটারের জন্যও পরিকল্পনা করা সহজ হবে; কেননা টি-টোয়েন্টি দলের সাথে পঞ্চাশ ওভারের দলের খুব একটা পার্থক্য নেই, তাই সাকিবও সহজে মানিয়ে নিতে পারবেন।

যদিও তিন ফরম্যাটে সাকিব আল হাসান ক্যাপ্টেন থাকবেন কি না সেটা নিয়ে এখনো ভাবছে বোর্ড কর্তারা। সাকিবের বয়স আর টেস্টের প্রতি অনাগ্রহ বিবেচনা করে তাঁকে সাদা পোশাকের নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হতে পারে; সেক্ষেত্রে লিটন দাস পেতে পারেন টেস্ট ফরম্যাটের দায়িত্ব।

অবশ্য নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ মিশনগুলো সাদা বলেই – এশিয়া কাপ, ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই টেস্ট দলটা তরুণ লিটন, মিরাজদের হাতে তুলে দিয়ে সাকিবকে রঙিন পোশাকে পূর্ণ মনোযোগী হওয়ার সুযোগ দিলে লাভবান হবে টিম টাইগার্স।

বড় মঞ্চে বড় কিছু করার জন্য একজন অধিনায়ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আর বর্তমান বাংলাদেশ দলে অধিনায়ক হিসেবে সাকিবই সেরা পছন্দ, বাংলাদেশ ক্রিকেট তো বটেই বিশ্ব ক্রিকেটেই এই অলরাউন্ডারের মত ক্রিকেট-মস্তিষ্ক কমই আছে। সামনে থেকে পারফর্ম করা, আগ্রাসী মনোভাব, তাৎক্ষণিক গেমপ্ল্যানে পরিবর্তন – আধুনিক ক্রিকেটে দলকে এগিয়ে নিতে যা যা দরকার সবটুকুই আছে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডারের মাঝে।

কেন সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সেটার প্রমাণ বিশ্ব মঞ্চে তাঁর পারফরম্যান্স। বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরেই তো ৬০৬ রান এবং ১১ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি; চার বছর পর ক্যাপ্টেন হয়েই বিশ্বকাপ খেলবেন এই বামহাতি। ভারতের মাটিতে নিজের পুরনো রেকর্ডকে নিশ্চয় ছাপিয়ে যেতে চাইবেন তিনি।

পুরো ড্রেসিরুমের আস্থা আছে সাকিব আল হাসানের ওপর, আস্থা আছে পুরো বাংলাদেশের। আস্থার প্রতিদান সাকিব দিবেন সেই বিশ্বাসটুকুও আছে সবার। এখন শুধু মাঠে নামার অপেক্ষা, নতুন বাংলাদেশকে দেখার অপেক্ষা; কেননা সাকিবের নেতৃত্বে দল মানেই অনন্য কিছু, অনবদ্য কিছু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link