চার ম্যাচের চারটি হেরেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। একাদশ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে টেবিলের তলানিতে রাজধানীর দল। দলটির এমন দশা আখেরে বাংলাদেশের ক্রিকেটেরই বরং ক্ষতি করছে। আর শাকিব খানকে ভাবতে বাধ্য করছে ‘কিতার মধ্যে টাকা ঢালতাছি আমি?’ আর এর দায় দলটির থিংক ট্যাংকদের। প্রশ্ন জাগতেই পারে, কিভাবে?
বিনোদন জগতে দেশের সবচেয়ে বড় তারকা শাকিব খান। তর্ক করবারও সুযোগ সম্ভবত নেই। এত জনপ্রিয় একজন চরিত্রের ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হওয়া ভীষণ ইতিবাচক। ক্রিকেট আর বিনোদনের মিশেলে ক্রিকেটের বরং উন্নতি সাধনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
কেননা অর্থের কমতি তো ঢাকা ক্যাপিটালস করছে না। তাছাড়া ক্রিড়া জগতের সাথে বিনোদনের সংমিশ্রণে দুই ঘরনার দর্শকদেরও মেলবন্ধন ঘটে। সেক্ষেত্রে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়ে, সেই সাথে বাড়ে আর্থিক লাভবান হওয়ার সুযোগও। সেটা খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয়।
দেশের ঘরোয়া কাঠামোতে খেলোয়াড়দের আর্থিক উপার্জনের মাত্রা বা সুযোগটা অন্য আর কয়েকটা দেশের মত নয়। আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত হলেই তো বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের উঠে আসার সম্ভাবনা বাড়ে। সেদিক থেকে শাকিব খানের সংযুক্তি ক্রিকেটকে একটা বাড়তি ‘পুশ’ দেয় সবদিক থেকেই।
কিন্তু এমন লাগাতার বাজে পারফরমেন্সে নিশ্চয়ই সাকিব খানের মনে সংশয়ের জন্ম দেয়। তিনি হয়ত পরবর্তীতে ক্রিকেটের সাথে নিজের সম্পৃক্ততা ছিন্ন করবার বিষয়েও ভাবতে পারেন। আর তেমনটি যেন না ঘটে সে পরিকল্পনার ছকটা আঁকতে হতো টিম ম্যানেজমেন্টের। সেখানেই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি-বর্গরা।
চাহিদা মেটানোতে কৃপণতা অন্তত করছে না ক্যাপিটালস ফ্রাঞ্চাইজির মালিক পক্ষ। দেশের তারকা ক্রিকেটারদের ভিড়িয়েছে। তাছাড়া ভিনদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যারা এভেইলেভল রয়েছেন তাদেরকে দলে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। জেসন রয়ের মত তারকা ব্যাটারকে উড়িয়ে এনেছে দলটি।
কিন্তু খেলোয়াড় স্রেফ উড়িয়ে আনলেই তো হয় না। থাকা চাই যথাযথ পরিকল্পনা। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে চারজন টপ অর্ডার ব্যাটার নিয়ে খেলেছে দলটি। মিডল অর্ডারে হাল ধরার মত যথেষ্ট বিকল্প ছিল না তাদের হাতে। টপ অর্ডার ব্যাটারদের মাইন্ড সেটআপ চাইলেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
তাছাড়া বোলিং আক্রমণেও রয়েছে যথেষ্ট দুর্বলতা। যদিও ড্রাফটের পর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল স্কোয়াড নিয়ে সন্তুষ্টির কথা। কাগজে কলমে সন্তুষ্ট হওয়ার মতই দল। কিন্তু মাঠের ক্রিকেটে অগোছালো পরিকল্পনা ঢাকাকে রেখেছে টেবিলের তলানিতে। প্রায় প্রতিটা খেলোয়াড় ব্যক্তিগতভাবে যথেষ্ট ভাল। কিন্তু ব্যক্তিগত নৈপুণ্যই যদি শেষ কথা হতো, তাহলে নিশ্চয়ই টিম ম্যানেজমেন্টের প্রয়োজন হতো না।
আর তাদের ব্যর্থতা নিরুৎসাহিত করবার সমস্ত খোরাক জোগাচ্ছে ঢাকার ফ্রাঞ্চাইজিকে। আর তাতে করে পরের মৌসুমেই শাকিব খান ও তার পার্টনাররা দল চালাতে অপারগতা জানালে নিশ্চয়ই অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আর সেখানেই তো এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পিছিয়ে যাবে দেশের ক্রিকেট।