ব্যাটে-বলে সাকিবের তাণ্ডব অব্যাহত

বয়সটা ৩৬, অথচ দেখে বোঝার উপায় কই। এ দেশ থেকে ওই দেশ, এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশ – ছুটে বেড়ান বিরামহীন কিন্তু ক্লান্তির কোন ছাপ নেই। ম্যাচের পর ম্যাচ খেলে যান, অফ ফর্মের দেখা পাওয়াই ভার। সাকিব আল হাসান এমনই; পারফরম্যান্স, ফিটনেস কিংবা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সবকিছুতে এখনো তারুণ্যের ছোঁয়া।

লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগেও সাকিব আল হাসান সেটা প্রমাণ করে চলছেন। ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং সবকিছুতেই তাঁর নিবেদন শতভাগ; দেখে ভ্রম হতে পারে, ২৬ বছরের যুবক নাকি। এই যেমন বি-লাভ ক্যান্ডির বিপক্ষে তিন বিভাগেই সমানতালে নিজের মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা গালি টাইটান্সের পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন সাকিব আল হাসান। দলীয় রান তখন ৯.২ ওভারে মাত্র ৬০। অথচ নির্ধারিত বিশ ওভারে দলের রান পৌঁছে গিয়েছে ১৮০ তে; আর এর পিছনে মূল ভিত গড়ে দিয়েছে সাকিব ও সেইফার্টের ৯৫ রানের বিধ্বংসী এক জুটি।

ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়া এই জুটিতে সাকিব আল হাসানের অবদান ২১ বলে ৩০ রান। কার্যকরী এক ইনিংস খেলার পথে কোন চার না মারলেও দুইটি বিশাল ছয় এসেছে সাকিবের ব্যাট থেকে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটেও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত, ফলে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারেনি ক্যান্ডির বোলার ও ফিল্ডাররা।

আঠারোতম ওভারে রান আউট হয়ে আউট হওয়ার আগে কাজের কাজটা করে গিয়েছেন সাকিব আল হাসান। গালি টাইটান্সের ব্যাটিংয়ে নায়ক যদি হন টিম সেইফার্ট, নিশ্চিতভাবেই পার্শ্বনায়কের স্বীকৃতি পাবেন সাকিব।

তবে পার্শ্বনায়ক হয়েই সন্তুষ্ট হননি নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার। তাই তো বল হাতেও দাপট দেখিয়েছেন তিনি। নিজের প্রথম ওভারেই পাক তারকা আসিফ আলীর উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব, আর খরচ করেছেন মাত্র ২ রান। পরের ওভারেও নিয়ন্ত্রিত লাইন লেন্থে বোলিং করেছেন, দিয়েছেন মাত্র চার রান।

ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারেও সমান সংখ্যক রান দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। যদিও প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছেন আরেকজন ব্যাটসম্যানকে। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছে বি-লাভ ক্যান্ডি। শেষপর্যন্ত তাই আর বল হাতে নিতে হয়নি সাকিবকে; সবমিলিয়ে তিন ওভার হাত ঘুরিয়ে ১০ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট শিকার করেছেন তিনি।

পুরোপুরি নিখুঁত অবশ্য ছিলেন না সাকিব আল হাসান। ভাল শুরু পেলেও বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন ইনিংস বড় করতে, এছাড়া কভার পয়েন্টে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার ক্যাচ মিস করেছেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার। তবে সাকিবের মত তারকা যে শীঘ্রই এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠবেন সেই আশা করাই যায়।

গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ, লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ কিংবা জাতীয় দল – সাকিব আল হাসান আছেন নিজের সেরা ছন্দে। বিশ্বকাপ আর এশিয়া কাপের আগে দলের নিউক্লিয়াসের এমন মূর্তি টাইগার ভক্তদের নিশ্চিতভাবেই প্রত্যাশার পারদ উপরে তুলবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link