নিরব শান্তর ব্যাট, সরব ব্যর্থতার গল্প

সাদা পোশাকে শেষ ছয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ২০ রান। যার সব ক’টি ম্যাচেই অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রঙিন পোশাকে জোয়ার-ভাটার মত রান এলেও সাদা পোশাকে কেমন এক নিস্তব্ধতা। নিজের ছায়ায় বিলীন হচ্ছেন যেন।

নাজমুল হোসেন শান্ত শ্রীলঙ্কা সিরিজের মধ্য দিয়ে শুরু করেছেন নতুন দায়িত্ব। তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে যাত্রার হয়নি শুভ সূচনা। হারতে হয়েছিল টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তবে ওয়ানডে সিরিজে আবারও ফিরে আসে শান্তর দল। কিন্তু টেস্ট সিরিজে যেমন অনুজ্জ্বল শান্তর ব্যাট, তেমনই অন্ধকারাচ্ছন্ন বাংলাদেশের পারফরমেন্স।

এর পেছনে শান্তর ব্যাটিংকেও দায়ী করা যায় চাইলেই। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের গুরুত্বপূর্ণ এক পজিশনে ব্যাট করেন শান্ত। নম্বর তিন পজিশনটা বেজায় গুরুত্বপূর্ণ যেকোন দলের ব্যাটিং প্রেক্ষাপটে। দলের রান তোলার গতি বা সংগ্রহের পথ ঠিক কোন দিকে এগোবে, তা নির্ধারণ করে দেন সাধারণত এই তিন নম্বর ব্যাটাররাই।

তাছাড়া ওপেনারদের দ্রুত বিদায়ের পর হাল ধরার দায়িত্বও থাকে নম্বর তিন ব্যাটারের কাঁধে। আবার ওপেনারদের ভাল শুরুটা গোটা ব্যাটিং অর্ডারের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বও তাকেই পালন করতে হয়। এমন গুরুদায়িত্ব মাথায় নিয়ে ব্যর্থই যেন হয়ে চলেছেন শান্ত।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ের চূড়ান্ত চিত্রই এঁকেছে শান্তর দল। চার ইনিংসের কেবল একটি ইনিংসে দলগত সংগ্রহ পেরিয়েছে ২০০ রানের গণ্ডি। বেজায় দৃষ্টিকটু এক বিষয় নিশ্চয়ই। এই চার ইনিংসে শান্তর ব্যাট থেকে রান এসেছে যথাক্রমে ৫, ৬, ১ ও ২০।

যে ইনিংসটিতে তার ব্যাট থেকে ২০ রান এসেছে, সে ইনিংসেই কেবল ২০০ পেরিয়েছে বাংলাদেশের দলগত সংগ্রহ। তাতেও অন্তত উপলব্ধি করা যায়, ওপেনারদের বিদায়ের পর দলকে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষেত্রে ঠিক কতটা গুরু দায়িত্ব পালন করতে হয় তিন নম্বর ব্যাটারকে।

তবে এই ধারা অবশ্য শুধু এই টেস্টেই ঘটেছে তেমনটি নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন শান্ত। সেই ম্যাচটির দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৯ ও ১৫ রান করেন। অথচ এক ইনিংস আগেই সিলেট টেস্টে দারুণ এক শতক হাঁকিয়েছিলেন। তাতে ভর করে ম্যাচটিও জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ।

সুতরাং অধিনায়ক শান্তর চাইতেও বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রয়োজন ব্যাটার শান্তকে। কিন্তু সাদা পোশাকে তিনি হঠাৎ করেই খেই হারিয়ে ফেলেছেন। ফরম্যাট অনুসারে ব্যাটারদের মানসিকতা থাকে ভিন্ন। তবে ভাল সময়ের ধারা নিশ্চয়ই সব ফরম্যাটে থাকে অব্যাহত। কিন্তু শান্তর ক্ষেত্রে ঘটছে কেমন উল্টো ঘটনা।

চলতি বছরে বেশ কিছু টেস্ট ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। এমনকি ভারতের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে চলেছে বাংলাদেশ। সেসব টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারকে শক্ত হাতে সামলাতে হবে শান্তকেই। সেজন্যে নিশ্চয়ই নিজেকে প্রস্তুত করবেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link