কেপ টাউনে সিরাজের সাম্রাজ্য

কথায় আছে, নতুন বছরের শুরুটা ভাল হলে নাকি পুরো বছর ভাল যায়। মোহাম্মদ সিরাজও হয়তো সেই কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। তাই তো ২০২৪ সালে প্রথমবার মাঠে নেমেই নিজের সেরাটা দিয়েছেন; বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন। তাঁর তান্ডবেই মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডিন এলগার। কিন্তু তিনি যদি জানতেন কি অপেক্ষা করছ তাঁর দলের জন্য তাহলে হয়তো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতেন। এদিন কেবল নয় ওভার বল করেছেন সিরাজ, রান দিয়েছেন গুণে গুণে ১৫টা। এর বিনিময়েই ছয় স্বাগতিক ব্যাটারকে পকেটে পুরেছেন তিনি। পুরো ইনিংসে পেস আর সুইংয়ের মহড়া দিয়েছেন, তাতেই দিকবিদিকশুন্য হয়ে একের পর এক ব্যাটার ধরা পড়েছেন উইকেটের পিছনে।

দিনের শুরুতে এইডেন মার্করামকে আউট করে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছিলেন এই পেসার। লেট মুভমেন্টে মার্করামকে পরাস্ত করেছিলেন তিনি, এরপরের ওভারে ইনসুইং না বুঝেই কাট করতে যান বিদায়ী অধিনায়ক এলগার; যা হওয়ার তাই হয়েছে, ইনসাইড এজ হয়ে স্ট্যাম্প ভেঙ্গেছে।

মাঝের এক ওভার বিরতি দিয়ে ব্যক্তিগত পঞ্চম ওভারে আবারো স্কোরবোর্ডে নাম তোলেন এই ডানহাতি। ইনফর্ম টনি ডি জর্জিকে লোকেশ রাহুলের গ্লাভসবন্দী করেন তিনি; সেখান থেকে আর তাঁকে থামানো যায়নি, অপ্রতিরোধ্য সব ডেলিভারি এসেছে তাঁর হাত থেকে। নিজের অষ্টম ওভারেই ডেভিড বেডিংহ্যাম আর মার্কো ইয়ানসেনকে আউট করে ফাইফার পূর্ণ করেন।

তাতেও তৃপ্ত হয়নি এই তারকার মন, কাইল ভেরেইন্নেকেও ফিরিয়েছেন তিনি। তাঁর এই দাপুটে পারফরম্যান্সে এক সেশনও টিকতে পারেনি প্রোটিয়া প্রতিরোধ। এর আগে কখনোই প্রতিপক্ষকে এত অল্প রানে অলআউট করতে পারেনি ভারত টেস্ট দল। সর্বশেষ ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ড ৬২ রানে অলআউট হয়েছিল তাঁদের বিপক্ষে।

অবশ্য প্রতিপক্ষকে পঞ্চাশ রানের আশেপাশে থামিয়ে দেয়াটা মোহাম্মদ সিরাজের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার মতই শ্রীলঙ্কাকে গত বছর দুই দুইবার এমন লজ্জা উপহার দিয়েছিলেন তিনি। ফরম্যাট যদিও ভিন্ন ছিল তবে গল্পটা একই – এশিয়া কাপের ফাইনাল আর ওয়ানডে বিশ্বকাপে যথাক্রমে ৫০ ও ৫৫ রানে থেমে গিয়েছিল লঙ্কানদের ইনিংস। আর এই দুই ম্যাচে সিরাজ নিয়েছেন নয় উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link